ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় ব্যক্তি উদ্যেগে সংস্কার হচ্ছে বেঁড়িবাধ

ddনাজিম উদ্দিন, পেকুয়া ::

পেকুয়ায় ব্যক্তিগত উদ্যেগে সংস্কার হচ্ছে বেঁড়িবাধ। জলবদ্ধতা ও জনগনের জানমাল রক্ষার জন্য স্থানীয় লবন চাষি উদ্যেগে নিয়েছেন বেঁড়িবাধ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করতে। তার এ মহৎ উদ্যেগে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়া ঘোসালপাড়ায় নির্মিত হচ্ছে পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেঁড়িবাধ। সম্পুর্ন নিজ অর্থয়ানে পশ্চিম উজানটিয়া পাড়ার মৃত.নুরুল হকের ছেলে লবন চাষি মহিউদ্দিন প্রায় ১৫চেইন বিলিন হওয়া বেঁড়িবাধের সংস্কার বাস্তবায়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১০দিন আগে থেকে ওই লবন চাষি বেঁড়িবাধ সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। বর্তমানে ঘোসাল পাড়া, উজানটিয়া খাল ও কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট পোয়ার মুখ নামে খ্যাত সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ন অংশে প্রায় ১০চেইন এর সংস্কার কাজ শেষ করেছে। বেঁিড়বাধ সংস্কারের জন্য একটি স্কেবেটার দিয়ে মাটি ভরাট কাজ চলমান রেখেছে।

জানা গেছে স্থানীয় এলাকাবাসিকে সমুদ্রের জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা করতে লবন চাষি মহিউদ্দিন এ অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। একজন সামান্য লবন চাষি দেশ ও এলাকার প্রতি মমত্ববোধ দেখিয়ে তার সঞ্চিত সমুদয় অর্থ বেঁড়িবাধ সংস্কার খাতে ব্যয় করেছেন। স্থানীয়রা তার মহৎ কাজে এগিয়ে আসাকে অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখেছেন।

জানা গেছে ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে পশ্চিম উজানটিয়ায় পাউবোর মালিকানাধিন প্রায় ১৫ চেইন বেঁড়িবাধ বিলিন হয়। ওই অংশ দিয়ে সাগরের লোনা পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে পশ্চিম উজানটিয়াপাড়া, পেকুয়ার চর, ঘোসাল পাড়া, মিয়া পাড়া, ফেরাসিঙ্গাপাড়াসহ বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। সরকারি অর্থের যোগান না থাকায় প্রায় দু’মাস বেঁিড়বাধের বিলিন অংশ সাগরের সাথে একাকার হয়। ঘরবাড়ি ও চিংড়িঘের পানিতে তলিয়ে যায়। পানিবন্দি হয় কয়েক হাজার মানুষ। জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করে।

এলাকাবাসির দুর্ভোগ লাঘব করতে মহিউদ্দিন বেঁড়িবাধের বিলিন অংশ সংস্কারের এ উদ্যেগ গ্রহন করেছেন। এদিকে পার্শবর্তী স্থানে পাউবো নিয়ন্ত্রিত একটি স্লুইচ গেইটের আধিপত্য নিয়ে চিংড়ি ও লবন চাষিদের সাথে ঘোসালপাড়া এলাকার মোকতার আহমদের ছেলে ওয়াজ উদ্দিন, আজম উদ্দিন ও জসিম উদ্দিনের বিরোধ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানায় পাউবোর স্লুইচ গেইট এর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্টা করে ওই ব্যক্তিরা এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে জিম্মি করে রাখে। প্রত্যেক চিংড়ি প্রজেক্ট থেকে পানি সরবরাহের নাম ভাঙ্গিয়ে হাতিয়ে নেয় ২০-২৫হাজার টাকা। এভাবে ওই স্লুইচ গেইটের নিয়ন্ত্রনে প্রায় ৮-১০টি প্রজেক্ট থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করে তারা। একই ভাবে লবন মৌসুমে প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে নিয়ে থাকে টাকা। জনগনকে তাদের হয়রানি থেকে বাচাতে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ওই স্লুইচ গেইট থেকে ওয়াজ উদ্দিন গংকে উচ্ছেদ করে। স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড়ের সদস্য সাইফুল ইসলাম ও মহিউদ্দিনকে এর তদারকির দায়িত্ব অর্পন করেন।

জানা গেছে ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়াজ উদ্দিন চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্যসহ ৫জনের বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা রুজু করেন। যার নং-৭১২/১৬। মামলায় বেঁিড়বাধ নির্মাতা মহিউদ্দিনকেও আসামি করা হয়। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানায় কাল্পনিক ঘটনা দেখিয়ে তারা পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়। ভুঁয়া কাগজপত্র নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরিষদের রেজুলেশনের মাধ্যমে আমরা স্লুইচ গেইট দেখাভাল করছি।

ইউপি সদস্য পারভিন আকতার, ছিদ্দিক আহমদ জানায় সাধারন নাগরিক ও জনপ্রতিনিধিদের অধিকার খর্ব করার জন্য এ মামলাটি করা হয়েছে। মানুষ ওয়াজ উদ্দিন গংদের হাতে জিম্মি ছিল। মহিউদ্দিন জানায় আমি নিজ অর্থয়ানে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে বেঁড়িবাধ সংস্কার করছি। ওয়াজ উদ্দিন গংদের হাতে সাধারন মানুষ জিম্মি হওয়ায় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অনুরোধে আমি ও সাইফু মেম্বার স্লুইচ গেইট দেখাভাল করছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওয়াজ উদ্দিন আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে। এ ব্যাপারে জানতে ওয়াজ উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। সংযোগ বিচ্ছন্ন থাকায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানায় মহিউদ্দিন বেঁিড়বাধ সংস্কার না করলে পশ্চিম উজানটিয়া পানির নিচে থাকত। ওই চক্র মানুষকে জিম্মি করেছে। ওয়াজ উদ্দিন গং মামলাবাজ ও চাঁদাবাজ। আমি গ্রাম পুলিশ দিয়ে স্লুইচ গেইট অবমুক্ত করেছি। মেম্বার ও মহিউদ্দিন স্লুইচ গেইট তদারকি করছে।

পাঠকের মতামত: