ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়া ভূমি অফিসে ভূঁয়া খতিয়ান সৃজন বন্ধ হবে কবে ?

114-300x237উখিয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের উখিয়ার জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় স্থায়ী সমাধানের একমাত্র মাধ্যম উপজেলা ভূমি ও তহসিল অফিসে দালাল চক্রের অসহনীয় উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ফরিয়াদী জনসাধারন। পাশাপাশি এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ফলে দৈনন্দিন দাপ্তরীক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব চক্র বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে অফিস ম্যানেজ করার নামে সহজ সরল ফরিয়াদীর নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী স্বীকার করেছে। এছাড়া ভূমি অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্তা-ব্যক্তিদের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের হতদরিদ্র লোকজনের জায়গা-জমি মোটা অংকের টাকা দিয়ে অন্য জনের নামে ভূঁয়া খতিয়ান সৃজন করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে উপকূলীয় ইউনিয়ন জালিয়া পালং এ বিশেষ করে পর্যটন এলাকার জমি-জমার দাম আকাঁশ চুম্বি হওয়ার পাশাপাশি এ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে জমি-জমার দাম তুলনামূলক ভাবে বেড়ে গেছে। তাই জমি-জমা নিয়ে অসংখ্য প্রতারণার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। যেকারনে সাধারন জনগন তাদের একমাত্র সহায় সম্বল সহ বসতভিটা খানা নামজারী খতিয়ান করার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। উখিয়া সদর ও সোনার পাড়া ভূমি অফিস একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভূমি অফিসের বারাদ্দায় ও বাউন্ডারীর ভিতরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অপরদিকে উপকূলের একটি প্রভাবশালী চক্র উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে তাদের নামে খতিয়ান সৃজন করে নিচ্ছে।
সরেজমিন উখিয়া ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, কানুনগোর চতুর দিকে ডজন খানেক লোক দাড়িয়ে আছে। কানুনগো মিলন চাকমা তাদের সাথে কোন প্রকার সৌজন্য মূলক আচরণ করছে না। পার্শ্বে একজন বৃদ্ধা হতাশা অবস্থায় দাড়িয়ে আছে, জিজ্ঞাসাকরা হলে তিনি বলেন, তার বাড়ী জালিয়াপালং ইউনিয়নের ছেপটখালী তার নাম মোঃ জাফর আলম, পিতা-মৃত মেহের আলী। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ১৭৩৩খতিয়ান মূলে তার দাদীর নিকট থেকে ২০শতক জমি পেয়েছে। ওই জমিতে স্ত্রী-পুত্র, পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তার এই একমাত্র ভিটে-বাড়ীটি স্থানীয় প্রভাবশালী আইর মোহাম্মদের পুত্র শরীফ মোহাম্মদ নামজারী করে নিয়ে ফেলেছে। তিনি আরো বলেন, গত ২মাস পুর্বে তাকে একটি নোটিশ ইস্যু করে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে। ওই নোটিশের প্রেক্ষিতে তিনি একটি আপত্তিও দিয়েছিলেন কানুনগোকে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি বলে তিনি জানান। এর সাথে ভূমি অফিসের কে কে জড়িত থাকতে পারে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি প্রতি উত্তরে বলেন, ভূমি অফিসের অফিস সহকারী উত্তম চক্রবর্তী, শেখ আহমদ, কানুনগো মিলন চাকমা এবং এমএলএসএস কাশেমের নাম উঠে আসে। এ ধরনের আরো অহরহর অভিযোগ রয়েছে ভূমি অফিসের কর্তা-ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। এখন সচেতন মহলের দাবী উখিয়া ভূমি অফিসের এসব অনিয়ম,দুর্নীতি বন্ধে হবে কবে?
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছুটিতে থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভূমি অফিসের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়ম করে থাকলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বহিরাগত কোন ব্যক্তিকে ভূমি অফিসের বারাদ্দায় পাওয়া গেলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাঠকের মতামত: