ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘিরে ৩ ইটভাটা : মারাত্মক ঝুঁকিতে বনায়ন

pic-1_1মো: ফারুক, পেকুয়া :

পেকুয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘিরে রয়েছে ৩টি ইটভাটা। একটিতেও পরিবেশ অধিদপ্তরের বৈধ কোন ধরনের ছাড়পত্র না থাকলেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেদারসে। আর অদৃশ্য শক্তির মহাবলীয়ানে প্রশাসন রয়েছে নিরব। এমনকি অবৈধ ৩ ইটভাটা পাহাড়ের বনায়ন থেকে গাছ কেটে লাকড়ি ব্যবহার করলেও বনবিভাগের নজর নাই সেদিকে। এদিকে বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক ঝুকি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে গেলেও ইটভাটার মালিকগুলো ইট উৎপাদন ও বনায়ন উজাট অব্যাহত রেখেছে। আর ইটভাটার কারণে তার আশে পাশে ধান চাষের জমি হয়ে পড়ছে শূন্য। ইটভাটার কালো ধুয়ায় মৌসুম অনুযায়ী ধানের ভাল ফলন কিছুতেই ঘরে তুলতে পারছেনা কৃষকরা। বিভিন্ন প্রলোভনে ধানি জমি থেকে টপ সয়লেট ক্রয় নিয়ে যাওয়ায় মাঠিও হারিয়ে ফেলছে উর্বরতা। এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে ধানের চাষের জমি পাওয়া যাবেনা বলে কৃষকের অভিযোগ।

জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি মৌজার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশে গড়ে ওঠে আহমদ নবী ও শাহাবউদ্দিনের মালিকনাধীন দুটি ইটভাটা। এরপর গড়ে ওঠে বারবাকিয়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশে সাবেক এমইউপি মোস্তাক আহমদ গং ও আবু তাহেরের মালিকনাধীন আরো দুটি ইটভাটা। ইতিমধ্যে তার থেকে আবু তাহেরের মালিকনাধীন ইটভাটাটি মালিকনার বিরোধ নিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য ৩টি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অবলীলায়। বেশ কয়েক বছর আগে একটি ইটভাটায় নির্বাহী কর্মকর্তা জরিমানা করলেও জানা মতে পরিবেশ অধিদপ্তর এর কোন কর্মকর্তা ওই ৩ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করেনি। তবে নোটিশের মাধ্যমে তাদেরকে সর্তক করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এমনকি বনবিভাগ থেকে বনায়নের গাছ কেটে ইটভাটায় লাকড়ি ব্যবহার করলেও বনবিট কর্মকর্তারা মাসিক ভাতা নিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছে।

আরো জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার ৪৯টি ইটভাটা পরিবশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করায় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন পরিবেশ আদালত। এর মধ্যে পেকুয়ার দুটি ইটভাটাও রয়েছে। ওই অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড.অনুপম সাহাকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। সরোজমিন তিনি ইটভাটা পরিদর্শন করে বন্ধের ব্যবস্থা নিবেন বলে তখন জানানো হয়েছিল। যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরও অবৈধ ইটভাটায় ইট উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে মালিকপক্ষ। এছাড়া ওই ৩ ইটভাটার মালিক নির্ধারিত সরকারী সব ভ্যাটও পরিশোধ করেনি বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। যার কারণে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

এবিএম ইটভাটার মালিক আহমদনবী জানান, পরিবেশ আদালত থেকে আমাদেরকে নোটিশ প্রদান করেছিল। আমরা তা লিখিত আকারে জবাব দাখিল করেছি। আর ইটভাটায় ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য যা যা করণীয় তা আগামী বছরের ভিতর শেষ করবো। তিনি পরিবেশ আদালত থেকে আগামী ২০১৭সালের ভিতর ছাড়পত্র নিবেন বলে জানান। আর তার ইটভাটায় কাট পুড়ানোর কথা অস্বীকার করেন। অন্য দু’ইটভাটার মালিক পক্ষের মোবাইল সংযোগ বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

পাঠকের মতামত: