ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন মাংস বিক্রেতা দুলাল

Dulalঅনলাইন ডেস্ক :::

রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার ঘাতক ওবায়দুল খানের শাস্তির দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলনে মুখর সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফেসবুক-টুইটারের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের যোগ দিয়েছে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত কোটি বাঙালি। ঘাতককে ধরিয়ে দিতে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হয়েছে ওবায়দুলের ছবি। সেই ঘাতককে ধরিয়ে দিয়ে এখন প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন নীলফামারী জেলার এক মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন।

তিনি ডোমার উপজেলার হরিণচড়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক।

উপস্থিত বুদ্ধি ও সৎ সাহসের পরিচয় দিয়ে একজন হত্যাকারীকে ধরিয়ে দেওয়ার দুলাল হোসেনকে নিয়ে এখন এলাকায় চলছে মাতামাতি। বিভিন্ন মিডিয়ায় তার ভূমিকার বিষয়টি ফলাও করে প্রচারের সুবাদে প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন তিনি।

উপজেলার সোনারায় বাজারে দুলাল প্রতিদিন সকালে খাসির মাংস বিক্রি করেন। দুলাল হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিনি বুধবার সকালে সোনারায় বাজারে দোকান খুলতে আসেন। ওই সময় বাজারে তেমন লোকজন ছিল না। এমন সময় তিনি পাশের এক দোকানের বারান্দায় উদভ্রান্তের মতো এক যুবককে বসে থাকতে দেখেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ভ্যানে করে ওই যুবক নীলফামারীর দিকে রওনা হয়ে যায়।

এ সময়ের মধ্যে দুলালের প্রাথমিক সন্দেহটা দৃঢ় হয়ে ওঠে। তিনি তার মোটরসাইকেল নিয়ে ওই যুবকের পিছু ধাওয়া করেন। এরপর নীলফামারী-ডোমার সড়কের খানাবাড়ী মসজিদের সামনে থেকে তাকে আটক করে নিজের মোটরসাইকেলে তোলেন।

তাকে সোনারায় বাজারে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই যুবক নিজেকে ওবায়দুল নামে পরিচয় দিয়ে জানায়, তার বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মীরাটাঙ্গী গ্রামে। এতে দুলাল নিশ্চিত হন এই সেই রিশার হত্যাকারী।

সংবাদপত্রে ও ফেসবুকে এর ছবিই তিনি দেখেছেন। দুলাল একপর্যায়ে ওবায়দুলকে চায়ের দোকানে নিয়ে গিয়ে সকালের নাস্তা খাওয়ায়। এ সময় ওবায়দুলও তার কাছে স্বীকার করে যে, সে ঢাকায় রিশা নামের এক স্কুলছাত্রীর ঘাতক। ঢাকা থেকে সে পালিয়ে এসেছে ডোমারে এক আত্মীয়র বাসায়। সেখান থেকে নানা পথ ঘুরে এখানে এসেছে। সে এখন পালানোর চেষ্টা করছে।

এসব কথাবার্তার ফাঁকেই দুলাল ডোমার থানা পুলিশকে ফোন দিলে এসআই ফজলুল হক ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওবায়দুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

দুলাল বলেন, রিশা আমার মেয়ে বা বোনও তো হতে পারত। বিবেকের তাড়না থেকেই ওবায়দুলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।

এভাবে ওবায়দুলকে আটক করে জেলার নিভৃত পল্লীর এ মাংস বিক্রেতা নিজের বিবেক ও দায়িত্ববোধের যে পরিচয় দিয়েছেন তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

তবে যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই দুলালের এসব নিয়ে বাড়তি কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও তিনি দোকান খুলে মাংস বিক্রি করেছেন। তবে এলাকাবাসীর দাবি দুলাল যে কাজটি করেছেন তা অবশ্যই ভালো কাজ। এর মূল্যায়ন হওয়া উচিত।

 

পাঠকের মতামত: