ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় জাপার সম্মেলন হয়েছে সাড়ে ৮মাস, ঝুলে আছে কমিটি তৃনমুল নেতাকর্মীরা হতাশ

jppনাজিম উদ্দিন, পেকুয়া ::::

পেকুয়ায় আট মাস ধরে অমিমাংসিত রয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপার) উপজেলা কমিটি। সম্মেলন হয়েছে বিগত সাড়ে আট মাস আগে। তবে এখনো দেয়া হয়নি পুর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন। ঝুলন্ত অবস্থায় চালাচ্ছে জাতীয় পার্টির পেকুয়ার সাংগঠনিক কার্যক্রম। পেকুয়ায় জাতীয় পার্টির একটু উজ্জীবিতভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে দলে অর্ন্তদ্বন্ধ চলছে পেকুয়ায়। পুর্বের আহবায়ক কমিটি বিলুপ্তি করে জাতীয় পার্টিকে গতিশীল ও বেগবান করতে সম্মেলন অনুষ্টিত হয়। গত ২০১৫সালের ১৪ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির পেকুয়ার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। পুর্বের কমিটির আহবায়ক এস.এম মাহবুব ছিদ্দীকিকে সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি ঘোষনা করে। ওইদিন জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বিডিআর জাহাঙ্গীরকে সাধারন সম্পাদক চুড়ান্ত করা হয়। পুর্বের কমিটির সদস্য সচিব দিদারুল করিমকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ঘোষনা করে তিন সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটি ঘোষনা দেন জেলা জাতীয় পার্টি। কিন্তু ওই সময় থেকে বিগত সাড়ে আট মাস অতিবাহিত হয়েছে অথচ পেকুয়ায় জাপার পুর্নাঙ্গ কমিটি এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। দীর্ঘ প্রতিক্ষিত সম্মেলনের জন্য নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল ছিল। সম্মেলনের পর জাপার মধ্যে পেকুয়ায় কিছুটা আমেজ ও উজ্জীবিত ভাব দেখা গেছে। তবে পুর্নাঙ্গ কমিটি ঝুলে থাকায় জাপার নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশাভাব দেখা দিয়েছে। ক্ষোভ তৈরি হয়েছে উপজেলা ও তৃনমুল জাপার নেতাকর্মীদের মাঝে। পেকুয়ায় জাতীয় পার্টির কোন অস্থিত্ব ছিলনা। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন জাপা থেকে। হাজ্বি মো.ইলিয়াছ এমপি হওয়ার পর পেকুয়ায় জাতীয় পার্টিতে চাঙ্গাভাব দেখা দেয়। সরকারের নানান সুযোগ সুবিধা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে এমপির গুরুত্ব প্রাধান্য থাকায় জাতীয় পার্টির দিকে ঝুঁকে কিছু মানুষ। বিগত আড়াই বছর ধরে পেকুয়ায় জাতীয় পার্টির বিভিন্ন কর্মসুচি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এক সময় ইউনিয়ন কমিটি ছিলনা পেকুয়ায়। রাজনীতি ছিল উপজেলা কেন্দ্রিক ২-৪জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। জাপার প্রতিকুল সময়ে পেকুয়ায় দলটির সাথে সবেমাত্র ২-৪জন সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা হোছাইন মুহাম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক দল জাপাকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন। কিন্তু এখন ক্ষমতার স্বাদ আছে জাপায়। তাই মুল ধারার নেতাদের চেয়ে হাইব্রিড নেতাদের পদচারনা বেড়েছে জাপায় পেকুয়ায়। পেকুয়ায় জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে অনেক আগে থেকে পরিচিত এস.এম মাহবুব ছিদ্দিকী ও দেলোয়ার করিম চৌধুরী। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ ১৯৮২সালে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্টিত করার পর থেকে এ দু’নেতা জাপার সাথে সরারসরি লিপ্ত। বর্তমান সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলনের এক মাস আগে জাপাতে যোগদান করেন। সি.সহ-সভাপতি দিদারুল করিমও জাতীয় পার্টির কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তবে তিনি সংগঠক নন। এমপি পাওয়ার পর তিনি দেন দরবার ও ধান্ধাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। তার কারনে অতিষ্ট ছিল সাধারন নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের সাথে দুরত্ব ছিল তার সবচেয়ে বেশি। সাধারন সম্পাদক পদ পেতে তার দৌড়ঝাপ ছিল। কিন্তু তৃনমুল নেতাকর্মীদের অনুরোধে এমপি সবকিছু বিবেচনায় এনে দিদারের পরিবর্তে ওই পদে বিডিআর জাহাঙ্গীর আলমকে আসীন করেন। পেকুয়ায় ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের নেতাকর্মীদের চেয়ে সরকারি কর্মকান্ডের সুফল ভোগ করছেন জাতীয় পার্টির কর্মীরা। বিগত আড়াই বছরের মধ্যে জাপা পেকুয়ার নেতাকর্মীরা ধান্ধাবাজিতে মেতেছেন সবচেয়ে। সরকারি সব সুযোগ সুবিধার অংশীদার হয়েছেন তারা। এস.এম মাহবুব ছিদ্দিকী জাপার জন্য পেকুয়ায় অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন। দলকে সুসংগঠিত করতে তার কঠোর শ্রম ও মেধা রয়েছে। সম্মেলনে তার ত্যাগ মুল্যবোধকে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ওই সুবাধে তাকে সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে। খুশিও তৃনমুল নেতাকর্মীরা। সাড়ে আটমাস ধরে কমিটি ঝুলন্ত থাকায় জাপায় পেকুয়ার সাংগঠনিক কার্যক্রম পড়েছে ঝিমিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে পুর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না দেয়ায় নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন। এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে পুরো দলের মধ্যে। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। জানা গেছে ২০১৫সালে ১৪ডিসেম্বর পেকুয়া সমবায় কমিউনিটি সেন্টারে পেকুয়ায় জাতীয় পার্টির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্টিত হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চকরিয়া-পেকুয়ার সাংসদ ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজ্বি মো.ইলিয়াছ। এ সময় জাপার কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ ওই দিন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ নয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার সময় চকরিয়া-পেকুয়ায় উদ্যেমী ছিল জাতীয় পার্টি। ১৯৮৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে চকরিয়া আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। ওই নির্বাচনে বিপুল রায় পেয়ে এমপি হয়েছিলেন তৎকালীন আট দলীয় জোটের আ’লীগের প্রার্থী এড.জহিরুল ইসলাম। কিন্তু ফলাফল যায় সালাহ উদ্দিন মাহমুদের অনুকুলে। ৯০’র পটপরিবর্তনের পর পেকুয়ায় কোনঠাসা হয়ে যায় জাতীয় পার্টির রাজনীতি। একদম ঝিমিয়ে গিয়েছিল কিন্তু মাহবুব ছিদ্দিকী, উজানটিয়ার আবদুল গফুর চৌধুরী, দেলোয়ার করিম চৌধুরী একই বাড়ির আকতার কামাল চৌধুরী প্রকাশ ওয়াইশ্যা মিয়া ওই পার্টির প্রতি অত্যন্ত অবিচল ছিল। তাদের প্রেরনায় জাতীয় পার্টি পেকুয়ায় নিভু নিভু অবস্থায় প্রান ছিল।

পাঠকের মতামত: