ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লামায় চতুর্থ জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী ক্যাম্প পালিত

xxxxccমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

“আলোর পথে আরো এগিয়ে” স্লোগান নিয়ে বান্দরবানের লামায় চতুর্থ জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সপ্তাহ পালিত হয়েছে। ২৫-২৭ জানুয়ারী ৪দিন ব্যাপী লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সপ্তাহ আয়োজন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ স্কাউটস লামা।

২৭ জানুয়ারী সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, লামা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ স্কাউটস লামা উপজেলা কমিশনার এ.এম ইমতিয়াজ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহমুদ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ স্কাউটস বান্দরবান জেলা কমিশনার মোঃ বেলাল হোসেন, জেলা সম্পাদক সম্পদ বড়–য়া, বাংলাদেশ স্কাউটস লামা উপজেলা কমিশনার মোঃ ইয়াহিয়া বাবুল, লামা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান সহ প্রমূখ।

বক্তরা বলেন, বাংলাদেশ স্কাউটস বাংলাদেশের জাতীয় স্কাউটিং সংস্থা। স্কাউটিং হল একটি আন্দোলন, যার কাজ আনন্দের মধ্য দিয়ে শিক্ষা দান। এর মাধ্যমে একজন ছেলে বা মেয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। স্কাউটিং এর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অপার আনন্দ। যার স্বাদ নিতে হলে যোগদান করতে হবে এই আন্দোলনে। ১৯০৭ সালে রবার্ট স্টিফেন্সন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অফ গিলওয়েল সংক্ষেপে বি.পি এই আন্দোলনের শুরু করেন।

১৯৭২ সালের ৮-৯ এপ্রিল সারাদেশের স্কাউট নেতৃবৃন্দ ঢাকায় এক সভায় মিলিত হয়ে গঠন করেন বাংলাদেশ স্কাউট সমিতি। ঐ বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ১১১ নং অধ্যাদেশ বলে (১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, সোমবার) উক্ত সমিতি সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। এর আগে প্রবীণ স্কাউটার সলিমুল্লাহ ফাহমীর নেতৃত্বে ২২মে ১৯৪৮ সালে ঢাকায় গঠিত হয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল স্কাউট এসোসিয়েশন। বিশ্ব স্কাউট সংস্থা (ডঙঝগ) ১৯৭৪ সালের ১ জুন বাংলাদেশ স্কাউট সমিতিকে ১০৫ তম সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তবে ১৯৭৮ সালের ১৮ জুন পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল সভায় সমিতির নাম বদলে রাখা হল বাংলাদেশ স্কাউটস। মেয়েদের সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে জাতীয় কাউন্সিল ১৯৯৪ সালের ২৪ মার্চ একাদশ সভায় বিশ্ব স্কাউট সংস্থার অনুমোদনক্রমে গার্ল-ইন-স্কাউটিং চালু করে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ স্কাউটস কার্যক্রম শুরু করেছিলো মাত্র ৫৬,৩২৫ জন সদস্য নিয়ে। ১৯৭৮ সালে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এ কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে সকল স্তরের জন্য ট্রেনিং কোর্সসমূহ পরিচালনার মাধ্যমে ১৯৮৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৫ লাখে উন্নীত হয়। এরপর বাংলাদেশ স্কাউটস ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে গ্রহণ করে স্ট্রাটেজিক প্ল্যান- ২০১৩। এ প্ল্যানে স্কাউটদের শুধু সংখ্যা বৃদ্ধিই নয় গুণগত মান অর্জনেরও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। ৬টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভলেন্টিয়ার লিডার ও স্কাউটারবৃন্দ সমন্বিতভাবে ২০১৩ সালের মধ্যে ১৫ লক্ষ স্কাউট তৈরির চেষ্টা করছেন। এর ফলশ্রুতিতে ২০১৩ সালের মধ্যে স্কাউটের সংখ্যা ১২,৮৫,৬০৭ এ পৌঁছেছে যা বাংলাদেশকে বিশ্ব স্কাউট সংস্থায় ৫ম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ স্কাউটস অগ্রাধিকার কার্যক্রমগুলি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯টি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি গঠন করেছে যেগুলির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ স্কাউটারগণ।

বিভিন্ন স্তরবিশিষ্ট ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে স্কাউটদেরকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন সৎ, চরিত্রবান, কর্মোদ্যোগী সেবাপরায়ণ, সর্বোপরি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্কাউটস কাজ করে থাকে। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও মূল্যবোধ অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতি গঠনে স্কাউট আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অপরিহার্য।

পাঠকের মতামত: