ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া মালুমঘাট বাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানঘর মালিকরা ক্ষতিপূরণ পায়নি

sssssএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন,কক্সবাজার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ॥

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৮টি দোকান ঘর মালিক এখনো কোন সাহায্য সহযোগীতা পাননি। ক্ষতিপূরণ ও দোকান মালিকদের দখল বজায় রাখার জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছে দোকান ঘর মালিকরা। বিষটির ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভোররাত আড়াইটার দিকে সংগঠিত এ অগ্নিকান্ডে প্রায় পৌণে এককোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়।

এলাকাবাসি সুত্রে জানা যায়, মালুমঘাট বাজারটি দীর্ঘদিনের পুরনো। ১৯৯৫ সালে জনদূর্ভোগ লাগবের জন্য সড়কের লাগোয়া বাজারটি চা বাগার সড়কস্থ দিশারী ক্লাবের পূর্বপার্শ্বস্থ বনভুমিতে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানীয় দিশারী ক্লাব (বর্তমানে দিশারী সমিতি) ও মালুমঘাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমিতির সদস্যরা নিজেদের উদ্যোগে দোকান গৃহ নির্মাণ করে সেখানে ভাড়াটিয়া নিয়োগ দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস ও জিিবকার তাগিদে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছিল।

উক্ত বাজারটি বনবিভাগের সংরক্ষিত এলাকা বলে দাবী করলেও রিভিউ মামলার অনুবলে তা থাস জমিতে রূপান্তরিত হয়ে বর্তমানে এর পরিধি প্রায় ৪৬ একরে দাড়িয়েছে। খাস জমিতে স্বীকৃত হাটবাজারে আওতাভুক্ত হওয়ায় গত বছরের ১২ এপ্রিল থেকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে স্থানীয় দিশারী সমিতি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমিতি পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসহাকের নামে ইজারা নেয়া হয়। ইতোপূর্বে বাজারটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও ইজারা নিয়েছিলেন।

মালুমঘাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনজুর আলম জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভোররাত তিনটার দিকে কুচক্রি মহলের প্ররোচনায় উক্ত দোকানগুলো রাতের আধাঁরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে দোকান ঘর মালিকদের নির্মিত ৫৮টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। চকরিয়ার দমকল বাহিনী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দোকান ঘর নির্মাণে ও মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমে মালিকদের প্রায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সংগঠিত এ অগ্নিকান্ডে প্রায় পৌণে এককোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজন সর্বশান্ত ও দেউলিয়া হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

মালুমঘাট বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইজারাদার মোহাম্মদ ইসহাক জানান, ঘটনারদিন সকালে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করতে যাওয়ার পথে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও অগ্নিসংযোগকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হই আমি ও সমিতির সভাপতি মনজুর আলম। এঘটনায় চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় ডাকাত আমির হোসেনকে গ্রেফতার করে। এমামলার আরো ৩ জন আসামী আদালতে আত্ম সর্ম্পন করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান। বর্তমানে চার জনই কারাগারে রয়েছে।

তিনি আরো জানান, কুচক্রিমহলের প্ররোচণায় দেয়া অগ্নিকান্ডে ভস্মিভুত দোকানঘরের জায়গা নানা ভাবে অবৈধ দখলের পায়তারা চালাচ্ছে একই মহল। এমন কি বাজারের জায়গা দখল ও গ্রাস করার জন্য অপকৌশল করছে। দোকানঘর পুর্ণ নির্মাণ করতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে বাধাগ্রস্ত করছে ষড়যন্ত্রকারীরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোঃ বারেক, নুরুল কবিরসহ আরো বেশ কয়েকজন ব্যক্তি গত ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে বাজারটি ইজারা নেন। কিন্তু ইজারাদারেরা সরকারী ইজারা নীতি লঙ্গন করে সেখানে ৭টি সেমিপাকা টিন সেড ঘর নির্মাণ করে অবৈধ দখলে রয়েছে। তারাই এই ষড়যন্ত্রের মুলপরিকল্পনাকারী বলে জানাগেছে। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়।

মালুমঘাট দিশারী ক্লাব ও দিশারী সমিতির সভাপতি সাংবাদিক রুস্তম গণি মাহমুদ জানান, অগ্নিকান্ডে ঘটনাটি অত্যন্ত পরিকল্পিত। বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা ঘটনার কয়েকদিন পূর্ব থেকে মালামাল আনা কমিয়ে ফেলেন। এতে স্পষ্ট যে তারাই পরিকল্পিত ভাবে এধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনাটি সংগঠিত করেছে।

এদিকে, মালুমঘাট বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৫৮টি দোকান ঘর মালিকদের ক্ষতিপূরণ ও তাদের দখল বজায় রাখার জন্য দোকানঘর মালিকদের পক্ষে বাহাদুর মিয়া ও মনজুর আলম গত ১৮ ফেব্রুয়ারী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছে। জেলা প্রশাসক আবেদনটি নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত: