ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় আ.লীগের ১৫ প্রার্থী মাঠে, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি

Pic-1-Chakaria-11.02.16_1নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া:
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা হওয়ার সাথে সাথেই ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কে হচ্ছেন চতুর্থ পৌর পিতা, তা নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। কমতি নেই হিসাব-নিকাশের। পাশাপাশি থেমে নেই সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। নতুন আঙ্গিকে দলীয় প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে হওয়ায় ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। বিশেষ করে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা-জেলা ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং-তদবির করছে সরকার দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দল ক্ষমতায় থাকায় নৌকা প্রতিক পাওয়ার লড়াইতে সবচেয়ে বেশী সম্ভাব্য ১৫জন প্রার্থী মাঠে নেমেছে। নবীন-প্রবীণের এই প্রতিযোগীতায় কে নৌকায় চড়তে পারবেন তা নিয়েও আলোচনার কমতি নেই।

বিগত ১৯৯৪ সালে চকরিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর চকরিয়া পৌরসভা পরিচালিত হয়। এই পৌরসভায় প্রথম নির্বাচনে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আলহাজ্ব আনোয়ারুল হাকিম দুলাল।তিনি পর্যাপ্ত রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেনীর পৌরসভাকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করনে সহায়ক ভুমিকা পালন করেন। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের আলহাজ্ব জাফর আলম। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় মান উন্নয়নে অগ্রনী ভুমিকা নেন। এরপর তৃতীয় নির্বাচনে বিএনপি’র আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দার মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষনা মতে আগামী ২০ মার্চ চতুর্থ দফায় চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ২২ ফেব্রুয়ারী প্রার্থীদের মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ দিন ধার্য্য করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের চকরিয়া পৌরসভার ধাপে ধাপে প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হলেও নাগরিক সেবা বাড়েনি। এমনকি প্রতিষ্ঠা লগ্নের ৯টি ওয়ার্ডেই রয়ে গেছে এখনও। হয়নি ওয়ার্ড বিন্যাস। তবুও আইনী ধারাবাহিকতায় হচ্ছে নির্বাচন।

4e5b015c-d2b5-45fa-878b-b7ca114e73ccতফসিল ঘোষনার দু’মাস আগে থেকেই আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা মেয়র পদে লড়তে আগাম প্রচারণা শুরু করেন। দিন যতই গড়িয়েছে শাসক দলের পক্ষে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। গতকাল ১১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত আওয়ামীলীগের ১৫জন নেতা মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগীতায় সামিল হন। তারা হলেন- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ সাহাব উদ্দিন মাহামুদ, বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সেলিম উল্লাহ, জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল আবচার, শ্রমিকনেতা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী, সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুর রশিদ দুলাল, ষাটের দশকের ছাত্রনেতা সাংবাদিক এসএম সিরাজুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু,  পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন, সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী, এ্যাডভোকেট লুৎফুল কবির, কমিশনার সৈয়দ আলম,  অধ্যক্ষ আ.ক.ম গিয়াস উদ্দিন, শফিউল আলম শফি।

এদের মধ্যে পোষ্টার-ব্যানার টাঙ্গিয়ে আগাম প্রচারণা শুরু করেন ফজলুল করিম সাঈদী, জাহেদুল ইসলাম লিটু, ওয়ালিদ মিল্টন, আতিক উদ্দিন চৌধুরী, সৈয়দ আলম, জামাল উদ্দিন জয়নাল, আলহাজ্ব নুরুল আবচার, আলমগীর চৌধুরী, শফিউল আলম প্রকাশ দুবাই শফি।

আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে প্রকাশ্যে প্রচারণায় না থাকলেও ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে বিএনপি’র ৬ নেতা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং করছেন বলে দলীয় সুত্র জানায়। তাদের মধ্যে রয়েছে- বর্তমান মেয়র পৌর বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম হায়দার, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এম.মোবারক আলী, প্যানেল মেয়র শহীদুল ইসলাম ফোরকান, আবদুর রহিম, অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়েজী ও কুতুব উদ্দিন।

জামায়াতে ইসলাম দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারায় সতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী আরিফুল কবির। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ারুল এহেসান বুলু মিয়া। এছাড়াও ভোটারদের মাঝে আলোচনা চলছে বাসদের নুরুল আবচার, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা হাজী আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম এবং নাগরিক কমিটির ব্যানার নিয়ে প্রথম পৌর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ারুল হাকিম দুলাল ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের চকরিয়া শাখার সদস্য সচিব পৌর কাউন্সিলর লক্ষণ কান্তি দাশ নির্বাচন করতে পারেন।

তবে, দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় প্রচারণায় সামিল হওয়া সম্ভাব্য প্রার্থীর বিশাল বহর থাকবে না বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের অভিমত। শেষঅবধি তিন-চারজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদন্ধীতা করতে পারেন। কিন্তু সর্বত্রই আলোচনায় স্থান পাচ্ছে আওয়ামীলীগে সঠিক প্রার্থী দেয়ার পাশাপাশি কড়া নিয়ন্ত্রণে না রাখলে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ ক’জন প্রার্থী ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় আর্শীবাদ পেতে ঢাকায় অবস্থানের পর চকরিয়া্য় ফিরে আসছেন বলে  নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে ।

Share this:

পাঠকের মতামত: