কক্সবাজারের উখিয়ার সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে সরকারী অনুমোদন বিহীন ৫টি সমিলে দিবারাত্রি কাঠ চিরাইয়ের মহোৎসব চলছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বনরেঞ্জ কর্মকর্তা ও কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে সরকারী বনভূমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সামাজিক বনায়নের ছোট ছোট গাছ নির্বিচারে কেটে অবৈধ সমিল গুলোতে চিরাই করা হচ্ছে। ফলে বনাঞ্চল উজাড়ের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকির মূখে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। বনবিভাগের কোন অনুমতি না নিয়ে অবৈধ সমিল ঘুমধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন বসতভিটায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে। মোঠা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে অসাধু সমিল মালিকরা নির্বিচারে সামাজিক বনায়নের গাছ নিধনের ফলে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুমধুম ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, একমাত্র সুগত বড়–য়ার মালিকানাধীন সমিলটি ছাড়া অবশিষ্ট সমিল গুলো অবৈধ এবং সরকারী অনুমোদন বিহীন। স্থানীয় কতিপয় কর্মকর্তাকে মাসোহারা দিয়ে চালাচ্ছে এসব অবৈধ লাইসেন্স বিহীন সমিল।
ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হারেজ সরওয়ার বলেন, অবৈধভাবে গড়ে উঠা লাইসেন্স বিহীন সমিলগুলোতে দিবারাত্রি যে হারে সামাজিক বনায়নের কাঠ চিরাই হচ্ছে তা দেখে মনে হচ্ছে দেশে কোন সরকার নেই। তাছাড়া সরকারী বনবিভাগ নামের যে অধিদপ্তরটি রয়েছে তার ভূমিকা আরো রহস্যজনক। বনের গাছ-গাছালি কেটে সমিলে চিরাই করার ফলে প্রচন্ড তীব্র তাপদাহে পাহাড়ী অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম দূর্ভোগে পতিত হচ্ছে। এছাড়া ঘুমধুমের আগামী দিনের পরিবেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মূখে পড়ার আশংকা রয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু উপেন্দ্র কারবারি বলেন, বড়বিল আজুহাইয়া সংলগ্ন মসজিদের পাশে গড়ে উটছে অবৈধ আরো একটি সমিল বা করাত কল। নাইক্ষ্যংছড়ি রেজুর আলী আহমদ কোম্পানীর ছেলে চিহ্নিত হুন্ডি চোরাচালানী ৮নং ওয়ার্ড থেকে এসে ৬নং ওয়ার্ড কচুবনিয়া এলাকার মসজিদের পাশে বনবিভাগের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ একটি করাত কল বসানোর পায়তাঁরা চালিয়ে আসছে। আর এতে করে পার্শ্ববর্তী স্কুল, মাদ্রাসা ও স্থানীয় বসবাসরত লোকজন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, প্রভাবশালী হুন্ডি গডফাদার সিরাজ স্থানীয় একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আশ্রয়-পশ্রয়ে থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পাহাড়ে নিরহ মানুষের সহায় সম্পদ দখলের পাশাপাশি ভাড়াটে লোকজন দিয়ে সামাজিক বনায়নের বাগান থেকে বিপুল পরিমাণ কাঠ সংগ্রহ করে তা পরবর্তীতে সমিলে চিরাই করে বাজারজাত করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড়ী জনপদে প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারী পরিবেশ বান্ধব কোন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না আসলে ঘুমধুম ইউনিয়নের সবুজ বনায়ন বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়বে। তাছাড়া আবুল কালামের অবৈধ সমিল ১ টি, চেয়ারম্যানের ১টি, সাবেক চেয়ারম্যান দিপক বড়–য়ার ১টি, ফরিদ আলমের ১ টি ও নতুন করে হুন্ডি চোরাচালানী সিরাজের ১টি সহ মোট ৫টি অবৈধ করাত কল রয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধা পরিবারের সন্তান আব্দু শুক্কুর বলেন, বনরেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তার অসাধু ও অনৈতিক লেনদেনের ফলে ঘুমধুমের বনাঞ্চল সাবাড় হচ্ছে। অবৈধ সমিল স্থাপনের ফলে সামাজিক বনায়নের ছোট ছোট গাছ-গাছালিও এখন বন খেকোদের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। যা পরিবেশের জন্য ভবিষ্যতে মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অভিযুক্ত অবৈধ সমিল মালিকদের যোগাযোগ চেষ্টা করেও তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
########################
উখিয়ার মুক্তিযোদ্ধা শমশের আলম চৌধুরীর ঐতিহাসিক মেজবান ও চেহলাম সম্পন্ন
ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::
উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মরহুম আলহাজ্ব শমশের আলম চৌধুরীর মেজবান অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত মেজবান অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক গরু, মহিষ ও ছাগল জবাই করা হয় বলে জানা গেছে। উখিয়ার অতীত ইতিহাসে এ ধরনের কোন মেজবান ইতিপূর্বে অনুষ্টিত হয়নি। সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার লোকজন ভোজন পর্বে অংশ নেয়। গত ৩ দিন ধরে মরহুমের সুযোগ্য উত্তরসূরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আদিল উদ্দিন চৌধুরীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ, কৃষকলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা মেজবানে আগত অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া কোটবাজার চৌধুরী মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির উদ্যোগে প্রায় শতাধিক সেচ্ছাসেবক ও মেজবান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। মরহুম চৌধুরীর বিদেহী আতœার মাগফেরাত কামনা করে ছেলে আদিল উদ্দিন চৌধুরী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এত বিশাল মেজবান ও চেহলাম অনুষ্টানের আয়োজন সুষ্টু ভাবে সম্পন্ন করতে পারায় আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। এছাড়া যারা মেজবান অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা ও সেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তাদের নিকট চিরঋণী হয়ে থাকবে আমাদের পরিবার। উল্লেখ্য, মরহুম শমশের আলম চৌধুরীর চেহলাম কোটবাজার পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। রতœাপালং ইউনিয়নের আওতাধীন ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল গফুর সওদাগর বলেন, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী ও এলাকার সকল জনসাধারণের সহযোগিতায় এ বিশাল মেজবান ও চেহলাম অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
পাঠকের মতামত: