ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় নৌপথে সরকারী বনাঞ্চলের কাঠ পাচার বাড়ছে: নিরব বন বিভাগ!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::31

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন নৌপথে সরকারী বনাঞ্চলের কাঠ অব্যাহতভাবে পাচার হচ্ছে। ফলে পেকুয়াসহ আশেপাশের উপজেলায় সরকারী বনাঞ্চল নিধন হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কোন ধরনের মাথা ব্যথা নেই বললে চলে। অন্যদিকে বন বিভাগের এহেন ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পেকুয়ার সচেতন মহল।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়ার মগনামা বানিয়ারছড়া সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই চকরিয়া ও লামার আজিজ নগর থেকে সরকারী বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিধন করে তা মিনিট্রাক ও পিকআপ ভর্তি করে পেকুয়া বাজারের অবৈধ সমিলগুলোতে নিয়ে এসে রাখা হয়। এরপর পেকুয়া বাজারের অবৈধ সমিলগুলোতে সরকারী বনাঞ্চলের এসব গাছ চিরাই করে নৌপথে পেকুয়া ভোলাখালের রাবার ড্যামের পশ্চিম পার্শ্বে স্তুপ করে রেখে সুযোগ বুঝে কুতুবদিয়ার চিহ্নিত ৬ জন কাঠ পাচারকারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন পেকুয়া বাজারের অবৈধ সমিলগুলোতে সরকারী বনাঞ্চলের গাছ চিরাই করে নৌপথে কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগ এসব পরিবেশবিধ্বসী কর্মকান্ড বন্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

গতকাল ১৭ ফেব্রেুয়ারী দুপুর ২টার দিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের রাবার ড্যাম এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নসিমন গাড়ীতে কাঠ ভর্তি করে ড্যানিস বোটে  উঠানো হচ্ছে। এসময় নসিমনের ড্রাইভারের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এসব পেকুয়া বাজারের একাধিক সমিল মালিক কুতুবদিয়ার কাট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। তার গাড়ী দিয়ে রাবার ড্যাম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে ড্যানিস বোটে উঠিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে প্রতিনিয়তই পেকুয়ার রাবার ড্যাম দিয়ে নৌপথে ড্যানিসবোট ভর্তি করে সরকারী বনাঞ্চলের কাঠ ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি কুতুবদিয়ায় পাচার করা হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নাই!
জানা গেছে. পেকুয়া বাজারসহ উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটে বাজারে স্থাপিত প্রায় অর্ধ শতাধিক সমিলগুলোর কোন ধরনের লাইসেন্স নাই। বছরের পর বছর এসব অবৈধ সমিলগুলোর মালিকরা সরকারী বনাঞ্চলের গাছ স্থানীয় কিছু সংঘবদ্ধ গাছ নিধনকারী চক্রের কাছ থেকে ক্রয় করে এনে প্রকাশ্যে চিরাই করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা আশংকা করেছেন, পেকুয়ার অবৈধ সমিলগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পেকুয়াসহ আশেপাশের এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ নিধন হয়ে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঢেকে আনবে।

স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের সীমিত জনবল দিয়ে কাঠ পাচার রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তারপরেও সরকারী সম্পদ বনাঞ্চল রক্ষায় তারা নিরলস পরিশ্রম করছেন।

বন বিভাগের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের রেঞ্জ কর্মকর্তা উত্তম কুমার পাল জানান, পেকুয়া উপজেলার অবৈধ সমিল গুলোর তালিকা তৈরী করে উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপকূলীয় বন বিভাগের চনুয়া ও কুতুবদিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা অসীত কুমার পাল জানান, পেকুয়ায় অবৈধ সমিলগুলো বন্ধে বনবিভাগ ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন মহলে তিনি পত্র লিখবনে।

পাঠকের মতামত: