ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় মৎস্য সপ্তাহ অনুষ্টানে বক্তারা, সাগর-জলাশয়ে আইন মেনেই মৎস্য আহরণ করলে সম্পদের অভাবনীয় উন্নয়ন সম্ভব

cnমিজবাউল হক, চকরিয়া :::

চকরিয়ায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী দিনে দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণ ও মৎস্য আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, সরকারি আইন লঙ্গন করে অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য আহরণের কারনে প্রতিবছর দেশে মাছের অভয়াশ্রম বিলুপ্ত হচ্ছে। এভাবে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমিষ জাতীয় খাদ্যের ঘাটতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই এখন থেকে সাগর-জলাশয়ে মাছ আহরণের সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করলে মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। সোমবার সকালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) ইউএসএইডের ক্রেল প্রকল্পের উদ্যোগে মৎস্যজীবি ও মৎসজীবি সমিতির সদস্যদের নিয়ে অনুষ্টিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহবুব-উল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম এম.এ। অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো.সাইফুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, শাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল, বড়ইতলীর ইউপি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ সিকদার, সফল মৎস্যচাষী মো.শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি জেলে সমিতি চকরিয়া উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী।

অনুষ্টিত মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে ক্রেল চকরিয়ার সাইট অফিসার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ক্রেল হল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প যাহা ইউএসএই্ড এর অর্থায়নে এবং উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরি সহযোগিতায় পরিচালিত। মাঠ পর্যায়ে সকল কার্যক্রম সম্পাদন করছে নেকম এবং জীবিকায়ন নিয়ে কাজ করছে কোডেক। বন ও বন্য প্রাণীসংরক্ষণ, পরিবেশ-প্রতিবেশ উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও পরিবেশ বান্ধব টেকসই জীবিকায়ন নিয়ে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ষ্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাই এ প্রকল্পের মূললক্ষ্য।

উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, আইন অমান্য করে মৎস আহরণ, কারেন্ট জাল ও অবৈধ জালের ব্যবহার, জাটকা নিধন ইত্যাদির কারনেই মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্যতা কমছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মৎস উৎপাদনের দিক দিয়ে বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। সুতরাং প্রাণিজ প্রোটিনের সিংহ ভাগ মংস সম্পদ থেকেই পাচ্ছি। তিনি পর্যাপ্ত মৎস আহরনের মাধ্যমে টেকসই মৎস সম্পদ উন্নয়নের আহবান জানান।

অনুষ্টানের সভাপতি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মাহবুব-উল করিম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে গ্রীন হাউজ গ্যাস অর্থাৎ কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও সিএষসি গ্যাস। বাড়ছে তাপমাত্রা, গলছে হিমালয়ের বরফ, সমুদ্রের উচ্ছতা বাড়ছে। পরিবেশের আমূল পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে, কমছে জলাশয় ও মাছের উৎপাদন। তিনি আরও বলেন, অপরিকল্পিত মৎস আহরণ না করে সরকারী আইন মানতে হবে। তিনি ভুমিহীন জেলেদের সরকারী খাস ভুমি বরাদ্ধের ক্ষেদ্রে অগ্রাধিকার দেয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের আয়োজনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সমাপনী দিনে একই হলরুমে ‘মুল্যায়ন, জেলেদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান’ প্রকল্পের আওতায় দুর্ঘটনায় সমুদ্রে নিহত চকরিয়া উপজেলার আট জেলে পরিবারের মাঝে (প্রত্যেক পরিবারকে) ৫০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়। উপকারভোগী পরিবার গুলো হচ্ছে, শেফালী বালা জলদাশ, রসবালা জলদাশ, নিতাখুশি বালা, ফুলবালা জলদাশ, মানিক দাশ, গান্ধী জলদাশ, আলম শাইর ও কুলছুমা বেগম। এছাড়াও অনুষ্টানে বাগদা চিংড়ি চাষে সাফল্য অর্জনে দরবেশকাটা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ফিসফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশনের (ফোয়াব) কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মো.শহিদুল ইসলামকে উপজেলার শ্রেষ্ট চাষী হিসেবে সম্মাননা ক্রেষ্ট ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী জেলে সমিতির নেতা আশরাফ আলী, আনার কলি জলদাশসহ ৫জনকে বিশেষ পুরুস্কার দেয়া হয়েছে। অপরদিকে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে স্কুল পযার্য়ে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ২৫জন শিক্ষার্থীকে পুরুস্কার দেয়া হয়েছে। ##

পাঠকের মতামত: