ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় নয়টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বিলীন, ছড়ার পানিতে টইটং প্লাবিত

Sagar Pic-23নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::
পেকুয়ায় নয়টি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ড নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে। এতে উপজেলার উপকূলবর্তী দু’ইউনিয়ন সহ সদর ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। অন্তত কয়েকহাজার মানূষ পানি বন্দি হয়েছে। উজানটিয়া, রাজাখালী ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নে গত চারদিন দরে দূর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে ।

গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষনে উপজেলার সকল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল সহ বিপুল এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার প্রধান নদনদী সমূহের মধ্যে মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে।পাহাড় অববাহিকা ও তংসঃলগ্ন এলাকায় বারি বর্ষন হয়েছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি উজানের প্রাবাহিত হচ্ছে। বিষ্টির পানির প্রচন্ড স্রোত মাতামুহুরি নদীতে প্রাবাহিত হওয়ায় খরস্রোতা মাতামুহুরি নদীকে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে।মাতামুহুরির শাখা নদীগুলোতেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত চারদিন দরে চকরিয়া মগনামা সড়কের শাকুরপাড় অংশে প্রায় দু কিলোমিটার  পানিতে তলিয়ে গেছে।এতে করে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুতুবদিয়া সহ পেকুয়া উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।  প্রাধান সড়কে চলাচল করছে নৌকা। উপকূলের লোকজন যাতায়ত করছে বিকল্প পথ দিয়ে। গত চার দিনের ব্যবধানে কক্সবাজারের (পাউবো) মালিকানাধীন বেড়িবাঁধের নয়টি পয়েন্ট বিলীন হয়েছে।

জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন উপজেলার তিন উপকূলবর্তী ইউনিয়নসহ চার ইউনিয়নে ২৫/৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্বক ঝুকির মধ্যে আছে। গত ২৪ জুলাই দুপুরে উজানটিয়া ইউনিয়নের গোদারপাড়া পয়েন্টে দুটি বেড়িবাঁধের পৃথক অংশ বিলীন হয়েছে।  এতে ওই ইউনিয়নের বিপুল এলাকা প্লাবিত হয়। একইদিন বিকেলে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের চারটি পৃথক স্থানে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে। সাগরের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। ফলে এ ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ড়ের বিপুল গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পাউবোর ৬৫ /২ বি পোল্ডার এর বেড়িবাঁধের ঝূকিপুর্ণ অংশ ছনুয়া নদী ও কাটাফাঁড়ি নদীর স্রোতের আঘাতে বিলীন হয়ে যায়।গত ২৫ জুলাই দুপূর ও মাগরিবের সময় উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন ও পূর্ব সীমানায় বেড়িবাঁধের তিনটি পৃথক অংশ বিলীন হয়েছে। ছড়াপাড়ার পূর্বপ্রান্তে সালাহ উদ্দিন ব্রীজের দক্ষিনে বেড়িবাঁধের প্রায় ৫০ ফুট বিলীন হয়।বাগুজারা রাবারড্যাম ও ছিরাদিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে।

গত দূ দিন সদর ইউনিয়নের বিপুল এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। মাতামুহুরি নদীর পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে এ ইউনিয়নের পূর্ব মেহেরনামার সৈকতপাড়া,বলীরপাড়া,মোরারপাড়া,সরকারিঘানা,লীজপাড়া,হরিণাফাঁড়ি,দক্ষিন মেহেরনামার বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি উটায় এসব এলাকার শতশত মানূষ উচূ স্হানে আশ্রয় নিয়েছে।গতকাল বুধবার( ২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পযন্ত বৃষ্টি হয়নি।

পেকুয়ার আকাশে মেঘমালা বয়ে গেলেও আকাশে সূর্য উদিত হয়েছে। একদিনে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির উচ্চতা অনেক স্থানে হ্রাস পেয়েছে। উপজেলার পাহাড়ী তিনটি ইউনিয়নে ব্যপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ী প্রবাহমান ছড়ার বাঁধ বিলীন হওয়ায় উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বহু এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বটতলী ছড়ার একাধীক স্থানে প্রতিরক্ষাবাঁধ বিধ্বস্থ হয়েছে। সুনাইছড়ি ছড়া টইটং এর জাদুখালী ছাড়া ও শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া ছড়ায় পাহাড়ী ঢলের প্রচন্ড স্রোত প্রাবাহিত হচ্ছে। টইটং উচ্চ বিদ্যালয় সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্টান পানিতে নিমর্জ্জিত রয়েছে শ্রেণি কক্ষ ও স্কুল মাঠে কোমর পযন্ত পানি থাকায় মঙ্গল ও বুধবার দু’দিন টইটং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এ প্রতিষ্টানের শিক্ষক সেলিমুল আহছান চৌং জানায় আমরা ক্লাস বন্ধ করে দিয়েছি। হাই স্কুল  ও প্রাথমিক বিদ্যালয় একই এলাকায় । দুটি প্রতিষ্টান বন্ধ করা হয়েছে। জুনের খেলা চলছে। আমাদের ছেলেরা প্রাকটিস করছে বটতলী মাঠে গিয়ে।

সদর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মাহবুবুল করিম জানায় আমরা আবারো দূর্ভোগে পড়েছি। বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ায় ঢুকছে পানি এলাকায়। রাজাখালীর চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর জানায় আমার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। মাতবর পাড়া,নতুনঘোনা ও বাঁ- খালী সহ চারটি স্থানে বাঁধ বিলীন হয়েছে।

পাঠকের মতামত: