ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

দুঃসময়ের কান্ডারীদের নিয়েই জেলা ছাত্রদলের কমিটি

Chatrodol_jcdইমাম খাইর, কক্সবাজার :::
দলের দুঃসময়ের কান্ডারীদের নিয়েই গঠিত হচ্ছে জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। নতুন-পুরাতন সমন্বয়ে ঘোষিত হতে যাওয়া জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাবে মেধাবী, নিয়মিত ছাত্ররাই।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়েই এ কমিটি ঘোষিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ছাত্রদলের একটি সুত্রে আভাস পাওয়া গেছে।
তবে, আরেকটি সুত্র মতে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে এ কমিটি ঘোষণা নাও আসতে পারে।
দলের একটি সুত্র জানিয়েছে, ১২১ সদস্যের একটি খসড়া কমিটি অনুমোদনের জন্য তা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
সুবিধাভোগী কাউকে কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি। সৃজনশীল নেতৃত্বেই জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হচ্ছে।
তবে, এবারের কমিটি হবে জেলা ছাত্রদলের ‘মডেল কমিটি’- এমনটি জানান জেলা ছাত্রদলের নেতারা।
ছাত্রদলের একটি সুত্রে জানা গেছে, আগামী ১৯ মার্চ বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল। এর আগে কমিটি ঘোষণা করে পদ পঞ্চিত হওয়াদের ক্ষোভে পড়তে চাননা নেতারা।
কারণ, দুই দিন আগে জেলা যুবদলের ঘোষিত কমিটিতে বঞ্চিতরা যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তাতে শিক্ষা হয়েছে ছাত্রদলের। কেন্দ্রীয় বিএনপির সম্মেলনের আগে এমন কোন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে চাননা ছাত্রদল নেতারা।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল বলেন, তরুণ ও মেধাবী নেতৃত্বের খোঁজে আমরা তৃণমূলে কাজ করছি। স্কুল-কলেজ থেকে নেতৃত্ব ওঠে আসবে। ইউনিয়ন কিংবা ওয়ার্ড পর্যায় থেকেও আমরা নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে চাই। জেলা ছাত্রদলের এবারের কমিটি হবে মডেল কমিটি। তাতে থাকবেনা অছাত্র, অযোগ্য, সুবিধাভোগী ও বিতর্কিত নেতৃত্ব। যারা দলের কঠিন সময়ে মাঠে ছিল তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। এ জন্য আমরা সিনিয়র নেতাদের সাথে পরামর্শ করছি। তিনি বলেন, আমরা বিদায় নিলেও যেন ছাত্রদল নেতৃত্ব সঙ্কটে না পড়ে সেজন্য মেধাবী ও তরুন নেতৃত্ব তুলে আনতে কাজ করছি।
তবে জেলা ছাত্রদলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে চরম সঙ্কট চলছে। জুনিয়র ছেলেদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সিনিয়র অনেককে মূল্যায় করা হচ্ছেনা।
শহর ছাত্রদলের অরেক নেতা বলেন, ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহে কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। এ কারণে অনেক নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন)কে জানান, ছাত্রদল অনেক বড় সংগঠন। যাচাই বাছাই করে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে একটু সময় লাগছে। তবে কাউকে বাদ দিয়ে কমিটি হবেনা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সমন্বয় করেই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলছে।
কমিটি গঠন পক্রিয়ায় সম্পর্কে তিনি বলেন, কে কোন পদ পাচ্ছে আর কে বাদ পড়ছে তা জানার তো কথা নয়। আন্দোলন সংগ্রামে যারা মাঠে ছিলনা তারাই আশঙ্কায় আছে। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মাঠের কর্মীদের কোন সন্দেহ নেই। তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের কারণে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। এরপরও চলতি মাসের মধ্যেই কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
২০১৪ সালের ১ জুলাই জেলা ছাত্রদলের সাত সদস্যের (আংশিক) কমিটি অনুমোদন দেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব।
ঘোষিত কমিটিতে রাশেদুল হক রাসেল সভাপতি, সরওয়ার রোমন সিনিয়র সহ-সভাপতি, আবদুর রউফ সহ-সভাপতি, মনির উদ্দিন মনিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এছাড়া আলাউদ্দিন রবিন, জাহেদুল ইসলাম লিটন এবং শাহীনুল ইসলাম শাহীন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হন।
ওই সময় কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে এক মাসের মধ্যে ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা এবং সকল সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কেন্দ্রীয় সংসদের নিকট জমা দিতে নতুন কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু দেড় বছরের বেশী সময় ধরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে দিন দিন হতাশা ও ক্ষোভের দানা বাঁধছে। বিশৃংখলার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া দেশের সর্ববৃহৎ এই ছাত্র সংগঠনটিতে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারী জেলা ছাত্রদলের এক সভায় ৩০ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আল্টিমেটাম দেয় বিক্ষুব্ধ নেতারা। এ সময় অনেকেই পদত্যাগের ঘোষণাও দেন। এমনকি ছাত্রদলের তৃণমূলের ব্যানারে মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ ও বেগম জিয়ার নির্দেশনায় ছাত্রদল পরিচালিত হয়। দলীয় আদর্শ ও নীতিমালার বাইরে ছাত্রদলে স্থান নেই। যোগ্যতা সম্পন্ন ও মেধাবীদের নিয়েই জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে, ওড়ে এসে জুড়ে বসাদের কমিটিতে ঠাই হবেনা। মাঠের কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।

পাঠকের মতামত: