ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

মেজর সিনহা হত্যা: ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার বিবরণ জানলো র‌্যাবের তদন্ত দল

উখিয়া সংবাদদাতা ::   আলোচিত মেজর (অব.) সিনাহ মো. রাশেদ খান হত্যার ‘গোড়ার রহস্য’ জানতে এবার প্রধান আসামী বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলেন র‌্যাবের একটি দল।

এসময় হত্যার ঘটনার রেকি (লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ, আক্রমণপূর্ব পর্যবেক্ষণ, আক্রমণের কলাকৌশল) এবং ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা। র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ারের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল আজ শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে সিনহা খুনের ঘটনাস্থল বাহারছড়া শাপলাপুরে পৌঁছায়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, এমন কি ঘটনা ঘটেছিলো, সিনহাকে এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে গুলি করা হয়েছিলো! এই প্রশ্নের উত্তর জানতে প্রধান তিন আসামিকে ঘটনাস্থলে নেয়া হয়। খুনের ঘটনাস্থল পৌঁছার পর র‌্যাবের তদন্ত প্রথমে ঘটনাস্থল এবং আশপাশ ঘুরে দেখেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার, র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া উইং প্রধান লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ, র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম ও র‌্যাব-১৫’র অধিনায়ক আজিম আহমেদ এবং সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ঘটনাস্থল ও আশপাশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।মেজর সিনহা হত্যা: ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার বিবরণ জানলো র‌্যাবের তদন্ত দল

এসময় স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা বলেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা। পূর্ব সিদ্ধান্ত মত তদন্তের অংশ হিসেবে ২/১ মিনিটের মধ্যে কিভাবে সিনহাকে হত্যা করা হয়েছিলো তার চিত্র তুলে আনতে ঘটনার রেকি শুরু করেন। এই জন্য একটি সাদা কার ব্যবহার করা হয়। আসামীদের বর্ণনা মতে রেকি পরিচালনা করা হয়। বেলা ৩টার দিকে রেকি সম্পন্ন হয়। রেকিতে ওই ঘটনার সাথে মিল রেখে প্রথমে এএসআই্ নন্দদুলালকে গাড়ি থেকে তার ভূমিকার চিত্র ধারণ, এরপর লিয়াকত আলী ও সর্বশেষ সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রেকি নেয়া হয়। এসময় তাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। রেকি পরিচালনা করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। রেকি শেষ করেই র‌্যাব ঘটনাস্থলে ছেড়ে চলে আসেন।

তথ্য মতে, বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে আদালতের নির্দেশ মতে গত ১৮ আগস্ট কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে রিমান্ডের জন্য হেফাজতে নিয়ে যায় র‌্যাব।

আজকের করা রেকিও রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদের অংশ বলে জানিয়েছে র‌্যাব সূত্র। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই খুন হওয়া মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এরপর ৫ আগস্ট তার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী, নন্দদুলাল রক্ষিত, সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াসহ ৯জনকে আসামী করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

পরে মামলা টেকনাফ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়। এই মামলায় এজাহারভুক্ত নয় আসামীর মধ্যে সাত জন গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়াও পরে আসামীভুক্ত বাহারছড়ার স্থানীয় তিনজন ও এপিবিএন এর তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই জেলা কারাগারে রয়েছেন।

পাঠকের মতামত: