ঢাকা,শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে ব্যাপক চাঁদাবাজীর অভিযোগ : পরিবহন মালিক শ্রমিকদের মাঝে চরম অসন্তোষ

ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥

উখিয়ার ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে ব্যাপক চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে। সিএনজি, টমটম ও মাহিন্দ্র গাড়ি আটকের নামে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই একরাম হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এমন কি টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে ড্রাইভারদেরকে মিথ্যা মামলার হুমকি সহ নানা হয়রানী ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় ড্রাইভারদের। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি সহ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে নেতৃবৃন্দরা জানান।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ইনানী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই একরাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিনা কারণে প্রতিদিন যাত্রী নিয়ে চলাচল অবস্থায় রাস্তা থেকে সিএনজি, টমটম ও মাহিন্দ্র আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে প্রতি গাড়ী থেকে হাজার হাজার টাকা আদায় করে আবার ছেড়ে দেয়। কেউ টাকা দিতে অনিহা করলে ড্রাইভারদেরকে মিথ্যা মামলার হুমকি সহ নির্যাতন চালায়। গত ৩দিনে অর্ধশতাধিক সিএনজি, টমটম ও মাহিন্দ্র গাড়ী আটকের নামে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হয়। বর্তমানে ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে পরিবহন সেক্টরে গণ চাঁদাবাজী চলছে। এ নিয়ে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) আবদুল মালেক মিয়া বলেন, ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্তৃক এ ধরনের কেউ হয়রানীর শিকার ও জোরপূর্বক টাকা আদায়ের ঘটনায় সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোটবাজার সিএনজি মালিক ও চালক সমবায় সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন খাঁন ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম অভিযোগ করে বলেন, ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে অতীতে সিএনজি, টমটম ও মাহিন্দ্র গাড়ী আটকের টাকা আদায় করা হতো না। এসআই একরাম নামে নতুন ইনচার্জ ফাঁড়িতে যোগদানের পর হতে গণহারে চাঁদাবাজী করার কারণে মালিক ও চালক অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।

উখিয়া সিএনজি, মাহিন্দ্র ও টমটম মালিক ও চালক সমবায় সমিতির সভাপতি মোক্তার আহমদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আমিন শাকিল জানান, এসব গাড়ীতে বৈধ কাগজ পত্র থাকার পরেও পুলিশ অন্যায় ভাবে গাড়ী আটকের নামে হাজার হাজার টাকা আদায় করছে। মরিচ্যা-খুনিয়াপালং সিএনজি ও টমটম সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হাশেম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ড্রাইভারদের উপর পুলিশের সীমাহীন নির্যাতন ও রাস্তা থেকে গাড়ী ধরে নেওয়ার কারণে ড্রাইভার ও মালিকগণ জিম্মি হয়ে পড়েছে। টেকনাফের শাপলাপুর সমিতির সভাপতি নবী হোছন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ একরামের ব্যাপক চাঁদাবাজী ও রাস্তা থেকে গাড়ী আটক করায় বর্তমানে ইনানী কোটবাজার ও কক্সবাজার মেরিণ ড্রাইভ সড়ক দিয়ে সিএনজি, টমটম ও মাহিন্দ্র যাতায়ত করতে পারছে না।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা হুশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন, ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে অন্যায় ভাবে গাড়ী আটকের নামে অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধ করা না হলে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানার জন্য ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই একরামের ব্যবহৃত মোবাইল ০১৭১১৩৭৭৫৫৩ নম্বরে একাধিক বার চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: