ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পর্যটন শিল্পে স্থবিরতা

পর্যটক শূন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। -ফাইল ছবি

সৈয়দুল কাদের :: কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে সংশ্লিষ্টরা হতাশ হয়ে পেড়েছেন। করোনা মহামারির কারণে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে পর্যটন শিল্প। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে এখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকান্ড।

গত ২৫ দিন আগেই ছিল সৈকতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখর। কিন্তু ১ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজারের পর্যটন স্পট গুলো বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এরপর গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দেশব্যাপী ৭ দিনের লকডাউন। যা শেষ হওয়ার আগেই আরেক দফা বাড়িয়ে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
ফলে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও হোটেল-মোটেল জোন। অনেকেই গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে নতুনভাবে বিনিয়োগ করেছিলেন পর্যটন শিল্পে। এসব বিনিয়োগকারীরা এখন চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
মাংহ ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে পর্যটন এলাকার বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টে প্রায় ৬০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। গত তিন মাস আগে নতুন ভাবে আরো বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন ব্যবসা শুরু হলে আবার বিনিয়োগ করতে হবে। এত টাকা আমরা পাব কোথায়।

সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যমতে, চার শতাধিক হোটেল মোটেল মালিক আবারো বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার কর্মচারী।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গার্মেন্টস শিল্প কারখানা বাঁচিয়ে রাখতে সরকার সেসব প্রতিষ্ঠান চালু রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নিয়েছেন, তেমনি পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। না হলে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
হোটেল ক্যাসেল বেস্ট-এর জিএম আওলাদ হোসেন বলেন, হোটেল মালিক ও কর্মচারীরা বর্তমানে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। সেদিকে সরকারের নজর দেয়া প্রয়োজন। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে পর্যটন শিল্প উম্মুক্ত করা যায়।
হোটেল সাইমন ব্লু পার্ল এর তত্বাবধায়ক সালাহ উদ্দিন বলেন, পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়া না হলে অসংখ্য ব্যবসায়ি দেউলিয়া হয়ে যাবে। ব্যবসায়িরা কয়েকদফা বিনিয়োগ করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেছিলেন। হঠাৎ কঠোর লকডাউন ঘোষনা করায় সবাই হতাশ হয়েছেন। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার শর্তে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়া প্রয়োজন। এই শিল্পের সাথে জড়িয়ে আছে অসংখ্য পরিবারের ভাগ্য।
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আমরা যারা বিনিয়োগকারী ছিলাম, আমরা আবার ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছি। এই পর্যটন শিল্পের সাথে যারা জড়িত তারা সরকারি কোনো প্রণোদনা পেয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তাই এই শিল্পের সাথে জড়িতরা অজানা শঙ্কায় রয়েছে। এ শঙ্কা কাটাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার দাবি জানাই সরকারের কাছে।

পাঠকের মতামত: