ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

লামায় প্রধান শিক্ষককে পূণর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় বর্জন

Lama-School-class-roomলামা প্রতিনিধি :

বান্দরবানের লামা উপজেলার টি.টি এন্ড ডি.সি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবীকে বদলির প্রতিবাদে বিদ্যালয় বর্জন করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। শনিবার সকাল থেকে সব শিক্ষার্থীই একযোগে বিদ্যালয় বর্জন করে। প্রধান শিক্ষককে পূণর্বহাল না করা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠাবেন না। ইতিমধ্যে বদলী পুনর্বিবেচনার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবরে এসএমসি, পিটিএসহ ৬২ জন অভিভাবকের স্বাক্ষরিত অবেদন করা হয়েছে বলে সুত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারী মোকাম্মেল আমিন কুতুবী লামা পৌরসভা এলাকার টিটি এন্ড ডিসি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। দেড় বছরের মাথায় পূণরায় গত ২৮ জুলাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা শিক্ষা অফিসের আদেশের অনুবলে প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবীকে বদলির আদেশ দেন। সে সাথে তার স্থলে হ্লাচ্ছাইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা শ্রীদেব চৌধুরীকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়। এ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে ১১জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ১৭জন, তৃতীয় শ্রেনীতে ২১জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৯জন, ১ম শ্রেনীতে ৩১জন ও শিশু শ্রেনীতে ২৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জানতে চাইলে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবচার উল্লাহ ও সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবীকে বদলির বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তাকে পুণর্বহাল রাখতে; বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করেও কোন আশ্বাস পাইনি। এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। তারই বহিঃ প্রকাশ ঘটিয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রিরা একযোগে বিদ্যালয় বর্জন করেছে।

শনিবার সকাল ১১টার দিকে সরজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দুই জন প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী সব শিক্ষক আছেন। শ্রেণী কক্ষ খোলা, কিন্তু নেই কোন ছাত্র-ছাত্রি। ফাঁকা পড়ে আছে শ্রেণি কক্ষগুলো। প্রতিদিনের মত নেই কোমলমতি শিশুদের হৈ চৈ। এ সময় বিদ্যালয়ের বারান্দায় দেখা মেলে অভিভাবক মরিয়ম বেগম, মো. জসিম উদ্দিন ও আয়েশা বেগমসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবকের। তারা বলেন, মোকাম্মেল স্যার প্রতিদিন সকাল ৮ টায় স্কুলে দিয়ে অনুপস্থিত ছাত্র-ছাত্রিদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। বিদ্যালয় ছুটির পর দুর্বলদের সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে কোচিং করায়। তার আন্তরিকতায় এলাকার ৯০% ছাত্র-ছাত্রী দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় তাদের ঝরে পড়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে। এ কারনে প্রধান শিক্ষক মোকাম্মেল আমিন কুতুবীকে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রি, অভিভাবক-অভিভাবিকা, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) ও পেরেন্টস-টিচার্স এসোসিয়েশন (পিটিএ) সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য। অভিভাবকেরা আরো বলেন, মোকাম্মেল স্যার চলে গেলে তারা এ বিদ্যালয়ে সন্তানদের আর পড়াবেন না। এ বিষয়ে লামা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ টি.টি এন্ড ডি.সি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের দাবি পুরণের আশ্বাস দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: