উখিয়ার ক্রাইম জোন পালং খালীর বটতলী স্টেশনে বিবাদমান দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ ব্যাপক গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়ায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় গুলি বর্ষন ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল মালেক মিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে, গত শুক্রবার (০৪ নভেম্বর) সকালে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল খায়ের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উখিয়া উপজেলার পালং খালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নাফ নদী সংলগ্ন লোকলিয়া চিংড়ি প্রজেক্টে ৩০ অক্টোবর চিহ্নিত সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দিয়ে মাছ হাসমত আলীর পুত্র মাছ ব্যবসায়ী দিল মোহাম্মদ (৩২) ও মিজান (৩৫)কে মারধর করে টাকা পয়সা ও মোবাইল সেটসহ মাছ ডাকাতি করে লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুলতান আহামদ গ্রামবাসীর সহযোগীতায় আহত মাছ ও কাকড়া ব্যবসায়ীদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, গত ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় বটতলী স্টেশনে সংঘটিত ঘটনার বিষয় নিয়ে স্থানীয় ভাবে শালীসি বৈঠক চলাকালে মেম্বার সুলতানকে মারধরসহ নাজাহাল করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এসময় অস্ত্রধারীরা একের পর এক গুলি বর্ষন করলে এলাকায় এক ভীতিকর পরিস্থিতিসহ আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে।
গ্রামবাসীরা আরো জানান, গত কাল শুক্রবার সংঘটিত ঘটনার জের ধরে বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে বটতলী স্টেশনে তৃতীয় দফা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ব্যাপক গুলি বর্ষনে ঘটনা ঘটে। ঘটনায় লুৎফুর রহমান (২৮), বেলাল উদ্দিন (৩০) ও বদিউর রহমান বদি (৩৫) আহত হয়। এছাড়াও আবুল হোছন বাবুল ও আলী মনছুরের বসতবাড়ী ভাংচুরসহ লুটপাট চালিয়েছে। উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুলতান আহমদ এঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার আলী চাঁদ, জাফরুল ইসলাম বাবুল ও তার বাহিনীকে দায়ী করেছেন। বর্তমানে তিনি (বর্তমান মেম্বার) সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে অবরুদ্ধ ও নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা জানান, পালংখালী ইউনিয়নের বটতলী গ্রামে প্রকাশ্য অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও সশস্ত্র ক্যাডারদের মহড়ায় পুরো এলাকাবাসী সম্পূর্ণ ভাবে জিম্মি হয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজ হয়ে পড়েছেন উদ্বিগ্ন। তারা আরো বলেন, দু’গ্রুপের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারা যুবলীগের নামধারী। এদিকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আর যেন সংঘটিত হতে না পারে তার জন্য পুলিশ কড়া সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। উখিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস.আই শাহ জাহান কামাল ও এএস.আই জাকিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনা স্থলে রয়েছে।
পাঠকের মতামত: