ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লামায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান ॥ পাম্প মেশিন সহ ৭০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ

Lama Photo 06.02.17 (2)মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

বান্দরবানের লামায় অনুমোদিত কোনো বালুমহাল নেই। নদী থেকে বালু উত্তোলনে নেই প্রসাশনের অনুমতিও। তারপরেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাসের পর মাস উপজেলার একাধিক স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙ্গনের কবলে পড়ে অনেকেই হচ্ছেন ভূমিহীন।

অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে নদী ও খাল তীরবর্তী ঘর-বাড়ী এবং আবাদী জমির মালিকরা। বালু উত্তোলনের প্রত্যেকটি পয়েন্টই নিয়ন্ত্রন করছে স্থানীয় সরকারদলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এ নিয়ে প্রসাশনের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভূমি বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারীর পাশাপাশি যথাযথ ভূমিকা রাখা অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। উপজেলার সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া বাজার, হাসনাভিটা, ডলু খালের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে, আজিজনগর ইউনিয়নের আমতলী মুসলিম পাড়া, আজিজনগর বাজার, ছিয়ত তলী বাজার, ফাইতং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া, ফাইতং বাজারের আশপাশ এবং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, হারগাজা, হাইদারনাসী, কুমারী, বড়ছনখোলা, ইয়াংছা, বনফুর, কাঁঠালছড়া বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মানুযায়ী নদীর তীরের ২ হাজার ৫০০ ফুটের মাঝ থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেনা কেউ। নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সময়-অসময়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শতশত একর আবাদী জমিসহ বসতভিটা। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা ভাঙ্গন আতঙ্কে থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।

৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খিন ওয়ান নু অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে আজিজনগর পূর্বচাম্বি আমতলী মুসলিম পাড়া এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। বালি ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ মুলে অবৈধ বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ১টি পাম্প মেশিন, ২৪টি পাইপ ও ৪ স্তুপে মোট ৭০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন। অভিযানকালে কেউ বালুর ড্রেজার মেশিনের মালিকানা দাবী না করায় জব্দকৃত মালামাল স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জিম্মায় দেয়া হয়। পরে তা প্রকাশ্য নিলাম দেয়া হবে বলে এই প্রতিবেধককে জানান। সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, এই অবৈধ বালু উত্তোলন পাম্প, ড্রেজার মেশিন ও জব্দকৃত বালুর মালিক পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়া উপজেলার ফকিরাহাট এলাকার জনৈক শহিদুল ইসলাম, জিসান ও মোঃ নুরু গং রা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খিন ওয়ান নু জানান, বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অতি তাড়াতাড়ি মোবাইল কোর্ট করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: