ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : মাঠের লড়াইয়ে জুয়েল-আবছার

নিজস্ব প্রতিবদক, কক্সবাজার ::
অবশেষে জমে উঠছে কক্সবাজার সদরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। চলছে মাঠের যুদ্ধ। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে প্রার্থীদের নির্ঘূম প্রচারনা। মাঠে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রয়েছে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের বার বার নির্বাচিত সভাপতি মরহুম মোজাম্মেল হকের পুত্র জেলা স্বেচ্ছাসেকবলীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সারুল হক জুয়েল। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তিনি চষে বেড়াচ্ছেন এপাড়া থেকে ওপাড়া। কয়েকটি টিমে ভাগ হয়ে চলছে প্রানান্ত প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন দলকে বিজয়ের মাল্য উপহার দিতে। তবে মাঠে ছাড় দিতে নারাজ কক্সবাজার পৌরসভার ৪ বারের সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য নুরুল আবছার। তিনি মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সদরের অপরাপর প্রার্থীদের মধ্যে জামায়াত বিএনপির প্রার্থী হিসাবে যাকে ধরে নিয়ে কঠিন সমীকরণ কষেছিলেন প্রার্থীরা তাদের সব অংক পাল্টে দিয়েছে আবদুল্লাহ আল মুর্শেদ তথা তারেক বিন মোক্তার। গতকাল হঠাৎ করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনা দেওয়ায় সদরের পুরো হিসেব পাল্টে যাচ্ছে বলে মনে করেন ভোটাররা। মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ঝিলংজার সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মৌলানা মোক্তার আহমদের পুত্র তারেক বিন মোক্তার মায়ের অসুস্থতাজনিত কারনে এবং মায়ের নির্দেশে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েলের পথ সহজ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন -ঝিলংজার বিশাল ভোট ব্যাংক বিশেষ করে খরুলিয়া, মোক্তারকুল, পিএমখালী, খুরুস্কুল এলাকার মানুষ ক্লীন ইমেজের প্রার্থী হিসাবে আমাকে পছন্দ করবে এটা আমার বিশ্বাস। এছাড়া আমার প্রয়াত বাবার কাছের মানুষ হিসাবে এতদঞ্চলের ভোটাররা আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করবেন এটা আমার আশা। তিনি দাবি করেন- মাঠে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ছাড়া পাচ্ছি যা আমাকে সাহস যুগাচ্ছে।
মাঠে কৌশলে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন অপর হেভিওয়েট প্রার্থী কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার । তিনি যে নির্বাচনী মাঠে সিদ্ধহস্ত অনেক আগে তা বহুবার প্রমান করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি কয়েকটি ইউনিয়নে কৌশলে প্রাথমিক প্রচারনা চালিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের কাছে যেতে পারেননি কৌশলগত কারনে। তবে চমক হিসাবে তিনি আজ (২০ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন বলে গতকাল জানিয়েছেন। তিনি বলেন- আজ আপাতত বলছিনা । আগামিকাল (আজ) দুপুর ১২টায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে তিনি ভোটারের অনুরোধে মাঠে প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন চালিয়ে যাচ্ছেন এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। মাঠে প্রচারনা চালাচ্ছেন ঈদগাঁও ইসলামাবাদের আলী আকবরের পুত্র মোহাম্মদ সেলিম আকবর (আনারস) এবং জাতীয় পার্টির মনোনীত  প্রার্থী অধ্যাপক আতিকুর রহমান (লাঙ্গল)। সেলিম আকবরকে মাঠে দেখা গেলেও ভোটাররা খুজে পায়নি লাঙ্গলের প্রার্থী অধ্যাপক আতিকুর রহমানকে। ভোটাররা মনে করেন জামায়াত সমর্থিত মোটরসাইকেলের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মুর্শেদ মাঠ থেকে সরে যাওয়ার কারনে সমীকরণ জটিল হয়ে দাড়িয়েছে দুই প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী সরকার দলের নেতা নৌকার প্রাার্থী কায়সারুল হক জুয়েল এবং নুরুল আবছারের মধ্যে।
এদিকে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশে আগেই নাম প্রত্যাহার করে নেন সদর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, জেলা পরিষদ সদস্য সোহেল জাহান চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জোরেশোরে প্রচারনা চালাচ্ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম মুক্তিযোদ্ধা এস.টি.এম রাজা মিয়ার পুত্র আমজাদ হোসেন ছোটন রাজা (টিউবওয়েল), পৌরসভার কাউন্সিলর কাজী মোরশেদ আহামদ বাবুর ছোট ভাই কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহমেদ নোবেল (গ্যাস সিলিন্ডার), ইকরা বীচ হোটেলের পরিচালক চৌফলদন্ডীর হাসান মুরাদ আনাচ (টিয়া পাখি), বৃহত্তর বীচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাংবাদিক আব্দুর রহমান (পালকি), কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসাইন তানিম (উড়োজাহাজ), ঈদগাহ কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম উদ্দীন (চশমা), ঝিলংজা ইউনিয়নের মরহুম নবাব মিয়ার পুত্র রশিদ মিয়া (বই), খুরুস্কুল তেতৈয়ার স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামাল উদ্দিন (তালা), ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার বাবুল কান্তি দে (মাইক)।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে ভোট প্রার্থনা করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাবেক পৌরসভার কাউন্সিলর হেলেনাজ তাহেরা (প্রজাপতি), কক্সবাজার জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী আয়েশা সিরাজ (পদ্মফুল) ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের (ফুটবল)।
বলাবাহুল্য কক্সবাজার পৌরসভা এবং সদরের ১০ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৪ জন। তাৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪২ এবং মহিলা ১ লাখ ২১ হাজার ২০২ জন। ইভিএমের মাধ্যমে ১০৮টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪৮টি বুথে ভোট গ্রহন করা হবে আগামি  ৩১ মার্চ।

পাঠকের মতামত: