ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

ধর্ষণ ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী এখন সন্তানের মা!

জহির খন্দকার, ঈদগড় :: রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পাহাড়ি জনপদ ভেংডেভা গ্রামের এক অসহায় কিশোরীকে ধর্ষণ ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী এখন পুত্র সন্তানের মা হয়েছে। দীর্ঘ দিন বিচারের নামে তামাশা, অত:পর ঘরবাড়ী উচ্ছেদ ও হত্যার হুমকিতে মামলা করতে সাহস করছেনা কিশোরীর পরিবার। এমনটি অভিযোগ করেছেন কিশোরীর পরিবার।
এলাকাবাসী কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরিত অভিযোগে জানা যায়, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পাহাড়ি জনপদ ভেংডেভা গ্রামের নুরুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ রাশেদ একই গ্রামের অসহায় শাহ আলমের কিশোরী মেয়েকে দিনদুপুরে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে ।গত ০৫/০৩/ ২০১৯ ইং তারিখ দিনে ধর্ষিতার পিতা/মাতা তাদের কিশোরী মেয়েকে বাড়ীতে রেখে প্রতি দিনের মত পাশ্বের জমিতে সবজি ক্ষেতে কাজ করছিল।সে সুযোগে ভেংডেভা গ্রামের সমাজের সর্দার আলী আহাম্মদ হেডম্যানের ভাই নুরুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ রাশেদ ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২ টায় বাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করে কিশোরী মেয়েকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা সমাজের সর্দার আলী আহাম্মদ হেডম্যানকে বিচার দিলে তিনি বিচারটি আজ করব কাল করব বলতে বলতে ধর্ষিতা মেয়ে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিশোরী মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর যখন সমাজের সর্দার আলী আহাম্মদ হেডম্যান জানতে পারে তখন তিনি গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবারের উপর চাপ সৃস্টি করে।গর্ভপাত করতে গেলে কিশোরীর জীবন নাশের আশংকায় তার পরিবার গর্ভপাত করা থেকে বিরত থাকে। হেডম্যানের নির্দেশে গর্ভপাত না করায় তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে ধর্ষিতার বাড়ীতে পাহারা বসিয়ে দেয়, যাতে তারা মেয়েকে নিয়ে থানা কোর্টে গিয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে না পারে।
ধর্ষিতার অসহায় পরিবার দীর্ঘ দিন থেকে অবরুদ্ধ থাকায় থানা কোর্টে গিয়ে মামলা করতে পারেনি। এ অবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরী চলতি বছর মার্চ মাসে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।
গত ১৭ অক্টোবর এলাকাবাসী ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন।(রেজিঃনং-৬৫৫)
অভিযোগের তদন্ত শুরু হলে ধর্ষক মোঃ রাশেদের পরিবার ও সমাজের সর্দার আলী আহাম্মদ হেডম্যান গং ধর্ষিতা কিশোরী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর নির্যাতন শুরু করে দেবে বলে এলাকাবাসী অাংশকা প্রকাশ করে নিরাপত্তা দাবী করেছেন।এমন কি নিরাপত্তা দেওয়া না হলে ধর্ষিতা কিশোরী ও শিশুটিকে হত্যা করে আলামত নস্ট করতে পারে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ধর্ষিতা কিশোরীর অসহায় পিতা শাহা আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলে ও ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
এলাকার একাধিক সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবী করেছে হেডম্যান আলী আহাম্মদ ভেংডেভা গ্রামের অঘোষিত রাজা। তার অন্যায় অত্যাচারে অসহায় মানুষ গুলো নীরবে সহ্য করলে ও প্রতিবাদ করার সাহস কারো নাই।কারন ইত্যিপুর্বে প্রতিবাদ করাই প্রায় ৪০ পরিবারকে তিনি এলাকা ছাড়া করেছে।জমি কেড়ে নিয়েছে অনেকের।
ভেংডেভা পুরা গ্রামটি অবস্তিত রির্জাভ ভুমির উপর। আর আলী আহাম্মদ বন বিভাগের নিয়োগ কৃত হেডম্যান। বন বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পর পর ভিলেজারদের প্রত্যেক্ষ ভোটে হেডম্যান নির্বাচন করার নিয়ম থাকলে ও ভেংডেভা বন বিটে তা মানা হয় না।নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে তিনি যুগ যুগ ধরে হেডম্যান পদে বহাল রয়েছে।সে সুযোগে ভেংডেভাবাসীদের উপর চালিযে যাচ্ছে জুলুম নির্যাতন।সরকারী রির্জাভ ভুমি যেন তার পৈত্রিক সম্পত্তি।রির্জাভ ভুমিতে যারা বর্তমানে বসবাস করছে তারা অঘোষিত রাজা হেডম্যান আলী আহাম্মদের প্রজা।সন সন খাজনা দিতে হয় অঘোষিত রাজাকে।এই যেন স্বাস্তশায়িত একটি আলাদা রাস্ট্র।রির্জাভ ভুমি বিক্রি করে কামিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
হেডম্যান আলী আহাম্মদের ভাই নুরুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ রাশেদ দিনদুপুরে এক অসহায কিশোরীকে ধর্ষন করলে ও হেডম্যানের ভয়ে ধর্ষিতা কিশোরীর পরিবার আইনের অাশ্রয় নিতে পারেনি। ফলে ধর্ষণ কিশোরী এখন সন্তানের মা
কিশোরী শাবনুর বেগমের চাচা সোহেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ধর্ষকের শাস্তি দাবী করেছেন।ধর্ষক মোঃরাশেদের আপন চাচা মন্জুর আলম ও ধর্ষণ ঘটনাটি সত্য বলে মন্তব্য করেছেন।
হেডম্যান আলী আহাম্মদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি বলে দাবী করেন।

পাঠকের মতামত: