ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়ায় ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে ২০ সিন্ডিকেট সক্রিয়

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

সীমান্তে নিয়োজিত বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে গডফাদারদের মাধ্যমে আসছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। কোনমতে রোধ করা যাচ্ছেনা এই ইয়াবা বাণিজ্য। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দিয়ে ও বঙ্গোসাগরের সাগর পথে ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে এখানকার সচেতন মহল মনে করেন। পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের তৈরি ইয়াবার বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শহরের অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বানিজ্যিক এলাকা সহ পাড়া মহল্লায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই এদেশে ঢুকছে লাখ লাখ পিচ ইয়াবার চালান। প্রায় সময় ইয়াবা আটকের ঘটনা ঘটলেও ইয়াবার চালান আসা বন্ধ হয়নি। বরং প্রায় প্রতিদিনই এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সদস্য। উখিয়া, টেকনাফ উপজেলার আনাচে-কানাচে ইয়াবা পাচারে নারী পুরুষ, রোহিঙ্গা যুবক, যুবতী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা সক্রিয় কর্মীরাও জড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উখিয়া থানা ও মরিচ্যা যৌথ চেকপোষ্টের বিজিবি জোয়ানরা পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার ২শ পিস ইয়াবা সহ ৩ জন পাচারকারীকে আটক করেছে। এদেরকে সংশ্লিষ্ট মামলা রুজু পূর্বক কক্সবাজার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার অন্ততপক্ষে ২০ টি ইয়াবা সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে মরনঘাতী এ বানিজ্যে। প্রায় প্রতিদিনই আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা আটকের ঘটনা ঘটছে। এসব আটকের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই নির্দ্দিষ্ট গন্তব্যে ইয়াবা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযানে ইয়াবা আটকের সময় মাঝেমধ্যে পাচারকারী আটক হলেও এর সাথে জড়িত রাঘব বোয়াল বা গড়ফাদাররা আটক না হওয়ায় ইয়াবা পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ। উখিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, ইয়াবার কারণে এলাকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সুত্রে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার দরগাবিল, ডিগলিয়া, উলুবনিয়া, ভালুকিয়া, আমতলী, ডেইলপাড়া, বালুখালী, ঘুমধুম, থাইনখালী, রহমতের বিল ও আঞ্জুমান সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ পিচ ইয়াবার চালান অনায়াসে পাচার হয়ে এসে উখিয়ার নির্দ্দিষ্ট কয়েকটি গুদামে জমা রাখা হয়। পরে সুযোগ বুঝে রোহিঙ্গা যুবক যুবতীসহ সিন্ডিকেটের সদস্যরা এসব ইয়াবা সড়ক পথে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হাতে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও পর্যটকবেশী কতিপয় পাচারকারী বিলাস বহুল গাড়ীতে করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অভিনব কায়দায় ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আইন প্রযোগকারী সংস্থার লোকজন অনেক ক্ষেত্রে পর্যটক মনে করে এসব গাড়ীগুলো তল্লাসীর বাইরে রাখে। শুধুমাত্র উখিয়া উপজেলায় ২০ টির অধিক ইয়াবা সিন্ডিকেট স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তাদের ব্যবসা ওপেন সিক্রেটভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের মধ্যে উপজেলার হরিনমারার ফরিদ সিন্ডিকেট, জাদিমুরার হেলাল সিন্ডিকেট, দুছড়ির আতা উল্লা ও মীর আহামদ সিন্ডিকেট, থাইংখালী এলাকার মনজুর সিন্ডিকেট, ঘুমধুমের ইমাম হোসেন, সাহাব উদ্দিন সিন্ডিকেট, বালুখালী পানবাজারের বকতার ,জাহাঙ্গীর, এনাম সিন্ডিকেট, হাজীরপাড়ার মাহমুদুল হক সিন্ডিকেট, হিজলিয়ার বাবুল সিন্ডিকেট, কুতুপালং এলাকার মিজান ও আলী আকবর অন্যতম। উল্লেখিত প্রতিটি সিন্ডিকেটে ৫০ জনের মত যুবক,যুবতী রয়েছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই আবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সত্রিুয় কর্মী হিসেবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ইয়াবা বানিজ্যর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না বলে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ। এদিকে বিগত কয়েক বছর ধরে ইয়াবা সহ মানব পাচার করে উখিয়ার অনেকেই এখন কোটিপতির খাতায় নাম লিখিয়েছে। এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার ড. এ,কে এম ইকবাল হোসেনের দিক নির্দেশনায় উখিয়া থেকে মাদক নির্মুলে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মানক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা সহ আটক করা হয়েছে।এ অভিযান চলমান থাকবে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন,উখিয়াকে মাদকমুক্ত করতে তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, মাদকের ব্যাপারে প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

 ##############

উখিয়ায় ১০ হাজার ইয়াবাসহ আটক ২

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা যৌথ চেকপোষ্টের বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি মোটর সাইকেল ও একটি মোবাইল সেট জব্দ করেন। এসময় জড়িত থাকার অভিযোগে ২জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজারের রামু থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত ইয়াবাসহ অন্যান্য জিনিসের মূল্য ৩১ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা বলে বিজিবি জানিয়েছেন। মরিচ্যা যৌথ চেকপোষ্টের সুবেদার সাদেক আলী বলেন, মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার মুখী একটি মোটর সাইকেল তল্লাসী চালিয়ে ইয়াবাসহ ২জনকে আটক করি। আটককৃতরা হল চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার বাবুল ঘোশের ছেলে রনি (২৫) ও টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মধ্যম হ্নীলা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মাঈন উদ্দিন। এদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

#################

ইনানী পুলিশের অভিযানে মানবপাচারকারী আটক

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী পুলিশ ফাঁড়ীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত এক মানবপাচার কারীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করেছে বলে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক আরিফ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে জলিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি এলকায় অভিযান চালিয়ে মৃত রশিদ আহাম্মদের ছেলে ইউসুফ আলী (৩২)। তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় একটি মানবপাচারের মামলা রয়েছে।

 ##################

উখিয়ায় অস্ত্র, ইয়াবা ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী সহ আটক ১৩

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::::

কক্সবাজারের উখিয়া থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় তৈরী অস্ত্র, ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও সাজা প্রাপ্ত আসামীসহ ১৩জনকে আটক করতে স্বক্ষম হয়েছে। কক্সবাজার জেলার নবাগত জেলা পুলিশ কর্মকর্তা ড. একে.এম ইকবালের নির্দেশনায় উখিয়া থানা ওসি আবুল খায়েরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করেন। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে বিশেষ অভিযান চালিয়ে এসব আসামীদের আটক করা হয়। আটকৃত আসমীরা হল জালিয়া পালং ইউনিয়নের মধ্যম নিদানিয়া গ্রামের মৃত মকবুল আহামদের ছেলে নুরুল হক ২ মাসের সাজা, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের মনি মার্কেট সংলগ্ন এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুল কবির (২০), ২ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামী উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তেলখোলা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে দিলদার আলম, জালিয়া পালং ইউনিয়নের সোনাই ছড়ি এলাকার আবু সৈয়দের ছেলে মাহমুদুল করিম মাহাদু, সোনার পাড়া এলাকার বদিউল আলমের ছেলে মৌলভী আব্দুল্লাহ, সোনাইছড়ি এলাকার আলী আহাম্মদের ছেলে জাফর আলম, রুহুল আমিন ও রতœা পালং ইউনিয়নের মধ্যম রতœা এলাকার অরবিন্দ বড়–য়ার ছেলে টিপু বড়–য়া (৩২) এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড। উখিয়া থানা সেকেন্ড অফিসার পার্থ মজুমদার বলেন, পুলিশ প্রতিনিয়ত অভিযান করছে। উখিয়া থানা ওসি আবুল খায়ের বলেন, উখিয়াকে মাদক মুক্ত রাখতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পাঠকের মতামত: