ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ইসলামী ব্যাংক শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত শুরু

চকরিয়া অফিস : abu zafar islami bank pekua saka
হুন্ডি ব্যবসায়ী-মানব পাচারকারীদের সাথে সখ্যতা ও সরকার বিরোধী কার্যকলাপসহ নানা বিষয়ে এবার ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার ম্যানেজার ও জামায়াত শিবির অধ্যুষিত লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু জাফরের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অপরদিকে এসব গুরুতর অভিযোগ ধাঁমাচাপা দিতে মরিয়াহয়ে উঠেছে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।
জানা গেছে, গত মাসের ২৪ জুন দৈনিক কক্সাবজার পত্রিকার ১ম পৃষ্টায় ‘পেকুয়ায় ইসলামী ব্যাংকের ইফতার মাহফিলে জামায়াত-শিবিরের মিলন মেলা! শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার উদ্যোগে ২৩ জুন অনুষ্টিত ইফতার মাহফিলে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি, পেকুয়া শাখার ম্যানেজার আবু জাফরের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের সাথে সখ্যতা, সরকার বিরোধী কার্যকলাপসহ হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
গোপনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক পেকুয়ায় শাখায় বিগত কয়েক বছর পুর্বে ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করে আবু জাফর। আর ব্যাংকের পেকুয়ায় শাখায় যোগদান করেই স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তোলে। এলাকার চিহ্নিত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের সাথে আবু জাফরের
রয়েছে যোগাযোগ। আর মানব পাচারকারীদের সাথেও রয়েছে আবু জাফরের সম্পর্ক। পেকুয়ার বেশ কয়েকজন যুবককে মালয়েশিয়ানিয়ে যাওয়ার কথা বলে কয়েক লক্ষাধিক পাকা হানিয়ে নিয়েছেন আবু জাফর এমনই অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।
এদিকে জাতীয় শ্রমিক লীগ পেকুয়া উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবুল ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রামের ডিআইজি, পুলিশ সুপার ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত কয়েক দিন পূর্বে শ্রমিক লীগ নেতা বাবুলের দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রামের ডিআইজি অফিস থেকে কক্সবাজার পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পেকুয়া থানার ওসির কাছে পাঠানো হয়। এদিকে পেকুয়া থানার ওসি ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার ম্যানেজার আবু জাফরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেন এস আই বিমল কান্তি দেবকে।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার এস আই বিমল কান্তি দেব জানান, শ্রমিক লীগ নেতা বাবুল কর্তৃক ডিআইজি মহোদয়ের বরাবরে ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। এ নিয়ে পেকুয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ইতিমধ্যেই ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বিষয়ে জানতে নিজ এলাকার থানা ও কক্সবাজার মডেল থানায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। পেকুয়ায় তার বিরুদ্ধে সরকারী বিরোধী কর্মকান্ডসহ জামায়াত-শিবিরের সাথেসংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার ম্যানেজার আবু জাফরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলকারী জাতীয় শ্রমিক লীগের পেকুয়া উপজেলা সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ করেছেন, ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে বর্তমানে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগটি প্রত্যাহার না করলে পরিণিতি ভাল হবেনা মর্মেও হুংকার দিচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তা। ব্যাংক কর্মকর্তার এহেন হুমকিতে তিনি বর্তমানে চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে পেকুয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখার ম্যানেজার মো. আবু জাফরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবী করে এ প্রসঙ্গে আর কথা বলতে রাজি হননি।

পাঠকের মতামত: