ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় সমন্বয় সভা চলাকালে ‘স্লিপ’ দিয়ে সংবাদকর্মীদের বের করে দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

চকরিয়া অফিস :raju
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা চলাকালে ‘স্লিপ’ দিয়ে এবার স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংবাদকর্মীদের বের দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সভাপতি শাফায়াত আজিজ চৌধুরী রাজু। এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মী ও এলাকাবাসীদের মাঝে ওই বিতর্কিত উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে উপজেলা পরিষদের সরকারী বৈঠক থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংবাদকর্মীদের বের কয়ে দিয়ে ওই উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি-জামায়াতে এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মাঠে নেমেছেন বলে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা দাবী করেছেন।
জানা গেছে, গত ১৮ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভার কার্যক্রম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা শাফায়াত আজিজ রাজু সভাপতিত্বে শুরু হয়। এসময় সমন্বয় সভায় পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুর রশিদ খান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফা হায়দার রণি, উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের নির্বাচিত সদস্য ও পেকুয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী মর্জিনা বেগম ও হাসিনা বেগম,  উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান রব্বানী, সমবায় কর্মকর্তা ওসমান গণি, ইউপি চেয়ারম্যান মধ্যে উজানটিয়ার শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, রাজাখালীর ছৈয়দ নুর ও টইটংয়ের ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমূখ।
এদিকে সভা চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে যান পেকুয়া উপকূলীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের জঙ্গি ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হিরু ও দৈনিক হিমছড়ির পেকুয়া প্রতিনিধি, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবুল উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি দেখে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবদল নেতা শাফায়াত রাজু বেসামাল হয়ে পড়েন। তিনি সরকার বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন, উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের দূূর্নীতি ধামাচাপা, এডিপিসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পারসেন্টেজ আদায় করার সুবিধার্থেই ওই বৈঠক থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিয়েছেন এমনটাই মন্তব্য করেছেন স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও শাফায়াত আজিজ চৌধুরী রাজু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে এডিপি, টিআর ও কাবিখার বিভিন্ন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছ উৎকোচ আদায়ের গুরুতর অভিযোগ রযেছে। মগনামার লঞ্চঘাট সংলগ্ন একটি ঈদগাহ ময়দানের নামে বিগত ৭ বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন উৎস্য থেকে লাখ লাখথ টাকা বরাদ্দ নিয়ে নামমাত্র কাজ বাস্তবায়ন করে বরাদ্দের বেশিরভাগই লুটপাট করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হিরু অভিযোগ করেছেন, গত ১৮ আগষ্ট উপজেলা পরিষদের হলরুমে সমন্বয় সভা চলাকালে তারা দুই গণমাধ্যম কর্মী নির্ধারিত সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সেখানে যান। তারা দুই জনই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির গণমাধ্যম কর্মী হওয়ায় এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের একটি ‘স্লিপ’ দিয়ে সমন্বয় সভা থেকে বের করে দেয়। উপজেলা পরিষদের এহেন বিতর্কিত হস্থক্ষেপকে স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর নগ্ন-হস্থক্ষেপ বলে দাবী করেছেন পেকুয়ার সাংবাদিকরা। স্থানীয় সাংবাদিকরা অবিলম্বে ওই উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু জানান, সাংবাদিকরা উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভার সদস্য না হওয়ায় বৈঠকে না থাকার জন্য স্লিপ দেওয়া হয়েছে। তিনি যা করেছেন তা বিধিমতে করেছেন বলে দাবী করেন।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মারুফুর রশিদ খান জানান, তিনি সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান স্লিপ দিয়ে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত নয়।
এদিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদে সরকারী বৈঠক চলাকালে সাংবাদিকদের স্লিপ দিয়ে বিতাড়িত করার ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবদল নেতা শাফায়াত আজিজ রাজুর ভূমিকার তীব্র নিন্দাসহ  কঠোর সমালোচনা করেছেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

পাঠকের মতামত: