ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবীতে চকরিয়ায় স্বাস্থ্য কর্মীদের কর্মবিরতি অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার. চকরিয়া ::  নিয়োগবিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরোসনের দাবিতে কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন কমিটির ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায়ও অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারিরা।গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ কর্ম বিরতি  আজ রবিবার পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।

আজ ২৯ নভেম্বর. সকাল ১০টার দিকে স্বাস্থ্য কর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কর্মবিরতীতে অংশ নেয়। বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্টেন্ট এসোসিয়েশনের চকরিয়া উপজেলার সভাপতি ও কক্সবাজার জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হোছাইন জানান, দাবি অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। এতে চলতি বছরের ৫ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠিতব্য হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ায় উপজেলার ৩০ হাজার শিশু হাম রুবেলা টিকা না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে উপজেলার পল্লীগুলোতে হাম রুবেলার প্রাদূর্ভাব দেখা দেওয়ার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবায় বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

মোহাম্মদ হোছাইন আরও বলেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারিরা যথাক্রমে ১৪, ১৫, ও ১৬তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। নিয়োগবিধি সংশোধন করে তাদের বেতন যথাক্রমে ১১, ১২, ও ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৬ই ডিসেম্বর স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারিদের এক মহা সমাবেশে বেতন বৈষম্য নিরোসনের ঘোষনা দিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে ২ জানুয়ারি তৎকালিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দেন।

এছাড়া চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আমরা হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন বর্জন করলে বর্তমান স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালক মহোদয় আমাদের দাবি মেনে নিয়ে লিখিত সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। আমরা এসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই।

১৯৭৯ সালে এপ্রিলে চালু করা হয় সম্প্রসারিত টিকাদান সর্মসূচি (ইপিআই)। এ কর্মসূটি আওতায় দেশের এক লাখ ২০হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কেন্দ্রের কর্মসূচি এককভাবে স্বাস্থ্যসহকারীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসহকারীরা বর্তমানে ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের (শিশুদের যক্ষা, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হুপিং কাশি, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইসিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও হাম-রুবেলা) টিকা প্রদান করেন।

এ স্বাস্থ্য সহকারীরাই ২০১৩ সালের জানুুয়ারিতে একদিনে ০৯মাস থেকে ১৫বছরের কম বয়সী ৫ কোটি ২০ লাখ শিশুকে এক ডোজ হাম-রুবেলা টিকা সফলভাবে প্রদান করেন। তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের পদোন্নতি বিধি অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী ৩ থেকে ৭ বছর পর পর পদোন্নতি পান।

কিন্তু একজন স্বাস্থ্যসহকারীরা ২০ থেকে ২৫ বছরেও পদোন্নতি পেয়ে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হতে পারে না। যদিওবা পদোন্নতি পান, তবুও স্বাস্থ্যপরিদর্শক হতে ৫ থেকে ৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে এমন সময় পদোন্নতি পান, যখন চাকরির বয়স বাকি থাকে ৫ থেকে ৬ মাস। আবার পদোন্নতি হলেও বেতন বাড়ে না এক পয়সাও।

পাঠকের মতামত: