ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

মহেশখালী পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে উত্তেজনা

মহেশখালী প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের ৪টি পৌরসভার ৩টিতে পঞ্চম ধাপেই ঘোষিত হবে নির্বাচনী তফসিল। টেকনাফ ও চকরিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগীতা কিছুটা কম থাকলেও মহেশখালী পৌরসভায় চলছে টান-টান উত্তেজনা। একজন আরেকজনের মনোনয়ন ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে মহেশখালী পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন ১১ জন।

কক্সবাজারের মহেশখালী পৌরসভায় দলীয় মনোনয়ন নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় মনোনয়ন পতে মরিয়া হয়ে কাজ করছেন অন্তত ৩ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী। বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়া দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও পিছু ছাড়ছেন না অন্যরা। যার ফলে সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শীর্ষনেতাদের কেউ দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে মুখ খুলছেন না।

মহেশখালী পৌর আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মনোনয়ন দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একজন ত্যাগী ও বিতর্কমুক্ত ব্যক্তিকে নৌকা দেবেন এমন প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের। তিনি যাকে দেবেন তার পক্ষেই দলের নেতাকর্মীরা কাজ করবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে দলের নেতাকর্মীদের যিনি মুল্যায়ন করেন না এমন কাউকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ের ব্যাপারে ঝুকি রয়েছে। সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক যে ঘোষণা দিয়েছেন এটি বাস্তবায়ন হলে যোগ্য প্রার্থীই দলের মনোনয়ন পাবেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক প্রণব কুমার দে জানান নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করাই আমাদের দলীয় দায়িত্ব। আমাদের নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তিনিই আমাদের প্রার্থী। মহেশখালী পৌরসভায় যে উন্নয়ন হয়েছে তা অভূতপুর্ব। আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। কাকে মনোনয়ন দিলেন তা আমাদের দেখার প্রয়োজন নাই। শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করাই আমাদের কাজ।

বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যমতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়া। তিনি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মহেশখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক। তিনি ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। অদ্যাবধি তিনি দলের কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছেন। আওয়ামী লীগে যোগদানের আগে তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান যুবলীগের মাধ্যমেই রাজনীতি শুরু করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের বিগত সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ঘোষণা করলেও পরবর্তিতে তিনি সম্মেলন বর্জন করেন। অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী নাছির উদ্দিন ছাত্রলীগের, শ্রমিক লীগের, যুবলীগের দায়িত্বপালন শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।

এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মহেশখালী পৌরসভার প্রথম প্রশাসক এম আজিজুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনীতিক ক্যারিয়ার থাকায় তিনিও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডঃ আবু তালেবও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। তবে জোর আলোচনা হচ্ছে বর্তমান মেয়র মকছুদ মিয়া, মোঃ শাহজাহান ও নাছির উদ্দিনকে নিয়ে। কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি।

এদিকে একে অপরকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। বর্তমানে পৌর মেয়র মকছুদ মিয়াকে ঠেকাতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষরা। স্বাধীনতা যুদ্ধে মকছুদ মিয়ার পরিবারের ভুমিকা ও বর্তমান রাজনীতির ইতিহাস তুলে ধরে পোস্টার শোভা পাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ স্থানে। এছাড়া পরিবারের বিভিন্ন সদস্যেরা কে কি করছেন তাও তুলে ধরা হয়েছে এসব পোস্টারে। তবে অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে তেমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে না।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, অপপ্রচার রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়। দলের মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। তাই আমিও মনোনয়ন প্রত্যাশী। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত আছি।

দলের পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া জানান, মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে কাউকে ঠেকানো যায় না। এটি দলের মনোনয়ন বোর্ড ও সভানেত্রীর বিষয়। আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসাবে আছি এবং থাকব। আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করি।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, এখানে কারো উপর রাগ বিরাগের বিষয় নেই। নৌকা প্রতীক নিয়ে যিনি বিজয়ী হতে পারবেন মনোনয়ন বোর্ড তাকেই মনোনয়ন দেবে।

পাঠকের মতামত: