ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

উখিয়া-টেকনাফ সড়কের চার লেইন উন্নীতকরণ প্রকল্প লাল ফিতায় বন্দি

%e0%a7%81%e0%a7%81%e0%a7%81ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

উখিয়া-টেকনাফ সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার জরিপ ২ বছর আগে সম্পন্ন হলেও সরকারের হাতে নেওয়া এ প্রকল্প থমকে আছে। সরকারের ধীর নীতির কারণে আলোর মূখ দেখছেনা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের জনসাধারণ। উখিয়ার পাশ্ববর্তী সীমান্তের মৈত্রী সড়কের কাজ পুরোদমে শুরু হওয়ায় সীমান্ত এলাকার জনসাধারণের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা দেখা দিলেও এখানকার সড়কের ৪ লেনের প্রকল্পের কাজ লাল ফিতায় আটকা পড়ায় অনেককে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে।

স্থানীয়দের মতে, সড়কটি সম্প্রসারিত হওয়া ৪ লেন করা হলে এশিয়া মহাদেশের অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক চেহারা পাল্টে যেতে পারে। ব্যবসা বানিজ্যের দ্বার উম্মোচন হতে পারে। সাধারণ মানুষের আর্থিক সামাজিক অগ্রগতির পরিবর্তন হতে পারে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমার ও চীন বা বিআইএমসি এর মধ্যে আঞ্চলিক কানেকটিভিটি গড়ে তোলার কাজ চলছে পুরোদমে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা এ কানেকটিভিটি গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার নিজ উদ্যোগে তাদের অংশে প্রাথমিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কটি ৪ লেনে রুপান্তরিত হলে শুধু কক্সবাজার নয় পুরোদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রবৃদ্ধি প্রসারিত হওয়ার পাশা-পাশি জনগণের আর্থিক সামাজিক উন্নয়ন সহ পর্যটন শিল্পের সমৃদ্ধ ও অবকাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন বয়ে আনবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবকাঠামো সম্প্রসারণের জরিপ কাজ প্রায় চুড়ান্ত করেছে। এর অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ টি ব্রীজ, কালভাট পূনঃনির্মাণ ও সড়ক উন্নয়নের কাজ ইতিপূর্বে সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ সময় এডিবির নিযুক্ত কনসালটেন্সি ফার্মের প্রকৌশলীগণ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, কক্সবাজার লিংকরোড থেকে উখিয়া হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশী পরামর্শকের মাধ্যমে জরিপ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এডিবির অর্থায়নে সুইডেন্ট ভিত্তিক ১ টি এবং বাংলাদেশী ১টি কনসালটেন্সি ফার্ম যৌথভাবে সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার কারিগরি সমীক্ষা জরিপ চালাচ্ছে। সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়েরর অধীনে সাব রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপ্ররটরী ফ্যাসিলিটি প্যাকেজ-২ এর প্রকল্পের আওতায় এটি আঞ্চলিক কানেকটিভিটির মাধ্যমে মিয়ানমারের সাথে সংযুক্ত হবে। এছাড়াও সড়কের দুই পাশে ক্ষতিগ্রস্থ জায়গার মালিক, দোকান মালিকদেরকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও আশ্বাস দেওয়া হয় উক্ত সভায়।

সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের নিযুক্ত হাইফাব ইন্টারন্যাশনাল এবি-সুইডেন্ট মুল পরামর্শক এবং এসোসিয়েটস ইঞ্জিনিযারিং এন্ড কনসাল লিঃ উপ-পরামর্শক হিসেবে সড়ক উন্নয়নের কারিগরি সমীক্ষা জরিপ কাজ প্রায় ২ বছর পূর্বে শেষ হয়েছে। জরিপদলের লোকজনের তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজার লিংকরোড থেকে টেকনাফ জিরো মাইলেজ পর্যন্ত বিদ্ধমান সড়কের উভয় দিক থেকে ৭০ ফুট ব্যাসার্ধ অনুযায়ী সমীক্ষা জরিপ চালানো হয়েছে। এতে লিংরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮৯ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে সিংহভাগ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও ধর্মী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সমীক্ষার মধ্যে পড়েছে। অধিকাংশ সরকারী অধিগ্রহণকৃত, খাস ও বনভুমির উপর এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। সমীক্ষা দলের দেওয়া তথ্য মতে জানা গেছে, উক্ত প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, কক্সবাজার লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে সড়ক, কালভাট, ব্রীজ, পুর্নঃনির্মাণ ও বাঁক গুলো সোজা ও প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

 #####################

শেষ মুহুর্তে প্রচারণায় জমে উঠেছে উখিয়া জীপ মাইক্রোবাস চালক সমিতির নির্বাচন

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

উখিয়া উপজেলা জীপ মাইক্রো বাস চালক সমবায় সমিতির নির্বাচনী প্রচারণা যেকোন জাতীয় নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বর শুক্রবার উখিয়া সরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ শ্রমিক সংগঠনের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনকে সামনে রেখে পোষ্টার, ব্যানার লিপলেট, মাইকিং, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ প্রভৃতি নির্বাচনী প্রচারণা উখিয়ায় একটি উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হচেছ। নির্বাচনে সভাপতি, সাধারন সম্পাদক সহ ৯টি পদে ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছে এবং ৫৯১জন ভোটার নেতৃত্ব নির্বাচন করবে বলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

উখিয়া সমবায় অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমবায় অধিদপ্তরের রেজিষ্ট্রেশন ভুক্ত উখিয়া উপজেলা জীপ মাইক্রোবাস চালক সমবায় সমিতি লিঃ এর যাবতীয় অডিট নিষ্পত্তি শেষ বর্তমান পরিচালনা কমিটির মেয়াদান্তে নতুন কমিটি নির্বাচনের তফশিল অনুযায়ী প্রক্রিয়া চলছে। নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ও আওয়ামীলীগের উপজেলা শ্রম বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল হক রিয়াজ বলেন, তিনি একজন সাধারন শ্রমিক, তার পিতাও শ্রমিক ছিলেন, তার জীবনটা শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ইতিপূর্বে তিনি উক্ত সংগঠনে দুইবার সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছে। এসময় কোন শ্রমিকের অধিকার নিয়ে অবহেলা করেনি বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন। আগামী ২৫ নভেম্বর নির্বাচনে শ্রমিকরা আন্তরিক ভাবে তাকে ছাতা মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে তিনি আশাবাদী। অপর সভাপতি প্রার্থী ও জাতীয় পাটি উখিয়া শাখার সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী সদস্য নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো বলেন, তিনি দুই বার সভাপতি পদে দায়িত্বপালন করেছেন। এসময় কোন শ্রমিকের উপকার ব্যতিত ক্ষতি করেনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শ্রমিকরা তাকে চেয়ার প্রতিকে ভোট দিয়ে আবারো সভাপতি নির্বাচিত করবেন। সাধারন শ্রমিকরা অবশ্য শ্রমিক সংগঠনে শ্রমিকদেরকে নেতৃত্বে আনা প্রয়োজন বলে জানায়। সহ-সভাপতি নির্বাচনে লড়ছেন নুরুল কবির ভুট্টো, ছৈয়দ করিম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক, শাহ আলম, সহ-সম্পাদক পদে গিয়াস, নুর আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৪ জন যথাক্রমে জামাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, আলা উদ্দিন, ছৈয়দ ড্রাইভার, অর্থ সম্পাদক পদে ২ জন নুর মোহাম্মদ বাদশা, লাইন ম্যান সোন মিয়া, সদস্য পদে ৫ জন নির্বাচন করছেন ফারুক হোসেন বাবু, আবুল কালাম, ইউছুপ জালাল, হেলাল উদ্দিন ও মোহাম্মদ হোছন ভুলু। নির্বাচনকালীন সময়ে গঠিত আহবায়ক কমিটির প্রধান জালাল উদ্দিন ড্রাইভার বলেন, সুষ্ট সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে পরিবর্তী কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া তাদের কাজ। উখিয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কবির আহমদ বলেন, আগামী ২৫ নভেম্বর উখিয়া সদরের উক্ত শ্রমিক সংগঠনের নির্বাচনকে ঘিরে শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে যে অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

###################

মিয়ানমার সীমান্তে ১২৫ রোহিঙ্গা স্বদেশ ফেরৎ: বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

কক্সবাজার ও বান্দবান সীমান্ত দিয়ে বিজিবির কঠোর কড়া কড়ির পরও মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা সীমান্ত রক্ষী বিজিবির চোঁখ ফাকি দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ক্রমশে বাড়ছে। আরকান রাজ্যে রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালুগু মুসলমানদের উপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছে এবং তাদের বসত বাড়ী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যার ফলে রোহিঙ্গারা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে ছোট ছোট নৌকা যোগে টেকনাফ মোছনী, লেদা, ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নিচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর সকালে টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার গামী যাত্রী বাহি সিএনজি গাড়ীতে করে কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে ঢুকার আগেই বালুখালী পানবাজারস্থঢ়রপ-১ বিজিবির চেক পোষ্টে ৬৬ জন রোহিঙ্গা আটক হয়েছে। তৎমধ্যে ১১ জন পুরুষ, ২০ জন মহিলা ও ৩৫ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজিবি সদস্যরা যাত্রী বাহি গাড়ীতে তল্লাসি চালিয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ১২৫ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু কে আটক করার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত বিজিবির সদস্য জোরদার করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালে মিয়ানমারে মুসলমানদের উপর নির্যাতন নীপিড়ন শুরু হলেঢ়রপ-২ রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে চলে আসলে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া হয়। কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার পর বেশির ভাগ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়। কিছু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাহিরে গিয়ে লোকালয়ে আশ্রয় নেন। ১৯৯১ সালের শেষের দিকে আবারো আরকান রাজ্যে সংখ্যলুগু মুসলমানদের উপর চরম অত্যাচার, নির্যাতন, নীপিড়ন চালানোর কথা বলে প্রায় আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এদেশে চলে আসেন। ২ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত গেলেও কুতুপালং নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে রেজিষ্ট্রাট ৩২ হাজার রোহিঙ্গা রয়ে যায়। এ ছাড়াও টেকনাফের মোছনী, লেদা ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিতে লক্ষাধিক আনরেজিষ্ট্রাট রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এ ফাকে আবারো মিয়ানমার আরকান রাজ্যের মংডু শহর এলাকায় গত ৯ অক্টোবর সহিংসতার ঘটনা নিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর আবারো চরম নির্যাতন বাড়ী ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মুসলমানরা ফের বাংলাদেশে ফাড়ি দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। যাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা মংডু জেলার নাগপুরা থানা খিয়ারী পাড়া গ্রামের বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত: