ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বর্ণের মুকুট পড়া গ্রামবাংলার কাঠঠোকরা অতি পরিচিত পাখি

ramuগোলাম মওলা রামু  :::

গ্রামবাংলা অতি পরিচিত চেনা কাঠঠোকরা পাখি। গ্রামবাংলার কাঠঠোকরা বন, বাগান ও লোকালয়ে সর্বত্র বিচরণ করে, একাকী, জোড়ায় বা পারিবারিক দলে দেখা যায়। গাছের কান্ড ও ডালে হাতুড়ির মত আঘাত করে অথবা মাটিতে ঝরাপাতা উল্টে এরা খাবার সংগ্রহ করে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে পিঁপড়া, শুয়োপোকা, বিছা, মাকড়শা, অন্যান্য পোকামাকড় এবং ফুল ও ফলের রস। শক্ত পা ও অনমনীয় লেজে ভর দিয়ে ছোট ছোট লাফ মেরে এরা গাছের কান্ড বেয়ে উপরে ওঠে, একটি গাছ থেকে অন্য ওড়ে যাওয়ার সময় উচ্চ স্বরে ডাকে- কিয়ি কিয়ি-কিয়ি-কিয়ি-কিয়িকিয়িয়িইরররর-র-র-র। ফেব্রুয়াারি- জুলাই মাসে প্রজনন ঋতুতে গাছের কান্ডে গর্ত খুঁড়ে বাসা বেঁধে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, ৩টির বেশি ডিম পাড়েনা কাঠটোকরা। পুরুষ ও মেয়েপাখির উভয়ই বাসার সব কাজ করে। বাসায় হামলা হলে ছানারা সাপের মত হিসহিস শব্দ করে।

গ্রামবাংলা কাঠঠোকরা দেখতে খুবই সুন্দর সুলভ আবাসিক পাখি,আমরা চলার পথে সব বিভাগের সব বনে ও লোকালয়ে এ পাখি গুলো দেখতে পায়। বাংলা কাঠঠোকরা বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।

বাংলা কাঠঠোকরার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বাংলার বলীয়ান শক্তিমান। পাখিটি বাংলাদেশে শুধু কাঠঠোকরা নামে পরিচিত।

পাখিটি লম্বাতে ২৯ সেমি, ওজন ১০০ প্রাম মত হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ সোনালী-হলুদ, দেহতলে কালো আইশের দাগ, ওড়ার পালক ও লেজ কালো, থুতনিতে কালো ডোরা, সাদা ঘাড়ের পাশে কালো দাগ, বুকে মোটা কালো আইশের দাগ, চোখে কালো ডোরা, ডানার গোঁড়ার ও মধ্য-পালক ঢাকনিতে সাদা বা ফিকে ফুটকি এবং পিঠ ও ডানার অবশেষ সোনালি। সবুজ গোলকসহ এর ঠোঁট লালচে-বাদামি, পা ও পায়ের পাতা ধূসর সবুজ এবং ঠোঁট শিঙ-রঙ এবং কালোর মিশ্রণ। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারায় পার্থক্য তাদের চাঁদি এবং ঝুটির রঙে, ছেলেপাখির চাঁদি ও ঝুটি উজ্জল লাল এবং মেয়েপাখির সাদা বিন্দুসহ চাঁদির সামনের অংশ কালো ও পিছনের ঝুটি লাল। তরুণ পাখির অনুজ্জল দেহ ও চাঁদির সামনের ভাগের সাদা বিন্দু ছাড়া দেখতে মেয়েপাখির মত। ৪টি উপপ্রজাতির কাঠঠোকরা বাংলাদেশে আছে।আমাদের গ্রামে সাধারণত দু-ধরণের কাঠঠোকরা পাখি বেশি দেখা যায় ।পুরুষটিকে দেখতে মুঘল আমলের রাজাদের মত মাথার উপরে স্বর্ণের মুকুট পড়া এ কাকটোকরা পাখি।আর মেয়ে পাখিটিকে দেখতে রাজ্যের প্রধান সেনাপতির মত।

পাঠকের মতামত: