এম.এ আজিজ রাসেল ::  জেলাব্যাপী সিন্ডিকেট করে ফের গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পায়তারা করছে ডিলারেরা। যার অংশ হিসেবে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাধারণ খুচরা ব্যবসায়ীদের মাঝে নানা বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার করছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি ডিলারেরা মিলে গঠন করেছে একটি কমিটি। ভোক্তাদের জিম্মি করার জন্য মূলতঃ ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।

সুত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইমরান হোসাইনের নেতৃত্বে গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি অভিযোগে লাগাতার অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের আগে গ্যাসের দাম সিন্ডিকেট করে ১১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু অভিযানের পর ভেঙে যায় সেই সিন্ডিকেট। তখন নিয়ন্ত্রণে আসে গ্যাসের মূল্য। বতর্মানে ৯০০ টাকায় সর্বত্র গ্যাস বিক্রি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলপি গ্যাসের সরকারি মূল্য ৬০০ টাকা। কিন্তু ডিলারদের সাথে আতাত করে খুচরা ব্যবসায়ীরা ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি করছে। এছাড়া এসএল গ্যাস খুচরা ৭০০ টাকা ও পাইকারী ৭৮০ টাকা, জেএমএল গ্যাস খুচরা ৭০০ টাকা ও পাইকারী ৭৬০ টাকা, ৩৫ কেজি ওজনের গ্যাস খুচরা ২১০০ টাকা ও পাইকারী ২২৫০ টাকা এবং ৪৫ কেজি ওজনের গ্যাস খুচরা ও পাইকারী ২৯০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে অভিযানে নাস্তাবুদ হওয়া গ্যাসের ডিলারেরা আবারও দাম বৃদ্ধি নানা ফন্দি রটেছে। সম্প্রতি ডিলারদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সরোয়ার কামাল সিকদার সভাপতি ও গোলাম আরিফ লিটন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। তাদের নেতৃত্বে খুচরা ব্যবসায়ীদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করা হচ্ছে। বুধবার (৭ অক্টোবর) ওই কমিটির ইশারায় বন্ধ রাখা হয় কিছু খুচরা গ্যাসের দোকান।

এ ব্যাপারে গ্যাস ডিলারদের কমিটির সভাপতি সরওয়ার কামাল সিকদার চকরিয়া নিউজকে বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয় আমাদের হয়রানী করছে। তাদের দাবি সরকারি ৬০০ টাকা রেটে গ্যাস বিক্রি করার। আমরা ৬০০ টাকায় চট্টগ্রাম থেকে পাইকারী গ্যাস কিনে এনে কিভাবে একই দামে বিক্রি করব। আমাদের পরিবহন, দোকান, কর্মচারিসহ নানা খরচ রয়েছে। তাদের বেধে দেয়া দামে আমরা গ্যাস বিক্রি করতে পারবো না। এ জন্য অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করবে ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি সন্তোষজনক সমাধান করা না হলে ধর্মঘট চলবে।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইমরান হোসাইন চকরিয়া নিউজকে বলেন, তাদের মদদে কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার ভোক্তা অধিকারের দাপ্তরিক নাম্বারে অহেতুক ফোন করে বিরক্ত করা হচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের জিম্মি করে রাখতে গ্যাসের ডিলারেরা আন্দোলনের নামে এমন বিতর্কিত কর্মকান্ড করছে। যা কখনো সফল হবে না। ভোক্তা সাধারণের অধিকার রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি আরও বলেন, বুধবার খুরুশকুল রোডে কক্সবাজার এন্টারপ্রাইজে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে দেখা যায় উক্ত প্রতিষ্ঠান সরকার নির্ধারিত ৬০০ টাকার মূল্যের এলপি গ্যাস বিক্রি করছেন ৮৫০ টাকায়। যা এবং মূল্য তালিকায় প্রদর্শন করা হয় ৭৫০ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তিনি বিষয়টা আমলে না নেওয়ায় ভোক্তা অধিকার আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করা হয়। একই অপরাধে একই এলাকার এস আর গ্যাস বিতানকেও সাময়িক বন্ধ করা হয়।