ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারের বাঁধ পুনর্নির্মাণে ১৫৭ কোটি টাকার কাজ পাচ্ছে নৌবাহিনী

naveনিউজ ডেস্ক ::
উপকূলীয় এলাকা কক্সবাজারের আট কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে। নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৫৭ কোটি টাকা। সরাসারি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকাকে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও উচ্চ জোয়ারের কবল থেকে রক্ষার জন্য ১৯৬১-১৯৬৬ পর্যন্ত সময়ে উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার জেলায় ২১টি পোল্ডারের অধীনে ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ১৯৯১ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডারগুলো শুধু একবার মেরামত বা পুনর্বাসন করা হয়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও অবকাঠামোগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো পুনর্বাসন করা হয়নি। এর ফলে সমুদ্রের উচ্চ জোয়ার এবং বৃষ্টির কারণে বাঁধগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়ে যায়। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পোল্ডারগুলোর মেরামত বা পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫ জুন ‘কক্সবাজার জেলার ক্ষতিগ্রস্ত’ পোল্ডারগুলোর পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় সাতটি পোল্ডারের পুনর্বাসনের কাজ বাস্তবায়নের অর্থ সংস্থান রয়েছে। এর মধ্যে মহেশখালী উপজেলার ধলঘাট ও মাতারবাড়ি নিয়ে গঠিত পোল্ডার নং-৭০ এবং দ্বীপাঞ্চল কুতুবদিয়া উপজেলার পোল্ডার নং-৭১ বেশ দুর্গম এলাকা। এ দু’টি পোল্ডারের আওতায় ১৩ দশমিক ৫০৮ কিলোমিটার অংশে বাঁধ পুনর্নির্মাণ বা পুনরাকৃতিকরণ এবং ৬ দশমিক ১৪৬ কিলোমিটার অংশে প্রতিরক্ষামূলক কাজসহ বাঁধ পুনর্নির্মাণ/ পুনরাকৃতিকরণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান (ওটিএম) পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের উল্লেখ ছিল।
এ সংক্রান্ত এক প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্প দু’টি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এবং ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপাঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় দ্রুততম সময়ে ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত জনদুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে একক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্পাদনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের মাধ্যমে ডিপিএম পদ্ধতিতে সম্পাদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) অনুমোদনের জন্য দাখিল করা হয়। এই কমিটির গত বছর ৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে তার অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০টি প্যাকেজের কাজকে একটি প্যাকেজে রূপান্তর করা হয় এবং অনুমোদিত নকশা ও অনুমোদিত হালনাগাদ শিডিউল অব রেটস অনুযায়ী এর প্রাক্কলিত মূল্য দাঁড়ায় ১৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
সূত্র জানায়, সিসিইএ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড কাজগুলো সরাসরি ক্রয় (ডিপিএম) পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সংস্থাটি কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রের উদ্বৃত্ত মোট দর ১৭২ কোটি ৬৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত এ মূল্য প্রাক্কলিত মূল্য অপেক্ষা ১৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। পরে দরপত্র নেগোসিয়েশন কমিটি উদ্বৃত্ত দর নির্ধারণ করে বিল অব কোয়ালিটি পুনরায় দাখিল করার অনুরোধ করে। কমিটির অনুরোধে সংস্থাটি ১৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে। আগামী বৈঠকে এই প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। সুত্র: নয়া দি গ ন্ত

পাঠকের মতামত: