ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটক বরণে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা কক্সবাজারে

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
আর হাতেগোনা কয়েকদিন বাদেই ঈদ। ঈদের দিন থেকে পর্যটকের ঢল নামবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। পর্যটন শিল্প নির্ভর ব্যবসায়ীরা এবার দেশী পর্যটকের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বিদেশী পর্যটক আগমনের আশা করলেও শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশানের ‘হলি আর্টিসান বেকারি’ নামক রেস্টুরেন্টে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণে তা হচ্ছেনা। নিরাপত্তর বিষয় চিন্তা করে ইতোমধ্যে বিদেশী পর্যটকের পাশাপাশি দেশী পর্যটকও বুর্কিং বাতিল করেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক হোটেল কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার বলেন-টানা ৯ দিনের ছুটি হওয়ায় এবার প্রচুর পরিমাণ দেশী-বিদেশী পর্যটকের সাড়া মিলেছিল। কিন্তু গুলশানের ঘটনার কারণে ৩০ শতাংশের মত রুমের অগ্রিম বুকিং বাতিল করেছে পর্যটকেরা। তবে ঈদের পর থেকে পর্যটন নগরীতে আগত দেশী-বিদেশী পর্যটকের জন্য নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশের ১২৬ জন সদস্যকে। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, একজন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও ৩ জন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে এরা পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করবে জেলার সকল পর্যটন স্পট ও হোটেল-মোটেল এলাকায়। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্টের পাশাপাশি এবার ট্যুরিষ্ট পুলিশ সদস্য হিমছড়ি, ইনানী ও টেকনাফের পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিষ্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোঃ রায়হান কাজেমী। রবিবার তিনি বলেন-পর্যটকদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যা যা করা প্রয়োজন সবটুকুর জন্যই প্রস্তুত ট্যুরিষ্ট পুলিশ। সৈকতের গোসল করতে গিয়ে যাতে করে কোন ধরণের অপ্রত্যাশিত প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে সেজন্য ৩০ জন লাইফ গার্ড সদস্যও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউজ, কটেজে ট্যুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে ৪০ হাজারের মত সচেনতনামুলক লিপলেটও বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি আর ঈদুল ফিতর মিলিয়ে ৩/৪ লক্ষ পর্যটকের আগমনের লক্ষ্যকে সামনেরেখে হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউস থেকে শুরু করে রেষ্টুরেন্টকে সাজানো হয়েছে নববধুর সাজে। বাদ যায়নি সৈকতের কিটকট ছাতা আর ক্ষুদ্র শামুক-ঝিনুকের দোকানগুলোও। সেগুলোকেও নিত্য-নতুন আঙ্গিকে রং-এর তুলির আঁচড়ে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। সরেজমিনে সৈকতের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউস, কটেজের প্রবেশ মুখ, কক্ষ রং করা হয়েছে আর পরিবর্তন করা হচ্ছে পুরনো জিনিসপত্র। পাল্লা দিয়ে খাবার হোটেল-রেঁস্তোরাগুলোতেও চলেছে ধোঁয়ামুছা ও রং লাগানোর প্রতিযোগিতা। বিপুল পর্যটক আগমনের আশায় এখানকার হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউজ, রেষ্টুরেন্ট মালিক, ঝিনুক ব্যবসায়ী, কিটকট ছাতা-চেয়ার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে চটপটি ও ডিম বিক্রেতা পর্যন্ত প্রস্তুতি শেষ করেছে বিকিকিনির জন্য। শুধু পর্যটন শহর নয়। জেলার পর্যটনের দর্শনীয় স্থান বিশেষ করে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, পাথুরে বীচ ইনানী, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামুর বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলো প্রস্তুত পর্যটক বরণে।

পাঠকের মতামত: