ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনে ১০৮ কেন্দ্রে ইভিএম ভোট প্রশিক্ষণ শুরু

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::  কক্সবাজার সদর উপজেলার ১০৮টি ভোটকেন্দ্রে ৫ দিনব্যাপী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের ওপর প্রশিক্ষণ আগামী রোববার ২৪ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে। আগামী ২৪ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের একটি প্রশিক্ষণ ইউনিট প্রতিকেন্দ্রে কাজ করবে। স্থানীয় ভোটারদের জন্য এ প্রশিক্ষণ উন্মুক্ত থাকবে বলে জানা গেছে ।

নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, এ সময়ে কমিশন নির্ধারিত স্থানে ভোট গ্রহণের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ‘মকভোটিং’ তথা বাস্তব ভোটের আদলে ভোট প্রদান প্রশিক্ষণ। এর আগে ২২ ও ২৩ মার্চ ভোটদান পদ্ধতি সরেজমিনে পরিদর্শন (ভোটার এডুকেশন) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ডেমোনেস্ট্রেটরদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।

কমিশন নির্ধারিত দক্ষ প্রশিক্ষকরাই প্রশিক্ষণ দেবে। ৫দিন ব্যাপী এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইভিএম-এর প্রতি আকর্ষণ ও সচেতনতা তৈরী করতে চায় নির্বাচন কমিশন। -জানালেন সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শিমুল শর্মা। তিনি জানান, প্রতি ভোটকেন্দ্রের লোকজনকে ইভিএম পদ্ধতিতে কিভাবে ভোট দিবে? হাতে কলমে তার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তাতে জনসচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে ইভিএম ভীতি দূর হবে।

ভোট প্রদান ও গ্রহণ সহজ হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ৩১ মার্চ সদরের নির্বাচন। একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন মিলে উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৪ জন। ১০৮টি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কক্ষ রয়েছে ৬৪৮টি। প্রতিটি কক্ষে ইভিএম ব্যালট ইউনিট থাকবে তিনটি করে। আর কন্ট্রোল ইউনিট থাকবে ৬৪৮টি। কোনো ইউনিটে টেকনিক্যাল ত্রুটি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিপ্লেস করার জন্য অতিরিক্ত ১০০টি ব্যালট ইউনিট মজুত রাখা হবে। সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, প্রতিকেন্দ্র থেকে তিন জন করে শিক্ষকের আইডি কার্ড সংগ্রহ করছে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস। এসব শিক্ষকদের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এরপর তাদের ভোটকেন্দ্রে পাঠিয়ে সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে সতর্কতামূলক ডেমোভোট গ্রহণ করবে।

নির্বাচন কমিশন বর্তমানে উন্নতমানের ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণ করছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ছয়টি আসনের পুরোটাই এসব ইভিএমে ভোটগ্রহণ করেছে। যদিও ফলাফল যত দ্রুততার সঙ্গে প্রকাশ করার কথা জানিয়েছিল, তত দ্রুত প্রকাশ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। দেশে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণের প্রথা চালু করে এটিএম শামসুল হুদার কমিশন ২০১০ সালে। সেই ভোটযন্ত্র তৈরি করে দিয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। উপজেলা পর্যায়ে কক্সবাজার সদরে এই প্রথম ইভিএমে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। ২০১৯ সালে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জনসহ মোট ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন- কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কয়েক যুগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম এ.কে.এম মোজাম্মেল হকের ছেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সারুল হক জুয়েল, কক্সবাজার পৌরসভার চারবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আবছার (ঘোড়া), ইসলামাবাদ ইউনিয়নের খোদাইবাড়ি গ্রামের আলী আকবরের ছেলে শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ সেলিম আকবর (আনারস), জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক আতিকুর রহমান, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মাওলানা মোকতার আহামদের পুত্র আবদুল্লাহ আল মোর্শেদ প্রকাশ তারেক বিন মোকতার (মটর সাইকেল)।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে-কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম মুক্তিযোদ্ধা এস.টি.এম রাজা মিয়ার পুত্র আমজাদ হোসেন ছোটন রাজা (টিউবওয়েল), কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী মোরশেদ আহামদ বাবুর ছোট ভাই তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা কাজী রাসেল আহমেদ নোবেল (গ্যাস সিলিন্ডার), অবিভক্ত চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম মাস্টার কবির মিয়ার সুযোগ্য নাতি ও কক্সবাজার ইকরা বীচ হোটেলের পরিচালক হাসান মুরাদ আনাচ (টিয়া পাখি), বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের জেলা সভাপতি, কক্সবাজারস্থ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সমিতির সহসভাপতি ও বৃহত্তর বীচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাংবাদিক আব্দুর রহমান (পালকি), কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স.ম নুরুন্নবীর পুত্র মোরশেদ হোসাইন তানিম (উড়োজাহাজ), ঈদগাহ কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম উদ্দীন (চশমা), ঝিলংজা ইউনিয়নের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম নবাব মিয়ার পুত্র রশিদ মিয়া (বই), খুরুশকুলের আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন কামাল (তালা), ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার বাবুল কান্তি দে (মাইক)।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন-বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর হেলেনাজ তাহেরা (প্রজাপতি), কক্সবাজার জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী আয়েশা সিরাজ (পদ্মফুল) ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের (ফুটবল)।

পাঠকের মতামত: