ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলা আওয়ামীলীগকে জাহেদুল ইসলাম লিটুর খোলা চিঠি

zahedul-islam-lituপরম শ্রদ্ধেয় সভাপতি, সাঃ সম্পাদক মহোদয়,কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ।

আমি জাহেদুল ইসলাম লিটু(১৯৯০ সালে) এস.এস.সি পাশ করার পর হতে ছাত্রলীগের এক জন কর্মী হিসাবে রাজনীতি শুরু করি।ছাত্রলীগ বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলার সাঃসম্পাদক + সভাপতি এ দুটি পদে থেকে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেছি। ছাত্রলীগের সাঃ সম্পাদক থাকাকালীন ২০০১ সালে বি,এন,পি ক্ষমতায় আসলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার হয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে অকথ্য নির্যাতন, ২ মাসের ডিটেনশন দিয়ে পর পর ৯ টি রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় ২ বছর একটানা কারাভোগ করলাম।জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বি,এন,পি র আমলে চকরিয়া পৌর সভার কমিশনার হলাম।প্যানেল মেয়র (১)হিসাবে দায়িত্বে ছিলাম। চকরিয়া পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলাম।জেলা যুবলীগের সদস্য ছিলাম।কাউন্সিলারদে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে পৌর আওয়ামীলীগে সভাপতি নির্বাচিত হলাম। ২৮ শে অক্টোবর হতে ৫ জানুয়ারির পর্য্যন্ত রাজপথে জামাত বিএনপির বিরুদ্ধে লডাই-সংগ্রামে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে জ্বালাও- পোডাও, হরতালের মোকাবেলা করলাম।চরম বিপর্যয় কাটিয়ে আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায়…। চকরিয়ায় পর পর (৪)চার বারের বন্যায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম।আমার দল আওয়ামীলীগের বিন্দু পরিমান সম্মান হানি ঘটুক এধরনের কোন কর্মে কখনো অংশ গ্রহন করিনি।নিজের দল থেকে কখনো কোন অর্থনৈতিক, ব্যবসায়ীক সুবিধা নেই নি। আজ সংগঠনের এক জন তৃণমূল কর্মী হিসাবে-দলীয় নেতা-কর্মীদের দাবীর প্রেক্ষিতে চলমান চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য যথা নিয়মে আমার কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ বরাবরে তৃণমূলের রিজোলেশনসহ প্রার্থী হিসাবে আবেদন করলাম। দীর্ঘ দুই দিন যাচাই-বাচাই করে আমার পরম শ্রদ্ধেয় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি/সাঃ সম্পাদক মহোদয় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড বরাবরে ৫ জন নেতার নাম নির্ধারন করে একটি তালিকা পাঠালেন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য সেই তালিকায় আমি জাহেদুল ইসলাম লিটু এবং সাঃসম্পাদক আতিক উদ্দীন চৌং নাম নেই।এই হল ২৫ বছর রাস্তায় শ্লোগান দেয়া এক জন কর্মীর পাওনা-মুল্যায়ন! জানিনা কি আমার অপরাধ? কি আমার অপুর্নতা? কি আমার ঘাড়তি? …………… অপরাধ আমার একটাই – আমি চকরিয়ার আপামর জনতা,সাধারন – অসহায় কর্মীদের প্রানস্পন্ধন,আওয়ামীলীগের দুর্দিনের কান্ডারী, জননেতা জাফর আলম বি,এ অনার্স এম,এ র পাশে থেকে নিরবিচ্ছিন্ব ভাবে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে কাজ করি। আজ আমার নাম বাদ দিয়ে মনোনয়ন বোর্ডে -মাননীয় নেত্রীর কাছে যাওয়ার অধিকারটুকু কেড়ে নিয়ে যে অপরাজনীতির ইতিহাসের জন্ম দেয়া হল এটা কার স্বার্থে? কেন একজন নীরিহ কর্মীর সম্ভাবনাকে নস্ট করে দিলেন?? আমার যে দুঃখীনি মা কারাগারে থাকা অবস্থায় জায়নামাজে বসে ছেলের মুক্তির জন্য চুখের জল ফেলে কান্না করতেন,জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রান খুলে দোয়া করতেন-সেই মায়ের প্রশ্নের উওর দিতে পারি না! মিছিলে যাওয়ার সময় যে মা মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করে দিতেন- সেই মায়ের কাছে ছোট হয়ে গেলাম।চকরিয়া পৌর সভায় ৫ জনের সাথে শেষ নাম্বারে হলেও আমার নামটি অন্তরভুক্ত হল না! যার সাথে সংসার (আমার সহধর্মিনী)যার দাবীর প্রতি রাজনীতির প্রয়োজনে কখনো যথাযথ সম্মান দিতে পারিনি।সকালে যখন বাডি থেকে বের হতাম আমার আদরের ছোট মামুনি দুজন থাকতো ঘুমে আবার রাতে যখন বাড়ি ফিরতাম সেই সময়ও দেরিতে ফেরার কারনে ঘুমিয়ে যেত! আমার সহজ – সরল বৃদ্ধ বাবা রাতে যতক্ষন বাড়ি ফিরব না ততক্ষন এখনো তিনি ঘুমান না।রাতে যখন বাড়ি ফিরতাম রাত যত গভীর হউক না কেন বাবা বলে এক ডাকেই নিজে এসে দরজা খুলে দেন, সন্তান সুস্থ ভাবে বাড়ি ফেরার অধির প্রতিক্ষায় থাকেন – আজ ওরা যখন প্রশ্ন করে- বাবা তোমাদের রাজনীতিতে এত প্রতিহিংসা কেন? কোন উওর দিতে পারি না।কস্ট শুধু সেখানেই। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ – চেতনা কে ধারন করে, লালন করে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম।যত দিন দেহে প্রান থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ থেকে চুল পরিমান ও নড়াচড়া করব না।অনুরোধ-আবেদন শুধু এটুকুই – আামাদের অভিবাবকদের হাত দিয়ে আমার মত আর কোন মাঠের কর্মী যেন তার অধিকার না হারায়।যদি মনের আবেগের এই প্রকাশে কোন ভুল করে থাকি – আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। পরিশেষে আমার চকরিয়া পৌর সভার সকল নেতা-কর্মীর প্রতি এবং যারা আমার জন্য সহযোগীতা,সহমর্মীতা, সমর্থন জানিয়েছেন দেশে এবং বিদেশে অবস্থান রত সকল প্রবাসীসহ যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।আমার জন্য শুধু এই টুকু দোয়া করবেন যেন মানুষের ভালবাসার বন্ধনে বেঁচে থাকতে পারি………..। আমার মত আর কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের রাজপথে সদা সরব কর্মীর অপার সম্ভাবনাকে হত্যা করে আপনাদের হাত যেন কলংকিত না হয়।

জাহেদুল ইসলাম লিটু

সভাপতি চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগ।

ফোনঃ ০১৮১৯৩৩৩৪৩৭

১৮/০২/২০১৬

পাঠকের মতামত: