ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শহরে অধ্যক্ষ উপান্ডিতা মহাথের’র অশ্রুভেজা বিদায়, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান রূপ নেয় সম্প্রীতির মিলনমেলায়

এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার ::

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গনে দুইদিন ব্যাপী অগ্গমেধা ক্যাং এর অধ্যক্ষ প্রয়াত উপান্ডিতা মহাথের’র অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৯ মার্চ) সর্বশ্রদ্ধেয় ধর্মগুরুকে বেদনাবিদুর অশ্রুভেজায় বিদায় দিয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ। আর এই অনুষ্ঠান অবলোকনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীর লোকও সমবেত হয়। দেশী-বিদেশী অর্ধশতাধিক পর্যটকদের পদচারণায় অনুষ্ঠানস্থল রূপ নেয় সম্প্রীতির মিলনমেলায়। এতে পরস্পরের প্রতি ভাতৃত্বে বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলে ধারণা আয়োজকদের। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের সমাপনীতে সকাল থেকে সংঘ মন্ডলীকে প্রাতঃরাশ নিবেদন, নৃত্য গীতের মাধ্যমে বন্দনা, সংঘ মন্ডলীকে ছোঁয়ে নিবেদন, পূজার্থী, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের মধ্যাহ্নভোজন, কাতালা নৃত্য, উৎসর্গবাণী পাঠ করা হয়। বিকালে অধ্যক্ষ উপান্ডিতা মহাথেরোর পবিত্র শবদেহকে অগ্নিদাহের মাধ্যমে অস্তিম বন্দনা করা হয়। এসময় পূজার্থী ও পূণ্যার্থীদের চোখের পানি ছিল ছল ছল। অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে না পেরে অঝোরে কেঁদেছে নিরবে-নিভৃতে। একবুক কষ্ট নিয়ে সবাই অন্তিমবারের মতো প্রিয় ধর্মগুরুকে স্বর্গের উদ্দেশ্যে বিদায় দেয়। এর আগে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। এরপর অনুষ্ঠানে এসে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে সমবেদনা জানান সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক। এসময় অতিথিরা উপভোগ করেন রাখাইন নারী, পুরুষ ও শিশুদের ধর্মীয় কাতালা নৃত্য। নৃত্যে শহরের মাছবাজার রাখাইন পাড়া থেকে ১টি, ক্যাং পাড়া থেকে ২টি, বান্দরবানের লামা থেকে ২টি, নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ২টি ও রোয়াংছড়ি থেকে ২টিসহ মোট ৯টি অভিজ্ঞ দল অংশ নেয়। অনুষ্ঠান ঘিরে ছিল ব্যাপক নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি নিয়োজিত ছিল শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সভাপতি মংক্য এ, সাধারণ সম্পাদক ক্যাছিং উ ও সহ সাধারণ সম্পাদক মং ওয়া নাইন বলেন, ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অগ্গমেধা ক্যাং এর অধ্যক্ষ উপান্ডিতা মহাথের এর মহাপ্রয়াণ হয়। তার দেহাবশেষের দুইদিনব্যাপী অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য মন্দির কমিটি, উদযাপন কমিটি, শুভাকাংখী, স্বেচ্ছাসেবক, এলাকাবাসী, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, সাংবাদিক, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

পাঠকের মতামত: