ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাতারবাড়ীর বিধ্বস্ত বাঁধ পরিদর্শনে পানি উন্নয়ন বোর্ড: চেয়ারম্যানের আবেগময় ফ্যাক্স বার্তা পেয়ে মন্ত্রীর নির্দেশ

আবদুচ ছালাম, কাকলী :: মাতারবাড়ীর পশ্চিমে সাগরের কুলঘেষে অবস্থিত ষাটপাড়া বিধ্বস্ত বাঁধ পরিদর্শন করতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি টিম হতবাকহয়েছেন। মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহর আবেগময় স্ট্যাটাস ও ফ্যাক্স বার্তা পেয়ে বাংলাদেশ পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিমেরনির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার জেলা শাখার তত্বাবধায়ক রুহুল আমিন ও নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরার নেতৃত্বে একটি টিম গত ১৪ আগষ্ট বিধ্বস্তবাঁধ পরিদর্শন করতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।এমনকি কিভাবে এ বাঁধ সাগরের প্রচন্ড ঢেউ থেকে রক্ষা করা যাবে তা নিয়ে কোন সুত্র খোঁজে না পাওয়ায় কোনসিদ্ধান্ত দিতে পারেনি এ টিম।তবে আপাতত বর্ষায় সাগরের জোয়ারের পানি ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতি মধ্যে কাজ শুরু করবেন বলে চেয়ারম্যান ও স্থানীয়লোকজনকে জানিয়েছেন।

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার সাগর ও নদীর মাঝখানে অবস্থিত মাতারবাড়ী ইউনিয়ন এ ইউনিয়নের মানুষের এক মাত্র আয়ের উৎস লবণ ও চিংড়িজমি। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন সফল করতে মাতারবাড়ীবাসী ২টি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ২হাজার ৬শত ১৪ একর ব্যক্তি মালিকাধীন খতিয়ানভূক্ত জমিদিয়েছে। এ জমি ২০১৪ সালে অধিগ্রহণ করার পর কোলপাওয়ার কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পে নিয়োজিত বিভিন্ন ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠান কুতুবদিয়ার দক্ষিণে ও মাতারবাড়ীর সাইরার ডেইলের পশ্চিমে সাগরের পাড়ে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করায় বর্ষার শুরুতে মাতারবাড়ীরদীর্ঘ ১২ কিলোমিটার চরটি বিলিন হয়ে গেছে। ফলে সাগরের প্রবল ঢেউ একের পর এক আঘাত হানায় নয়া পাড়া নামক স্থানে প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙ্গেসাগরের সাথে একাকার হয়ে গেছে। যার কারণে ঐ স্থানে বসবাসরত প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবার ভিটেবাড়ী হারিয়ে অন্যত্রে চলে গেছে। তারা ঠিকানাবিহীন হয়েবিভিন্ন আত্মীয় স্বজন কিংবা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এছাড়া প্রায় ২শতাধিক বাড়ী ঘরে ঢুকছে জোয়ারের পানি। তারাও ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।এ অবস্থা থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ ইতি মধ্যে নিজস্ব আইডি থেকে দেয়া আবেগময় কয়েকটি স্ট্যাটাস দেখে সোস্যালমিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে সাংবাদিকরা ফলাও করে এ ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করেন। অবশেষে চেয়ারম্যানের আবেগময় স্ট্যাটাস ও ফ্যাক্স বার্তা পেয়ে পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামিমের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার জেলা শাখার তত্বাবধায়ক রুহুল আমিন ও নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরারনেতৃত্বে একটি টিম গত ১৪ আগষ্ট সরে জমিনে উক্ত স্থান পরিদর্শনে যান। বিধ্বস্ত বাঁধের অবস্থা দেখে নিজেরাই হতবাঁক হয়ে যান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ টিমপরিদর্শনের সময় উপস্থিত মাতারবাড়ীর ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ও লোকজনকে বলেন টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হলে দীর্ঘ পরিকল্পনার দরকার। আপাততবর্ষায় সাগরের জোয়ার থেকে এলাকাকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করবেন এবং বর্তমানে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। এ সময় চেয়ারম্যান মাষ্টারমোহাম্মদ উল্লাহ অনুরোধ করে বলেন বাঁধ নির্মাণের সাথে সাথে বাঁধের বাইরে পাথর ফেলা না হলে কোন অবস্থাতে বাঁধ রক্ষা করা যাবেনা।

 

পাঠকের মতামত: