ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় ব্রিজ নির্মাণ কাজ ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার ঃ ২০ হাজার মানুষ দূর্ভোগে

Aশাহজাহান চৌধুরী শাহীন, নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার দক্ষিণ বড়বিল তচ্ছাখালী খালের উপর নির্মাণাধীন ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের পাশাপাশি নিমার্ণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় ৫টি গ্রামের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাঁশের সাকো দিয়ে অত্যন্ত ঝুকির মধ্যে জনগণ পারাপার হচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল পড়ুয়া কচিকাঁচা শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ হাজার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধিনে চলতি অর্থ বছরে ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বিল তচ্ছাখালী খালের উপর ৪০ ফুট প্রস্থ ব্রিজ নিমার্ণ কাজ গত ২৮ এপ্রিল শুরু করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদার মনির আহমদ।

এলাকাবাসী অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ব্রিজ নির্মাণ কাজে নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিমার্ণ কাজ চালিয়ে আসছিলেন। শুরু থেকেই এলাকাবাসি এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করে আসছিল। তবে ব্রিজ নির্মাণ কাজ চালালেও বিকল্প যাতায়তের জন্য কোন প্রকার সেতু বা সাঁকো নিমাণ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গতকিছু দিন পূর্বে হঠাৎ নিমার্ণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। নিজ উদ্যোগে বাঁশের একটি সাঁকো স্থাপন করেন এলাকাবাসি।

ফলে বর্ষার মৌসুমে উপজেলা সদরের সাথে ৫টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ সম্পুর্ণ ভাবে বিছিন্ন হয়ে পড়ে।

সরজমিন দেখাগেছে, নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশেই স্থাপন করা বাঁশের সাঁকো দিয়েই স্কুলে পড়–য়া কচিকাঁচা শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে। একই ভাবে প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচলের একমাত্র অবলম্বন হয়েছে এই বাঁশে সাঁকো।

পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মর্জিনা বেগম ও তাসলিমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার সময় বিকল্প যাতায়তের জন্য কোন প্রকার উদ্যোগ নেয়নি। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়ে আজ আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয় যেতে হচ্ছে।

অভিভাবকগণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয় ব্যক্ত করে বলেন, ঠিকাদারের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এলাকার শত শত জনগণ, স্কুল ও কলেজ পড়–য়া ছাত্রছাত্রীরা চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। এমনকি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল এপার থেকে ওপারে পরিবহন করা যাচ্ছে না।

সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হাশেম জানান, দায়িত্ব প্রাপ্ত দুর্ণীতিবাজ ঠিকাদার ব্রিজের নিমার্ণ কাজ বন্ধ করে দেয়ায় ৫টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি নির্মাণাধী ব্রিজে আটকা পড়ে সহজেই লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে।

উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনগণ ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে ও যাতায়ত সুবিধার্থে ৪০ ফুটের একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু গত ১ মাস পেরিয়ে গেলেও তা আর বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার হঠাৎ করে কেনই বা লাপাত্তা হয়েছেন সে বিষয়েও বিস্তারিত জানাতে পারেনি প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস সুত্রটি।

অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পাদন করা হোক। তা না হলে যাতায়তের সুবিধার্থে বিকল্প সেতু তৈরী করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঊধর্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসি।

 

পাঠকের মতামত: