ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইয়াবা রাজ্যের রাজা তারা!

omar-faruk-pic-ukhiya-17-09-2016-2উখিয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় সর্বত্র ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন চলছে।ইয়াবা পাচার,সেবনের ক্ষেত্রে হালে উখিয়া উপজেলার গ্রামে গ্রামে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।দিন দিন ইয়াবা বানিজ্য ছড়িয়ে পড়ায় ছাত্র,কিশোর,যুবক থেকে শুরু করে ঘরের গৃহীনিদের মাঝেও। সরকারি হাট বাজারের খাস জমি,বন বিভাগের রিজার্ভ ভূমি,পাহাড়,টিলা,জবর দখল করে ভূমির রূপ পরিবর্তন করে নব্য ইয়াবা গড়ফাদারদের নতুন নতুন পাকা ভবন উঠলেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের রহস্যজনক ভুমিকার কারনে ইয়াবা পাচার,সেবনকারীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।এদের মধ্যে উখিয়া উপজেলায় ৩ জন ইয়াবা গড়ফাদারের নাম ব্যাপকভাবে আলেচিত হচ্ছে। এরা হলেন,খোকা,মাহমুদুল হক ও বাবুল মিয়া।

omar-faruk-pic-ukhiya-17-09-2016-1অনুসন্ধানে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা গেছে, মরননেশা ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারকারীদের জীবন যাত্রা পাল্টানোর চিত্র। কয়েক বছর আগেও মাহমুদুল করিম খোকা নামের যুবকটি অন্যের মাইক্রোবাসে হেলপারি করে টানাটানির সংসারে দিনাতিপাত করতো। কিন্তু গত ১/২ বছরের ব্যবধানে বদলে গেছে তার জীননযাত্রা। ইয়াবা পাচার করে সে বর্তমানে একাধিক প্রাইভেট কার ডাম্পার ট্রাক, সিএনজি অটো রিক্সা, মোটর সাইকেলের মালিক। গড়ে তুলেছে নামে বেনামে একাধিক সম্পদ। উখিয়া রেঞ্জের উখিয়া সদর বনবিটের রিজার্ভ বনভূমির টিলা কেটে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে গড়ে তুলেছে আধুনিক পাকা ভবন। বাড়ীর চর্তুরদিকে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামরা। বাহির থেকে মনে হবে কোন রাজপ্রসাদ। এলাকাবাসী জানায়, খোকাকে দিনে মাঝেমধ্যে দেখা গেলেও রাতে সে পালিয়ে বেড়ায়। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে তার বাড়ীতে হানা দিয়েছে। তার সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে একাধিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। তাছাড়া তার নামের গাড়ীসহ বিভিন্ন সম্পদ দেখাশুনা করছে তার কাছের কয়েকজন প্রভাবশালী। এদিকে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া ইয়াবা গড়ফাদার মাহমুদুল হককে নিয়ে চলছে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা। উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের দুছড়ি গ্রামের হতদরিদ্র আলীর ছেলে মাহমুদুল হকের উত্তানটা এককথায় বিস্ময়কর, রূপকথার গল্পের মতো। দরিদ্র পিতার সংসারে অভাবের তাড়নায় ২০১৩ সালের দিকে সে মোবাইল অপারেটর কোম্পানী রবিতে চাকরী নেয়। বছরখানেক রবি কোম্পনীতে চাকরী করার পর ২০১৪ সালের দিকে সে যোগ দেয় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিষ্টান বিকাশে। মুলত মাহমুদুল হকের উত্তানটা বিকাশ থেকেই। বিকাশে এসআর হিসেবে কর্মরত অবস্থায় সে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ও হুন্ডি বানিজ্য। বিকাশে তার এলাকা ছিল পালংখালী, থাইনখালী, বালুখালী ও কুতুপালং বাজার। সীমান্তবর্তী এলাকায় যাতায়াতের সুবাধে তার সাথে সখ্য গড়ে উঠে সীমান্তের চিন্থিত ইয়াবা গড়ফাদারদের সাথে। হাতে বিকাশের টাকা থাকার সুবাধে ইয়াবার চালান আনতে তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। শুধু ইয়াবা নয়,হুন্ডি বানিজ্যেও জড়িয়ে পড়ে সে। হুন্ডি বাািনজ্য নির্বিঘেœ করতে উখিয়া সদর মসজিদ মার্কেটে বিছমিল্লাহ টেলিকম নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্টান খুলে বসে সে।সেখানেও প্রকাশ্যে নিয়মিত হুন্ডির টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার সাথে হুন্ডি ব্যবসার পাটনার হিসেবে নিদানিয়ার তাহের ও উত্তর পুকুরিয়ার আনোয়ারের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার ইয়াবা সিন্ডিকেটে রয়েছে ৫০ জনের একটি তরুনদল। তাদের কাজ হচ্ছে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে আসা গড়ফাদার মাহমুৃদুল হকের ইয়াবা দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার করা। ইয়াবা পাচার করে মাহমুদুল হক নামে বেনামে অল্প বয়সে অঢেল সম্পদের মালিক এখন। তার রয়েছে একাধিক নোহা গাড়ি, ডাম্পারসহ নামে বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদ। প্রকাশ্যে এ অবৈধ বানিজ্য চালিয়ে গেলেও একবারও তাকে গ্রেফতার হতে হয়নি। এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রচার আছে,মাহমুদুল হক থানা পুলিশ ও প্রশাসন ম্যানেজ করেই এ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।গত ৩০ আগষ্ট ইয়াবার টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে মাহমুদুল গ্রুপের সাথে জাহেদ গ্রুপরে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছে।উখিয়ার আরেক আলোচিত ইয়াবা গড়ফাদার বাবুল মিয়া।৫ বছর আগেও ছিলেন গাড়ির হেলপার।কিছুদিন পর হেলপার থেকে হন চাঁদের গাড়ির (জিপ) ড্রাইভার। কিন্তু গাড়ি চালালেও চলছিল না তার পরিবার।তাই যুক্ত হন চোরাচালানের সঙ্গে।কাঁচা টাকা লোভে জড়িযে পড়ে মরননেশা ইয়াবা বানিজ্যে। এ ব্যবসায় জড়িত হওয়ার পর বাবুল মিয়াকে আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। মাত্র পাঁচ বছর এ মাদক বেচাকেনা করে আমূল বদলে গেছেন তিনি।উখিয়ার হিজলিয়াতে হয়েছে তার কোটি টাকার বাড়ি।কোটি কোটি টাকার জায়গা কিনেছেন কোটবাজারসহ পর্যটন শহর কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে। নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন সম্পদ।তার এক ভাই বর্তমানে ইয়াবাসহ আটক হয়ে ঢাকায় জেলে রয়েছে।শীর্ষ এ ইয়াবা গড়ফাদারের কক্সবাজার টেকনাফ মেরিনড্রাইভ ভিত্তিক সিন্ডিকেটে রয়েছে সোনাপারপাড়া এলাকার ছমি উদ্দিন,জালাল উদ্দিন ও নুরু উদ্দিন। চতুর বাবুল মিয়া তার এ অবৈধ বানিজ্য ধরে রাখতে প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন। এ কারনে সে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পরিবর্তে বহাল তবিয়তেই ইয়াবা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে সে।শুধু খোকা,মাহমুদুল হক ও বাবুল মিয়া নয়,এ ধরনের আরো অনেক ইয়াবা গড়ফাদার রয়েছে যাদের সম্পর্কে এলাকার লোকজন ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ওয়াকিহাল। কিন্তু এসব ইয়াবা রথি মহারথিরা আইনের আওতায় না আসার ফলে স্থানীয় সাধারণ অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, ইয়াবাসহ যেকোন ধরনের মাদকের ব্যাপারে পুলিশ জিরো ট্রলারেন্সে কাজ করছে। প্রকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

################

উখিয়ায় বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলানী ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহ জাহান চৌধুরী বলেন, সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে বেশিদিন ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে পারবেনা। অচিরেই এ সরকারের পতন হবে। বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। গতকাল শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিন ব্যাপী উপজেলা বিএনপির ঈদ পূর্ণমিলনী ও পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। কোর্টবাজারস্থ রাশেদা কামাল টাওয়ার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সিরাজুল হক বিএ, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, মোক্তার আহমদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী, বিএনপি নেতা জহুর আহমদ চৌধুরী, সেলিম জাহাঙ্গীর, উখিয়া উপজেলা যুবদলের আহবায়ক এম গফুর উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল সিকদার, উখিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রিদুয়ান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আরফাত চৌধুরী।

 ###################

আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির বহিঃপ্রকাশ পশু কোরবানিতে শরীক হয়েছে উখিয়ার ৮০ শতাংশ পরিবার

ওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া :::

পেশা বৃদ্ধির পাশাপাশি সৎপথে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বা পরিবারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে অধিকাংশ পরিবারে। যার বাস্তব প্রমাণ মিলেছে গত ঈদুল আযহায়। পশুর মূল্যবৃদ্ধির পরও উখিয়ার ৮০ শতাংশ পরিবার এবার পশু কোরবানিতে শরীক হতে সক্ষম হয়েছে। উখিয়া সদর ঘিলাতলী পাড়া ও ওয়ালাপালং গ্রামের সর্বাপেক্ষা বড় অধিক পরিমাণ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত সমাজ সর্দার শামশুদ্দিন চৌধুরী জানান, তার সমাজে প্রায় স্বচ্ছল, অস্বচ্ছল, মধ্যবিত্ত, নিুআয়ের ও ছিন্নমূল সহ প্রায় ১৮০টি পরিবার রয়েছে। অন্যান্য বছর এ সমাজে ৩০/৩৫টি পশু কোরবানি হয়ে আসলেও এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। তিনি বলেন, এবারের ঈদুল আযহায় প্রায় অর্ধশতাধিক পশু তার সমাজে কোরবানি দেওয়া হয়েছে। তিনি পরিবার ভিত্তিক কোরবানি দেওয়ার উৎসাহটি উল্লেখ করে বলেন, একাকি বা একাধিক পরিবার নিয়ে ক্রয়কৃত পশু হলেও ৮০ শতাংশ পরিবার এবার কোরবানিতে শরীক হয়েছে। বাদ-বাকী যেসব পরিবার কোরবানিতে শরীক হতে পারেনি তারাও সর্বনিু পরিবার পিছু ৫ কেজি করে মাংস পেয়েছে। একই কথা বললেন, ঘিলাতলী সমাজ সর্দার মাস্টার সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, তার সমাজে প্রায় ১৫০টি পরিবার রয়েছে। যাদের দুইতৃতীয়াংশ পরিবার কোরবানিতে শরীক হয়েছে। এটাকে ইতিবাচক দিক বিবেচনা করে প্রবীণ এ শিক্ষক আরো বলেন, এলাকায় পেশা বৃদ্ধির কারণে বেকারত্বের সংখ্যা দ্রুত কমে গেছে। যার ফলে গ্রামে অস্বচ্ছল পরিবার নেই বললেই চলে। এমতাবস্থায় পশু কোরবানি দিতে সাধারণ মানুষের আগের তুলনায় আগ্রহ অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাজিরপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন জানান, এবারের কোরবানিতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কোরবানির পশুর মাংস সাইজ এবং ভাগভাটোয়ারা করার লোক পাওয়া যায়নি। কেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবার কোরবানিতে অংশ গ্রহণ করেছে। তাই যার যার পশু নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে লোকবল সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, বর্তমান সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে এলাকায় যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তার চাইতে বেশি উন্নয়ন হয়েছে নিু আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে। তিনি বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জীবিকার পাশাপাশি পারিবারিক স্বচ্ছলতার উন্নয়নে মানুষ এখন সচেতন। তাই গ্রামগঞ্জে অস্বচ্ছল পরিবারগুলোতেও স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

পাঠকের মতামত: