ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঈদে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও মানিকপুর পর্যটনে দর্শনার্থী আগমনের সম্ভাবনা

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: করোনা মহামারিতে ধনী গরীব সবার দুয়ারে এসেছে খুশির ঈদ। আর খুশির ঈদে টানা ছুটিতে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থী আগমনে রের্কড সম্ভাবনা দেখছেন দেশের প্রথম কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও জেলার পর্যটন শিল্পের নতুন আকর্ষন মানিকপুর নিভৃতে নির্সগ পার্কের সংশ্লিষ্টরা। শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুলত এদিন থেকে পর্যটক-দর্শনার্থীরা পার্কের নির্মল সৌন্দর্য দেখতে যেতে শুরু করেছে। অবশ্য ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের আগমনকে ঘিরে দর্শনার্থী আগমন বরণে প্রস্তুত করা হয়েছে ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ককে। ইতোমধ্যে বিনোদন বাড়াতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বর্ণিল সাজে তৈরী করা হয়েছে পার্কের সবগুলো পর্যটন স্পট। বলতে গেলে পার্কের ভেতরে বাইরে এখন সাজ সাজ অবস্থা বিরাজ করছে। পাশাপাশি আগে থেকে সংগ্রহে রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় শতপ্রজাতির জীববৈচিত্র্য।

অপরদিকে রোজার ঈদে ভ্রমনে যাওয়া দর্শনার্থীদের নতুন করে বরণ করবে জেলার পর্যটন শিল্পের নতুন আকর্ষন মানিকপুর নিভৃতে নির্সগ পার্কে সদ্য পাপঁড়ি মেলা হরেক প্রজাতির ফুল। যা তিনমাস আগে পার্কের প্রতিটি পয়েন্টে রোপন করা হয়েছিল। বর্তমানে ফুলে ফুলে সৌরভ ছড়াচ্ছে মানিকপুর নিভৃতে নির্সগ পার্ক।

মানিকপুর নিভৃতে নির্সগ পার্ক চকরিয়া উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার পুর্বে এবং কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি নতুন পর্যটন স্পট। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে মানিকপুর নিভৃতে নির্সগ পার্ককে ঢেলে সাজানো হয়েছে। দুইপাশে পাহাড়ের মাঝ দিয়ে চলে গেছে মাতামুহুরী নদী। পাহাড় ও নদীর অপরূপ মিতালী এখানে। নদীতে নৌকা ভ্রমণে পাহাড় নদীর মিতালি দেখতে দেখতে চোখে পড়বে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী, পাহাড় বেয়ে ঝরে পড়া নয়নাভিয়াম ঝরনা, পাখির কলতান মুহুর্তেই হৃদয়কে পুলকিত করবে। নীল জলরাশি দিয়ে যেতে যেতে দেখা মিলবে একাধিক সুউচ্চ সাদা পাথরের পাহাড়ের। নদীতে নৌকা ভ্রমণে ঘন্টা খানেক দূরত্বে দেখা মেলে শ্বেতপাথরের বুক চিরে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে ঝরনার রক্তক্ষরণ। স্বচ্ছ-নীল জলের নদীতে ডিঙি নৌকায় ভাসতে ভাসতে আপনার মনে হবে একটি অন্যরকম দার্জিলিং। যেখানে একসঙ্গে নীল জলরাশি, সবুজ পাহাড় আর সাদা মেঘমালার মিলনমেলা। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর ‘নিভৃতে নিসর্গ পার্ক’ উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন।

এদিকে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে দর্শনার্থী আগমনে পার্কের প্রস্তুতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সহকারি তত্তাবধায়ক ও ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা কর্মকর্তা মো.মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে জানান, ঈদের ছৃুটিতে ভ্রমন পিপাসু পর্যটক-দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। দর্শনার্থীদের বিনোদনে বাড়তি আনন্দ যোগাতে ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বর্ণিল সাজে তৈরী করা হয়েছে সবগুলো পর্যটন স্পট। পাশাপাশি আগে থেকে সংগ্রহে রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় শত প্রজাতির জীববৈচিত্র।

তিনি বলেন, পার্ক ভ্রমনে আসা দর্শণার্থীরা দেখতে পাবেন সবুজ বনাঞ্চলের ভিতর রক্ষিত নির্ধারিত বেস্টনীতে বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, ওয়ালবিষ্ট, গয়াল, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, হাতি, মিটাপানির কুমির, নোনা পানির কুমির, হনুমান, বানর, অজগর সাপ, ময়ুর ও নানা প্রজাতির পাখির অবাধ বিচরণ। এছাড়াও দর্শণার্থীরা পায়ে হেঁেট কিংবা পার্কের গাড়িতে করে ভিতরের দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট, সুউচ্চ অনুবীক্ষন টাওয়ারে উঠে পুরো পার্কের মনোরম দৃশ্য দেখতে পাবে। এছাড়া পার্কের বাইরে প্রধান ফটকের পাশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নান্দনিক ভার্স্কয। বিশ্রামের জন্য রয়েছে একাধিক ছাতা, শেড ও বেঞ্চ। প্রকৃতিক কাজ সারতে রয়েছে পাবলিক টয়লেট।

মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী তিনি বলেন, সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার সরকারী ঘোষনা মতে সাফারি পার্ক বন্ধ থাকে। তবে বিশেষ দিবসে ছুটির দিনেও পার্ক খোলা থাকে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টিকেট কেটে পার্কে ভ্রমন করতে পারবে পর্যটক-দর্শনার্থীরা।

 

পাঠকের মতামত: