ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় খুচরা বিক্রেতার গুদামে বিপুল পরিমাণ চোরাই সার মজুদ!

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে’র গুদামে বিপুল পরিমাণ চোরাই সার মজুদের সত্যতা পেয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি। ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিসিআইসির সার ডিলার মের্সাস রূপালী ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে নামমাত্র বরাদ্দের সার উত্তোলনের ফাঁেক ফাঁেক অভিযুক্ত খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম ও ঘোড়াশাল থেকে চোরাই পথে এসব সার কিনে এনে ডুলাহাজারা বাজারস্থ তাঁর গুদামে মজুদ করেছে।

সরকারিভাবে নিয়ম আছে একজন খুচরা বিক্রেতা তাঁর গুদামে একটন মতো সার মজুদ রাখতে পারবেন। কিন্তু তদন্তে খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে’র গুদামে পাওয়া গেছে প্রায় ২৩ মেট্রিক টন সার। এ ধরণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে।

জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মহিউদ্দিনকে দায়িত্ব দেন। নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ২৩ জুলাই বিকেল পাঁচটার দিকে খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে’র ডুলাহাজারা বাজারস্থ গুদামে উপস্থিত হন তদন্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন। ওইসময় গুদামে তল্লাসি চালিয়ে দেখেন সেখানে মজুদ রয়েছে ১০টন ইউরিয়া সার, ৬টন টিএসপি সার, ৪টন এমওপি সার, ৩টন ডিএপিসহ সর্বমোট ২৩ মেট্রিক টন সার। ওইসময় মজুদ তালিকা প্রস্তুত করে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে এবং উপস্থিত স্বাক্ষীদের সাক্ষরও নিয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, তদন্তের পর ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে,অভিযুক্ত খুচরা বিক্রেতা বিগত পাঁচ মাসের মধ্যে ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিসিআইসির সার ডিলার মের্সাস রূপালী ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে দুইবার সার উত্তোলন করেছেন। তারমধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারী তারিখে ৭৫০ কেজি ইউরিয়া ও ২২ ফেব্রুয়ারী তারিখে একটন ইউরিয়া সার নিয়েছেন। এরপর থেকে খুচরা বিক্রেতা পলাশ দে আর কোন ধরণের সার মুল ডিলার থেকে নেয়নি।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ তুলেছেন, খুচরা বিক্রেতার গুদামে অতিরিক্ত সার মজুদের বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর গত ২৬ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দিয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত খুচরা বিক্রেতাকে অপকর্ম থেকে রক্ষা করতে একটি মহল নানভাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে তদবির শুরু করেছেন। যার কারনে তদন্তের অগ্রগতির বিষয়টি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তর থেকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাতে ইচ্ছেকৃতভাবে সময় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

পাঠকের মতামত: