কক্সবাজারের উখিয়ার নিখোঁজ স্কুল ছাত্র নুরুল আমিন (১১) মুক্তিপন দিয়েও ফেরত দিচ্ছে না অপহরকারীরা। আরও মুক্তিপনের টাকা দাবী করেছে। না দিলে কিডনী নিয়ে ফেলে সহ খুন করা হবে বলে মোবাইলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। উপায় না দেখে বিষয়টি মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) লিখিত ভাবে র্যাব-৭ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানে অধিনায়ককে অবহিত করেছে শিশুর দরিদ্র পিতা জাকির হোসেন। জানা যায়, উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁ বড়বিল গ্রামের জাকির হোসনের শিশু পুত্র ও স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র নুরুল আমিন গত ২৩ ফেব্র“য়ারী নিখোঁজ হন। অনেক জায়গায় ও আতœীয়স্বজনের বাড়ীতে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে গত ৩ মার্চ উখিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন। যার জিডি নং- ১২৬। পিতা জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গত ১৩ মার্চ ০১৮৫৪৪৬৩১৯৬ নম্বর মোবাইল থেকে অজ্ঞাত নামা এক ব্যক্তি নিখোঁজ স্কুল ছাত্র নুরুল আমিন কে ফেরত পেতে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবী করে। ওই দিন সন্ধ্যায় উক্ত নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ১৪ মার্চ আমার ছেলেকে ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে উল্টো ০১৭৯০৫৫৯০৩৩ নম্বরে আরও ৩০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর হুমকি দেয়। অন্যথায় তার শিশু ছেলের কিডনী নিয়ে বিক্রি করে ফেলবে এবং খুন করে লাশ গুম করা হবে। মাঝে মধ্যে শিশুর কান্না কণ্ঠ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শুনানো হয়। এদিকে দরিদ্র অসহায় পিতা-মাতা স্কুল পড়–য়া শিশু ছেলে কে ২২ দিন ধরে সন্ধান না পেয়ে পাগল হয়ে পড়েছে। উপায় না দেখে নিখোঁজ শিশুকে অপহরণকারীর কবল থেকে উদ্ধার করার জন্য র্যাব-৭ কক্সবাজার ব্যাটলিয়ানে শরানপন্ন হয়েছে এবং বিষয়টি উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকেও জানানো হয়েছে।
##############
উখিয়ায় পাহাড় কাটার অভিযোগে ৩ টি গাড়ী জব্দ
ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::
কক্সবাজারের উখিয়ায় সরকারী বন ভুমির মাটি কাটার অভিযোগে পুলিশ ৩ টি গাড়ী জব্দ করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে রতœাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা গ্রামে মোঃ ছৈয়দের বসত ভিটা থেকে সরকারী বন ভুমির মাটি কেটে পাচার করার সময় গাড়ী গুলো জব্দ করা হয়েছে। এ ভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সরকারী বন ভুমির পাহাড় কেটে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান কাজে ও ইটভাটায় পাচার করছে। এক শ্রেনীর বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এসব পাহাড় কাটা হলেও বন বিভাগ নিরব ভুমিকা পালন করছে। উখিয়া থানার উপ- পরিদর্শক মশিউর রহমান জানান, সরকারী বন ভুমির পাহাড় কেটে পাচার করার সময় গয়ালমারা ছৈয়দের বসত ভিটা থেকে স্কেলেটার সহ ২ টি মাটি কাটার ডাম্পার গাড়ী জব্দ করা হয়েছে।
#################
উখিয়ায় থেমে নেই রোহিঙ্গা-বাঙ্গালী বিয়ে!
ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::
কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত উখিয়ায় স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের সাথে রোহিঙ্গাদের বিয়ের বিষয়টি আবার ও মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। পূর্বে উপজেলা প্রশাসনের নিরবতা কাজে লাগিয়ে উখিয়ার কুতুপালংয়ের পূর্ব পাড়া, পশ্চিম পাড়া, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে কচুবনিয়ায় প্রবাসী রোহিঙ্গাদের সাথে স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ও প্রবাসী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশীদের নিষিদ্ধ বিয়ে থামছে না।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, শরণার্থী ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক চিহ্নিত রোহিঙ্গাদের সহযোগীতায় মায়ানমারের প্রবাসী রোহিঙ্গা সাথে বাংলাদেশি স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে সহজ এবং নিত্যদিনের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মায়ানমারের প্রবাসীদের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয়রা রোহিঙ্গারা স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ের জন্য দালালী করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশী অভিভাবকদের অজ্ঞতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্থের প্রলোভনে ফেলে জোর করে প্রবাসী রোহিঙ্গাদের সাথে স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে দিতে বাধ্য করছে। প্রশাসনের কাছে রোহিঙ্গা বাঙ্গালী নিষিদ্ধ বিয়ের সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই বলে জানা যায়। এছাড়াও টাকার বিনিময়ে নকল আইডি কার্ড ও জন্ম সনদ পত্র তৈরি করে নিষিদ্ধ রোহিঙ্গা-বাঙ্গালী বিয়ে নিবন্ধন করা হয় বলে জানা গেছে। কুতুপালংয়ের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের সাথে বাংলাদেশী বিয়ের নিষিদ্ধ কঠোর শাস্তি সম্বন্ধে তারা জ্ঞাত নন। রোহিঙ্গা বিয়ের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তান বাংলাদেশের নাগরিক হতে পারবে না বলে জানালে তারা এই ব্যাপারে জ্ঞাত নন। স্থানীয় অসাধু প্রভাবশালী এবং জনপ্রতিনিধিরা সহযোগীতা করায় প্রশাসনকে চোখ ফাঁকি দিয়ে বিয়ে দিতে তাদের কোন সমস্যা হয় না। টাকার বিনিময়ে সবকিছু ম্যানেজ করা যায় করা যায়। উখিয়ার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদুল ইসলাম জানান, বর্তমান ইউএনও মাঈন উদ্দিন বিষয়টির দিকে নজর দিয়ে উখিয়ার কলেজ ছাত্রীদের ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করে নিষিদ্ধ রোহিঙ্গা বিয়েতে সহযোগীতাকারী দের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান। বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, উখিয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য আদিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নিষিদ্ধ বিয়ে বন্ধের প্রশ্নটি এখন ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। এটি বাংলাদেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার সাথে ও জড়িত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টির প্রতি এখনই নজর দিতে হবে। রাজাপালং ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হক চৌধুরী জানান, শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের শিক্ষার অভাবকে কাজে লাগিয়ে নগদ অর্থের প্রলোভনে ফেলে অগোছরে নিষিদ্ধ বিয়ে সংগঠিত করছে। আমি বরাবরের মতই এইসব নিষিদ্ধ বিয়ের বিরুদ্ধে সজাগ আছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাঈন উদ্দিন জানান, উপজেলা প্রশাসন এইসব বিয়ের ব্যাপারে তৎপর রয়েছে। আমরা রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করা এনজিও গুলোর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ করছি। প্রশাসন সঠিক তথ্য ফেলে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বর্তমান ইউএনও মাঈন উদ্দীন উখিয়া উপজেলায় দায়িত্ব নেওয়ার পর উখিয়াকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করেছেন। উখিয়াকে মডেল উপজেলায় রুপান্তরের অংশ হিসেবে উখিয়ার স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের প্রবাসী রোহিঙ্গাদের নিষিদ্ধ বিয়ে বন্ধে সচেতনতা সৃষ্ঠির পাশাপাশি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং উখিয়ায় ছাত্রী সমাজকে প্রবাসী রোহিঙ্গা বিয়ের শিকার হতে হবে না এমনটাই আশা প্রকাশ করেন উখিয়ার ছাত্র ও সুধী সমাজ।
#############
উখিয়ায় গৃহবধুর চুরিকাঘাতের ঘটনায় প্রধান আসামী নুরুল আলম জেল হাজতে প্রেরণ
উখিয়া প্রতিনিধি :::
কক্সবাজারের উখিয়ার সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের চিহ্নিত সমাজ বিরোধী পরিবারের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের চুরিকাঘাতে গৃহবধু শাহীনা আকতারের স্বামীর দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামী নুরুল আলমক আটকের পর ছাড়িয়ে নিতে দীর্ঘ সময়ের পর অবশেষে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। নুরুল আলম উখিয়ার ঘাট গ্রামের লাগোয়া নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘোনার পাড়ার মৃত কবির আহমদ ড্রাইভারের ছেলে। তাদের বাড়ির পার্শস্থ উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের উখিয়ার ঘাটের মৃত ছৈয়দ কাশেমের ছেলে রিক্সা চালক দরিদ্র শামসুদ্দিনের বাস্তুভিটার একাংশ ছমুদা আকতার ফিয়ারী দীর্ঘদিন ধরে জবর দখল চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। ধারাবাহিকতায় গত ১২ মার্চ বিকেলে ফিয়ারীর পক্ষ নিয়ে ভাই নুরুল আলম ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কয়েক দফা ধারালো অস্ত্রসজ্জিত দলবদ্ধ হয়ে অনধিকার প্রবেশ করে শামসুদ্দিনের বসত বাড়িতে। সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের দখল চেষ্টায় বাধা দিতে গেলে তাদের এলোপাতাড়ি চুরিকাঘাতে শামসুদ্দিনের ভাই নুরুল আমিনের স্ত্রী শাহীনা আকতার (২১) শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা জখম হয়। এ ঘটনায় শাহীনা ছাড়াও আরো ৬জন নারী-পুরুষ কমবেশী আহত হয়েছে। ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী লোকজন সন্ত্রাসীদের কবল থেকে আহতদের উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং উখিয়া থানায় সংঘটিত ঘটনায় অভিযুক্ত ৭ জনের নামে এজাহার দায়ের করেন। আহতদের মধ্যে শাহীনা আকতারের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক বলে স্বামী নুরুল আমিন জানান। ইতিমধ্যে চিকিৎসা বাবৎ অন্তত ৪০ হাজার টাকা ধারদেনায় ব্যয় করেও পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার আলামত দেখছিনা। একমাত্র সম্বল বাড়ি-ভিটি লভ্যাংশ মুলে জমাবন্ধক রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসাও সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে দিন- দিন গৃহবধু শাহীনা আকতারের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। চুরিকাঘাতের ঘটনায় গত ১৫মার্চ রাত ১টায় ওসি হাবিবুর রহমানের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও এএসআই পরিতোষের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী নুরুল আলমকে তার চাচা মৃত ছগির আহমেদের বাড়ি থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। ওইদিন নুরুল আলমকে ছাড়িয়ে নিতে মোটা টাকার মিশন নিয়ে একটি মহল দেনদরবার চালিয়ে ব্যর্থ হয়। গতকাল বুধবার আটক নুরুল আলমকে উখিয়া থানা পুলিশ কক্সবাজার জেল হাজতে প্রেরণ করেন। অপরদিকে আসামী নুরুল আলমের আপন সহোদর ভাই বাবুল ড্রাইভার মোস্তফা ড্রাইভার. নুরুল আলমের ২ স্ত্রী শামীমা বুড়ি মুন্নী বোন ছমুদা আকতার প্রকাশ ফিয়ারী সোনিয়া ও সোমারা গ্রেপ্তার না হওয়ার সুযোগে মামলা তুলে নিতে প্রকাশ্যে হুমকি ধমকি ও প্রাণনাশের হাকাবকা করছে। সন্ত্রাসীদের পক্ষ হয়ে বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজনও হাকাবকা করে মিথ্যা মামলায় ফাসিঁয়ে দিবে এমন অভিযোগ উঠেছে।মামলা প্রত্যাহার না করলে পরিনতি আরো ভয়াবহ হবে বলে শাসাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এতে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা উদ্ধেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন। ফলে ঝুঁকি নিয়ে আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন মামলা চালানো আর সন্ত্রাসীদের নতুন কোন মিথ্যা মামলার শিকার সহ জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম শংকিত মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া গৃহবধূ শাহীনা ও তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। সন্ত্রাসী আক্রান্তদের পালংখালী ইউপির ১নং ওয়ার্ড মেম্বার আবদুর রহিম রাজা ও গৃহবধুকে চুরিকাঘাত, বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর এবং লুটতরাজের ঘটনায় অভিযুক্ত ঘুমধুম ইউপির ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আবদুল করিম জানান, নুরুল আলমের মাতা ফাতেমার অনুরোধ উভয় পক্ষকে নিয়ে উখিয়ায় ঘটনার আপোস মিমাংসা করার চেষ্টা চালিয়েছি।বাদী পক্ষ নমনীয় হলেও বিবাদীরা এলাকার শালিস বিচার ও প্রচলিত আইন কানুন ইতিপূর্বেও অমান্য করে চলেছে এখনও তারা মানবেনা তাদের আচরণ ভালনা। যে কাউকে হেনস্তা করতে বিবাদীরা তোয়াক্কা করেনা তাই মান ইজ্জতের চিন্তা করে সরে গেছি। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থরা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে ওসি হাবিবুর রহমান জানান, অপরাধী যে দলেরই হউক ছাড় নেই।বাদীর পরিবারের নিরাপত্তা বিষয়ে পুলিশ পাশে থাকবে। অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
পাঠকের মতামত: