ঢাকা,শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

জঙ্গি’র ঘাটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি!

তুষার তুহিন : chittagong-news-1picture1
জঙ্গিদের ঘাটিতে পরিনত হয়েছে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, চট্গ্রাম বিভাগে জঙ্গী তৎপরতা ও সরকার বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা হয় বেসরকারি ওই ইউনিভার্সিটি থেকে। হিযবুত তাহেরী ও আর্ন্তজাতিক জঙ্গি সংগঠনের কয়েকজন শীর্ষনেতা কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত রয়েছেন। এদের মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ইউনিভার্সিটিতেই সপ্তাহে দুদিন গোপন বৈঠক চলে। যেখান থেকে সরকারি বিরোধী নানা কর্মকান্ড পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডে সেক্রেটারি হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক শিবির ক্যাডার লায়ন মুজিব।
এক সময়ের চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি বদিউল আলম বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী স্টাডি ও দাওরা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ তিনি এখনো ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি হত্যা মামলা সহ ২৪ টি মামলা। তাছাড়া তার সাথে আর্ন্তজাতিক জঙ্গি সংগঠনের যোগযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই নেতা এখন তার বিভাগে প্রতিসপ্তাহে শুক্র ও শনিবার গোপন বৈঠক করেন। তাকে আটক করতে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ কয়েকদফা অভিযানও পরিচালনা করেছেন। এরপরও ওই জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি ইউনিভার্সিটি পরিচালনা পরিষদ। এছাড়া ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন নাশকতা মামলার আসামী জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি দরবেশ আলী মো. আরমান।
তাকে ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশের গাড়িতে হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে পুলিশ। জামিনে বের হবার পর থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কোন পদবী না থাকলেও তিনি শিক্ষার্থী সংগ্রহের জন্য কাজ করেন। বিশেষ করে ইসলামী ষ্টাড়ি বিভাগের শিক্ষার্থী যোগাড় করাই তার কাজ।
গেলো বছর  ৯ মে রাত সাড়ে ৯ টায় চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ১৩ নং রোডে বি ব্লকের ৩১২ নম্বর বাড়ি থেকে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রভাষক শরফুল আউয়ালকে জঙ্গি বই সহ আটক করে পুলিশ।  তিনি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সংগঠক । তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, শুক্রবার ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট বন্ধ থাকে। কিন্তু সেদিন ইসলামী স্টাডি ও দাওয়া বিভাগ খোলা থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের ৩য় তলায় গোপন বৈঠক করেন। ওখান থেকে সরকার বিরোধী নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ( তদন্ত ) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান,  ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সহ সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার  অভিযোগ রয়েছে। এ কারনে কয়েকদফা পুলিশ ওই ইউনিভার্সিটিতে অভিযান পরিচালনা করেছেন। তিনি আরো জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সেক্রেটারি লায়ন মুজিব  জানান, একটি মহল ইউনিভার্সিটির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে এহেন দুর্নাম রটাচ্ছে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি।

পাঠকের মতামত: