ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফ্লাইট আসছে, আশ্বাস মেননের

Menon-300x166সি  এন ডেস্ক :

অবশেষে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে পর্যটননগরী কক্সবাজারের মধ্যে আকাশপথে সংযোগ স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। মঙ্গলবার (৩ মে) নগরীর স্টেশন রোডে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘মোটেল সৈকত’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, আমি আপনাদের আজ আশ্বস্ত করতে চাই, ইতিমধ্যে আমরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শিগগির চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত অভাব ছিল। ইতিমধ্যে র‌্যাডিসন এসেছে। মোটেল সৈকত নতুন একটি মাইলফলক। সুলভ মূল্যে সব ধরনের পর্যটকদের সেবা দেবে এ আবাসিক হোটেলটি। অনন্য সাধারণ চট্টগ্রাম। পাহাড় ও সমুদ্রের পাশাপাশি কর্ণফুলীর স্বাভাবিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করবে। এখানে অনেক লোকগান, সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে আমরা আসতাম পতেঙ্গায় সূর্যাস্ত দেখার জন্যে। ফয়’স লেকে বেড়ানোর জন্যে।

তিনি বলেন, পারকিতে যে বিচ রয়েছে সেখানে মোটেল সৈকতসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যে একনেক থেকে আমাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে এবং আমরা শিগগিরই কাজটা শুরু করবো। পতেঙ্গায় আমাদের যে উদ্যোগ ছিল, সেখানে সিডিএ উন্নয়নকাজ করবে। পর্যটনের জন্যে কানেকটিভিটি দরকার। সেই দিক থেকে চট্টগ্রাম পর্যটকদের জন্যে উত্তম স্থান। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন হচ্ছে। ছয় লেনে সম্প্রসারিত হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চার লেন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন হবে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা হবে। শিগগির টেন্ডার আহ্বান করা হবে। কাজ শুরু হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিমান সংস্থায় নতুন নতুন বিমান যুক্ত করছি। অভ্যন্তরীণ রুটের জন্যে লিজের মাধ্যমে আরও দুটি বিমান সংগ্রহ করছি। আরকেটি একেবারে নতুন কিনবো।

মন্ত্রী বলেন, হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ চলছে। ২০২০ সালের জুনে সফট ওপেনিং করতে পারবো। আরেকটি সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দর বঙ্গবন্ধুর নামে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২১ সালে এটির নির্মাণকাজ শুরু করতে পারবো।

পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এ শিল্পে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় আয়, কর্মসংস্থানে এ শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এখন তিন দিন ছুটি পেলে মানুষ ঘরে থাকে না বেরিয়ে পড়ে। ২০২০ সালের মধ্যে এ শিল্পে পাঁচ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। ১০ লাখ বিদেশি পর্যটককে দেশে নিয়ে আসবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর ইমাম, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বেগম সাবিহা নাহার। সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরী।

অপরূপ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে পর্যটককে মুগ্ধ করার জন্য সব কিছু রয়েছে। ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ মোটেলে ১৫৩টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ইন্টারন্যাশনাল স্যুট, সাতটি স্ট্যান্ডার্ড স্যুট, ৬৬টি ডাবল রুম, ৭৯টি টু-ইন-বেডেড রুম। ভাড়া যথাক্রমে ১০ হাজার, ৭ হাজার, ৪ হাজার ৫০০ ও ৩ হাজার ৫০০ টাকা। রয়েছে ৪০০ আসনের দুটি ব্যাংকুইট হল, ১০০ আসনের রেস্তোরাঁ ‘কর্ণফুলী’, ৩০ আসনের কফিশপ ‘সাম্পান’, দুটি জিম।

মোটেল সৈকতের ব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ১ একর জমির ওপর ১০ তলা মোটেল সৈকতের বেইজমেন্ট ও চত্বরে ৫৫টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। অতিথিদের জন্যে বিনামূল্যে ওয়াইফাই, সকালের নাশতা, রেন্ট-এ-কারসহ আকর্ষণীয় সুবিধা দেবে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল হক বাংলানিউজকে জানান, দুই পর্বে ১০ তলা ভবনটি নির্মিত হয়েছে। প্রথম দফা কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের নভেম্বরে। দ্বিতীয় দফা কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে মন্ত্রী ফলক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে শেষে গান করেন চট্টগ্রামের কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের ছেলে প্রেম সুন্দর বৈষ্ণব ও সেরাকণ্ঠের শিল্পী নাবিলা।

পাঠকের মতামত: