ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাঁশখালীতে নির্বিচারে চলছে চিংড়ি পোনা আহরণ, মারা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

বাঁশখালী প্রতিনিধি ::

বাঁশখালীতে সাগর উপকূলে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক সাধারণ জনগণ ও ছোট শিশুদের দিয়ে নির্বিচারে পোনা সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে। এতে তারা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের মৎস্য সম্পদ। তারা চিংড়ি পোনা সংগ্রহ করতে গিয়ে মেরে ফেলছেন বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পোনা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাঁশখালীর পশ্চিমাংশে বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে অবস্থিত উপকূলীয় ইউনিয়নগুলোর লোকজন এ পেশায় নিয়োজিত। বিশেষ করে ছনুয়া, গণ্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, খানখানাবাদ, সাধনপুর ও পুকুরিয়া এলাকার উপকূলীয় লোকজন এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব পোনা তাদের কাছ থেকে কম দামে সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, উপকূলীয় এলাকার লোকজন পোনা সংগ্রহ করে তা জমা রাখেন ‘টংঘরে’। সেখান থেকে ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনে নিয়ে তা ড্রামভর্তি করে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করেন। এছাড়া পোনা ব্যবসায়ীরা উপকূলীয় এলাকার গরীর লোকজনকে ঋণ দিয়ে থাকেন, যাতে ঋণগ্রহীতারা পোনা সংগ্রহ করে তাদের কাছে দেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতি শত পোনা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে ২০/২৫ টাকায় ক্রয় করে তা ৮০/১০০ টাকায় বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পোনা মারা যাওয়ার আশঙ্কায় সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পোনাও নিয়ে নেন তারা।

সরেজমিনে বাঁশখালীর ছনুয়া, গণ্ডামারা ও বাহারছড়া সাগর উপকূলে দেখা যায়, শত শত ছোট ছেলে–মেয়ে দলবেঁধে মাছের পোনা সংগ্রহ করছে। এ সময় তাদের অভিভাবকরা কূলে বসে তাদের সংগৃহীত চিংড়ি পোনাগুলো অন্য পোনা থেকে আলাদা করছে। পোনা সংগ্রহকারীরা চিংড়ি পোনা ছাড়া বাকি পোনাগুলো খোলা জায়গায় ফেলে দিচ্ছে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পোনা মারা যাচ্ছে। ফলে সাগরে দিন দিন মৎস্য সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিমত বিশিষ্টজনদের।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমাদের জনবল কম থাকায় আমরা প্রায় সময় উপকূলে যেতে পারি না। তাছাড়া যখনি খবর পাই আমরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

এদিকে সম্প্রতি ছনুয়া থেকে ট্রাকযোগে চিংড়ি পোনা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ একটি চালান আটক করে। পরে পোনাগুলো জলকদর খালে অবমুক্ত করে মোফাচ্ছেল হক নামে এক পাচারকারীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার।

পাঠকের মতামত: