ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ার হুন্ডি বাজার একরাম সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে

hundiমাহমুদুল হক বাবুল, উখিয়া  :::

উখিয়ার হুন্ডি বাজার ফের জমজমাট হয়ে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার সর্বত্র প্রায় অর্ধ শতাধিক হুন্ডি চক্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজর এড়িয়ে এক শ্রেনীর দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তোলে অবৈধভাবে হুন্ডির টাকা লেনদেন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব হুন্ডি চক্রের একটি তালিকা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে থাকলেও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হুন্ডি চক্রের সদস্যরা। উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ডেইল পাড়া এলাকার মৌলভী ছানাউল্লার ছেলে হুন্ডির রাজা একরামের নেতৃত্বে কয়েক কোটি টাকা বিতরণের টার্গেট নিয়ে চক্রটি ফের মাঠে নেমেছে। হুন্ডি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনলাইন মোবাইল সেবা বিকাশের বিরুদ্ধেও হুন্ডিসহ ইয়াবা পাচারের অর্থ লেনদেনের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত চিহ্নিত গডফাদাররা বর্তমানে নতুন কৌশলে বিভিন্ন বিকাশের দোকান ও উখিয়া ফরেষ্ট রোড়স্থ সজিব সেনের মুদির দোকানে উক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের হাড়ি হাড়ি টাকা মজুদ রেখে পরে সুযোগ বুঝে ওই দোকানের মালিক সজিব সেনের মাধ্যমে উক্ত টাকার লেনদেন করে থাকে বলে জানা যায়। স্থানীয়রা ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক হুন্ডি সিন্ডিকেটও অবাধে হুন্ডির টাকা লেনদেন করায় স্থানীয় রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকগুলো প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে সংশ্লিদের অভিমত।

সূত্রে জানা গেছে, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক একটি রোহিঙ্গা হুন্ডি চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রবাসীদের পাঠানো টাকা লেনদেনের ধারাবাহিকতা চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। আর এ হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে ক্যাম্প সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম। উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির ও সংলগ্ন বস্তির অন্তত ১০ হাজারের অধিক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। প্রবাসী থেকে ব্যাংক চ্যানেলের মাধ্যমে নিকটত্মীয়দের নিকট টাকা পাঠানোর বিষয়টি ঝামেলা মনে করে প্রবাসী রোহিঙ্গারা। তারা লেনদেনের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সরাসরি হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। সূত্রমতে, ১০/১২ জনের একটি রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট হুন্ডি ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত। সুত্র মতে, জেলার বহুল আলোচিত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের অন্যতম গডফাদার হুন্ডি জগতের কিং একরামের সিন্ডিকেটের হাতে যারা উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তর পুকুরিয়া গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে আনোয়ার প্রকাশ হুন্ডি আনোয়ার, কোটবাজারের ফজল মার্কেটস্থ বিকাশের দোকানের ভালুকিয়া গ্রামের আব্দুর রহিম প্রকাশ হুন্ডি রহিম, নিদানিয়া গ্রামের মৃত মেহের আলীর ছেলে কোটবাজার চৌধুরী মার্কেটস্থ ফ্যামেলি ক্যালেকশনের মালিক আব্দুল্লাহ প্রকাশ হুন্ডি মৌলভী, একই এলাকার আবু তাহের প্রকাশ হুন্ডি তাহের, কোটবাজারের চিহ্নিত হুন্ডি ব্যবসায়ী মঞ্জুর, সোনার পাড়া এলাকার হুন্ডি হামিদ, পূর্ব ডেইল পাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম প্রকাশ ঠান্ডু, মরিচ্যার আব্দু সহ আরো ১০/১৫ জন তালিকাভুক্ত হুন্ডি চক্র আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে নিয়মিত হুন্ডির টাকা বিতরণ করছে। উখিয়ার ইনানী, সোনারপাড়া, কোর্টবাজার, মরিচ্যা, পাগলির বিল, ভালুকিয়া, উখিয়া সদর, কুতুপালং, টাইপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী সহ একাধিক স্পটে এসব হুন্ডি ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে লেনদেন করে থাকে। চক্রটি শুধুমাত্র একটি মোবাইল নাম্বারের উপর ভিত্তি করে অভিনব কায়দায় হুন্ডির টাকা লেনদেন অব্যাহত রাখায় বিষয়টি আলোচনার বাইরে থেকে যায়। ইদানিং জনপ্রিয় মোবাইল সেবা বিকাশের মাধ্যমেও হুন্ডির লেনদেন আশংকাজনক ভাবে বেড়েছে। বিকাশের মাধ্যমে মোবাইল নাম্বারে হুন্ডির টাকা পৌঁছে দিচ্ছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। মোবাইল ভিক্তিক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় চিন্থিত হুন্ডি ব্যবসায়ীরা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। উখিয়ার হুন্ডি আনোয়ার জানান, উখিয়ার ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার আসাদ কমপ্লেক্সের চিন্থিত হুন্ডি এজেন্ট সাইফুল এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল ইসলাম ও টেকনাফের মিনহাজ ভাই, আমি মিনহাজ ভাইয়ের ইয়াবা পাচারের টাকাগুলো গডফাদারদের কাছ থেকে উত্তোলন করে তার কাছে পাঠাই এবং ওই টাকা থেকে সে আমাকে কমিশন দিয়ে থাকে । উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের টাইপালং গ্রামের আলী আহম্মদ কোম্পানীর ছেলে আন্ডার ওয়াল্ড হুন্ডি ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রক সেীদি প্রবাসী আব্দুল হামিদ। বাংলাদেশে আমাদের দেখা শুনা করেন সাইফুল ও টেকনাফের হুন্ডি ও ইয়াবার রাজা মিনহাজ ভাই,তাদের সাথে উখিয়া, টেকনাফ ও কক্সবাজার সদর থানা চুক্তি রয়েছে তাই আমাদেরকে উখিয়া থানায় তেমন কিছু দিতে হয় না। এ সাইফুল ইসলাম নিব্রিঘেœ হুন্ডি ব্যবসা চাালিয়ে যেতে কক্সবাজার থানাকে মাসে লাখ টাকা দিয়ে যাচ্ছে বলে হুন্ডি আনোয়ার জানালেও উখিয়া থানাকে মাসিক কত দেয় তা না জানিয়ে মুঠফোনটি তাৎক্ষনিক কেটে দেয়। পুবালী ব্যাংক উখিয়া শাখার ম্যানেজার ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বর্তমানে সহজ পন্থায় প্রেরকের পাঠানো টাকায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপকের হাতে তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকলেও হুন্ডি চক্রের কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন লক্ষ্যমাত্রায় অর্জন হচ্ছে না। এ ব্যাংক কর্মকর্তা এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের দোষারোপ করে বলেন, পুলিশ তৎপর হলে হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার লাভবান হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাঠকের মতামত: