ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

দরিয়ানগরে রাস্তার বাতি গ্রাম্য দালালের গোয়ালঘরে!

কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগরে মানুষের চলাচলের রাস্তার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের বরাদ্দকৃত সৌরবাতি এখন আলোকিত করছে এক গ্রাম্য টাউটের গোয়ালঘর। অথচ হাজার হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তা ডুবে আছে ভুতুড়ে অন্ধকারে। কক্সবাজারে জাপা এমপি খোরশেদ আরা হকের বরাদ্দ থেকে এমন লংকাকান্ড চলছে। এরআগেও একই এমপির নানা বরাদ্দ নিয়ে এমন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার গ্রামীণ সড়কগুলোকে আলোকিত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে সৌরবাতি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এরই অংশ হিসাবে দরিয়ানগর এলাকার জন্য বরাদ্দ করা হয় মাত্র ১০টি সৌরবাতি। এগুলোও সঠিক স্থানে স্থাপন না করে প্রভাবশালী মহলের স্বার্থে অগুরুত্বপূর্ণস্থানে স্থাপন করা হয়। এমনকি একটি বাতি দেখা যায় এক গ্রাম্য দালালের গোয়ালঘরে! সিভাসু গবেষণা কেন্দ্র সংলগ্ন বড়ছড়া খালের ওপারে তার গোয়ালঘর। সম্প্রতি পাহাড় কেটে খালের গতিপথ পরিবর্তন করে সিভাসু গবেষণা কেন্দ্র সংলগ্ন বড়ছড়া খাল দখল ও ভরাট করে সেখানে স্থাপনা গড়ে তুলে ওই ছৈয়দ আলম লেডু নামের ওই গ্রাম্য টাউট। আর ওপারে জনবসতিহীন এলাকায় গড়ে তোলা তার গোয়ালঘরে স্থাপন করা হয়েছে ওই ‘স্ট্রিটলাইট’! অথচ দরিয়ানগর মেরিন ড্রাইভ থেকে বড়ছড়া ছোট ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৩শ মিটার রাস্তায় এবং আশ্রায়ণ কেন্দ্রের রাস্তার আরো বিভিন্নস্থানে কোন বাতি নেই।
বিষয়টি দু:খজনক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, লেডুকে বলেছিলাম তার গোয়ালঘরে লাগানো বাতিটি খুলে এনে রাস্তায় লাগাতে। উল্টো সে বলে, টাকা-পয়সা খরচ করে সে নাকী ওগুলো এনেছে।
দরিদ্র জনগণের ঘরে জ্বালানোর জন্য বরাদ্দকৃত অনেক বাতিও ওই গ্রাম্য টাউট আত্মসাৎ করেছে। শুধু তাই নয়, যারা বাতি পেয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে।
শুকনাছড়ি দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মামুন সওদাগর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনিও লেডুর মাধ্যমে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে তার এলাকার মসজিদের জন্য চারটি সোলার বাতি পেয়েছেন।
বড়ছড়া খালেকের পাহাড়ের বাসিন্দা গৃহিনী দিলনাহার জানান, তিনি গ্রাম্য টাউট লেডুকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে নিজের ঘরে জন্য একটি সৌর বাতি পেয়েছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ছৈয়দ আলম লেডুর কাছ থেকে জানতে চাইলে টাকা গ্রহণের টাকা স্বীকার করে তিনি বলেন, বাতিগুলো আমি অনেক টাকা খরচ করে মহিলা এমপির কাছ থেকে নিয়ে এসেছি।
ঘটনা সম্পর্কে কক্সবাজারে জাপার মহিলা এমপি খোরশেদ আরা হক বলেন, ‘আমিতো জানিনা সে (লেডু) কাকে টাকা দিয়েছে। আর তার কাছে লাইট বরাদ্দের কথাওতো আমার মনে নেই।’ সৌরবাতি নেয়ার সময় টাকা নিয়ে থাকলে তাকে পুলিশে দেওয়ারও অনুরোধ জানান এমপি খোরশেদ আরা হক।

পাঠকের মতামত: