ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে দেড় লাখ টাকায় দুই বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছেড়ে দিল পুলিশ

policcনিজস্ব প্রতিনিধি ॥

দুই বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামীকে গ্রেফতারের পর দেড় লাখ টাকায় নগদ ঘুষ নিয়ে গভীর রাতে ছেড়ে দিল পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এঘটনাটি গত সোমবার দিবাগত গভীর রাত ১টায় কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ইমাম ঘটিয়েছে।
অবশ্য পুলিশ ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নামের মিল থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই এএসআই ইমামেরর বিরুদ্ধে রয়েছে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি, নিরীহ লোকজনকে ধরে এনে মুক্তিপণ আদায়, ইয়াবা আটকের পর আত্মসাতের মতো একাধিক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক নির্ভর যোগ্য সুত্র ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদরের ফুলছড়ি নতুন অফিস বাজার এলাকায় অভিযান চালান ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরির্দশক (এএসআই) ইমাম। এসময় বাজার থেকেই শতশত জনতার সামনে গ্রেফতার করা হয় চেক প্রতারণা মামলার দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ ইলিয়াছ কে। গ্রেফতারকৃত মোঃ ইলিয়াছ ইসলামপুর ইউনিয়নের বাঁশকাটা এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে। তাকে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানান, সোমবার দিবাগত গভীর রাত ১টার দিকে ইসলামপুর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের মধ্যস্থতায় নগদ দেড় লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ছেড়ে দেয় অভিযান পরিচালনাকারী এএসআই ইমাম। আসামী ছেড়ে দিয়ে নগদ নেয়া টাকার ভাগ তদন্ত কেন্দ্রের অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের না দেয়ায় খোদ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের মাঝেও চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২০১২ সালে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা এলাকার এক ব্যবসায়ি এই চেক প্রতারণা মামলাটি দায়ের করেছিলেন। গত দুই বছরপূর্বে মামলার আসামী মোঃ ইলিয়াছকে ২ বছরের সাজা দেন আদালত। ওই সময় হতে পুলিশী গ্রেফতার এড়িয়ে পলাতক ছিলেন তিনি।
এই এএসআই ইমামেরর বিরুদ্ধে রয়েছে এসপিসহ পুলিশ উর্ধবতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকায় মদের মহাল, স’মিল, ফেরারী আসামীদের কাছ থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি অভিযোগ। এছাড়া সালিশ বিচারের নামে নিরীহ লোকজনকে ধরে এনে মুক্তিপণ আদায়, মানবপাচারকারী চক্রের সাথে আতাঁত করে অবৈধ পন্থায় টাকা আয় করছে। সম্প্রতি ইয়াবা সহ দুই পাচারকারীকে আটকের পর ছেড়ে দেয়া ও ইয়াবা আত্মসাতের মতো একাধিক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে ইমামের বিরুদ্ধে।
এব্যাপারে এএসআই ইমামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোঃ ইলিয়াছ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে বলেন, নামের মিল থাকায় ভুলবশত তাকে আটক করা হয়েছিল ঠিক। পরে তদন্ত করে সঠিক না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দেড় লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগটি তিনি অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, আসামী গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেয়ার ঘটনাটি আমি জানি না। তবে খোঁজখবর নিচ্ছি।

পাঠকের মতামত: