ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ধানখেত থেকে উদ্ধার সেই গলাকাটা লাশটি উত্তোলনের আদেশ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

পেকুয়ায় উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত পরিচয় লাশটি উজানটিয়া ঠান্ডারপাড়া এলাকার মোক্তার আহমদের ছেলে মোহাম্মদ মানিকের দাবী করে গতকাল বুধবার চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহতের ভাই মোহাম্মদ হারুন। গত ২৬অক্টোবর সকালে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়্যাকাটা এলাকার ধানখেত থেকে অজ্ঞাত পরিচয় লাশটি উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ। একইদিন পেকুয়া থানার এসআই উত্তম কুমার সরকার বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা (নং-১৫/১৭ইং) মামলা রুজু করেন।

অপরদিকে গতকাল বুধবার নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়। এতে আসামি করা হয়েছে ৬জনকে। আসামীরা হলেন, উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ঠান্ডার পাড়া এলাকার শাহাবউদ্দিনের পুত্র শফি আলম, মোস্তাক আহমদের পুত্র, ইউপি সদস্য ও উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মো. ওসমান গণি, উপজেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়্যাঘোনা এলাকার মৃত আবদুল্লাহর পুত্র মো: জাফর, ঠান্ডার পাড়ার নুরুল আবছার, রবি আলম এবং শাহেনা বেগম।

মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে আদালতের বিচারক ইতোপুর্বে বেওয়ারিশ হিসাবে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় দাফনকৃত লাশটি উত্তোলন করার আদেশ দেন আদালত। একই সাথে লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করারও আদেশ দেন আদালত।

এদিকে উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো: ওসমান গণি এবং উপজেলা যুবলীগের সহসম্পাদক মো: জাফরকে মিথ্যাভাবে মামলায় আসামী করা হয়েছে দাবী তুলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের জের ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবসত তাদের মামলার আসামী করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী ও আওয়ামী নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

মামলায় আসামি হওয়া প্রসঙ্গে আক্ষেপ প্রকাশ করে ইউপি সদস্য ও উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি ওসমান গণি বলেন, বিগত নির্বাচনে উজানটিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটে আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হই। নির্বাচনে পরাজিত হয় এ মামলার বাদি মোঃ হারুনের ভাই সেকান্দর। আওয়ামী রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন জড়িত হয়ে এলাকার সাধারণ জনগণের সেবা করায় সাধারণ জনগণ ও আওয়ামী কর্মী সমর্থক আমাকে নির্বাচনে জিতিয়ে আনেন। এ বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি পরাজিত প্রার্থী সেকান্দর ও তার পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বারবাকিয়ায় পাওয়া গলাকাটা লাশটি তিনদিন পর তাদের ভাই মো: মানিকের দাবী করে প্রচারণা চালায়। একপর্যায়ে ঘটনার ৭দিন পর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যেই মামলায় আমাকে প্রতিহিংসাবসত আসামী করে হয়রানির চেষ্টা করছে। আমি চাই যে প্রকৃত দোষী সেই এই মামলার আসামী হউক এবং তার চরম শাস্তি দেওয়া হউক। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হউক।

মামলার অপর আসামি পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সহসম্পাদক মো: জাফর বলেন, রাজনীতির জীবনের শুরু থেকে আমি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আছি। বর্তমানে উপজেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বপালন করছি। মামলায় লাশ উদ্ধার দেখানো হয়েছে বারবাকিয়ায় আর ভিকটিম দেখানো হয়েছে উজানটিয়ার। আমার বাড়ি সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়্যাঘোনায়। মামলার এজাহারে কোথাও আমার কথা বলা হয়নি। এই ঘটনা আমি কোনভাবে জড়িত নই। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ট ও আমার কিছু প্রতিপক্ষ এ ঘটনায় আমাকে মিথ্যাভাবে আসামী করিয়েছে। আমি চাই যারাই তাকে হত্যা করেছে তাদের কঠোর শাস্তি হউক। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হউক।

পাঠকের মতামত: