ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় শিক্ষার্থী আনাছ হত্যা:

মামলার চার্জসিট আদালতে নাকচ, পুনরায় পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আলোচিত শিক্ষার্থী আনাছ ইব্রাহিম খুনের মামলার অভিযোগপত্র (চার্জসিট) অবশেষে আদালতে দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। হত্যাকাণ্ডের অন্তত ১৫ মাস পর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চার্জসিট জমা দেওয়া হলেও গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য্যদিনে আদালতে ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দিয়েছেন মামলার বাদি নিহতের বাবা হাফেজ নেছার আহমদ।

নারাজি পিটিশনে বাদি অভিযোগ তুলেছেন, আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে (চার্জসিট) এজাহারনামীয় আসামিদের কৌশলে বাঁচানোর চেষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামির বদলে সহযোগি আসামির গাঁেড় দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাদির নারাজি পিটিশনটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক রাজীব কুমার দেব ফের মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের আইনজীবি চকরিয়া উপজেলা আদালতের সিনিয়র কৌশলী অ্যাডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী।

প্রসঙ্গত: ২০১৯ সালের ২৫ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের ওয়েষ্টার্ন প্লাজা মার্কেটের ভেতরে রোজার ঈদের কেনাকাটা করতে গেলে আগের একটি তুচ্ছ ঘটনার জেরে ১০-১২জনের একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থী আনাছ ইব্রাহিমকে ছুরিকাঘাত করে। ওইসময় ছুরিকাঘাতে আনাছ ইব্রাহীমের পেটের ভূঁড়ি বের হয়ে যায়। নিহত আনাছ চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বিনামারা গ্রামের হাফেজ নেছার উদ্দিনের ছেলে ও একই ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

ঘটনার পরদিন নিহত আনাছ ইব্রাহিমের বাবা হাফেজ নেছার আহমদ বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা (জিআর ২৬০/১৯) দায়ের করেন। মামলার এজাহারে সোয়াইবুর রহমান রুবেল (২৮), সোহেল রানা (২৬), বাবু (২২), সালাহউদ্দিন (২৪) ও ইসমাইল (২৫)সহ ৬জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামাসহ মোট ১২জনকে আসামি করা হয়। আসামি সকলে চকরিয়া পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা এবং পাশের কাসেম মাষ্টারপাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশ ঘটনার রাতে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে রিয়াজ নামের এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে প্রধান আসামি সোয়াইবুর রহমান রুবেল আদালতে আত্মসমর্পন করলে আরো দুই আসামি গ্রেফতার হন।

এদিকে শিক্ষার্থী আনাছ ইব্রাহিম খুনের ঘটনায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করতে বিলম্ব এবং এজাহারনামীয় আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দেয় সর্বমহলে। এরই জেরে ইতিপূর্বে আনাস হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে চকরিয়া পৌরশহরে দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে চকরিয়া উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।

শিক্ষার্থী আনাছ খুনের মামলার চার্জসিট প্রসঙ্গে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের নিহতের বাবা বাদি হয়ে দায়েরকৃত মামলায় সর্বপ্রথম রিয়াজ নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মুলত আসামি রিয়াজের স্বীকারোক্তি মতে খুনিদের চিহিৃত করে পুলিশ।

তিনি বলেন, মামলার স্বাক্ষী-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল্লাহ আল মাসুদ যা পেয়েছেন, তা যাছাই-বাছাই শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। শুনেছি বিজ্ঞ আদালতে বাদী চার্জসিটের বিপক্ষে নারাজির আবেদন করেছেন এবং আদালত ফের মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

 

পাঠকের মতামত: