ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় পাউবোর ভবন প্রধান শিক্ষকের দোকান ঘর!

20160627_130745-1পেকুয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) পরিত্যক্ত ভবন এখন প্রধান শিক্ষকের দোকান ঘর। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ৬০-৭০বছর পুর্বে স্লুইচ গেইটের রক্ষনাবেক্ষনের জন্য খালাচি ভবন হিসেবে স্থাপন করেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পাউবো ওই ভবনটি ঝুঁকিপুর্ন হওয়ায় এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করেন। পরিত্যক্ত ভবন অপসারনের জন্য ওই প্রধান শিক্ষক জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ডিসি অফিস আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

 শিক্ষা প্রতিষ্টানের নিকটবর্তী স্থান থেকে ঝুঁিকপুর্ন ভবন অপসারনের জন্য প্রধান শিক্ষককে পেকুয়ার ইউএনও মো.মারুফুর রশিদ খান অর্থের যোগান দেন। তবে অপসারন হয়নি ওই ভবনটি। অধিক টেকসই করে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছেন ওই প্রধান শিক্ষক।

 স্থানীয়রা জানিয়েছেন পেকুয়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিন মেহেরনামা বাজারপাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পরিত্যক্ত ভবন দখল করে নিয়েছেন মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুদৌহা। ভবনটি পাউবো কক্সবাজারের মালিকানাধিন। মেহেরনামা এলাকার লোকজন জানায় বিগত পাকিস্তান সরকার সময়ে মেহেরনামা মৌজায় স্থাপিত হয়েছে। মাতামুহুরী নদীর মেহেরনামা বাজারপাড়া পয়েন্টে ৩৫নং স্লুইচ গেইট রয়েছে। চট্টগ্রাম মহাকুমা থাকার সময় পেকুয়া সদরের চেয়ারম্যান ছিলেন কবির আহমদ চৌধুরী। সে সময় ওই ভবনটি পাউবো নির্মান করেন।

 এরপর কমিউনিটি ক্লিনিক হিসেবে ভবনটি কয়েক বছর ব্যবহৃত হয়েছে। স্কুলের শ্রেনী কক্ষ সংকোলন হওয়ায় এক সময় মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনী কার্যক্রম চলত। দুর্যোগের সময় ওই ভবনটি নি¤œাঞ্চলের একমাত্র আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গত ১০বছর ধরে ভবনটি অধিক ঝুঁকিপুর্ন হয়েছে। মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয় ও মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঝখানে ওই ভবনটি স্থিত আছে। মেহেরনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুদৌহা এ ভবনটি কব্জায় নিয়েছে। স্কুলের নাম ভাঙ্গিয়ে পাউবোন ভবন জবর-দখলে নিতে নিজেই সংস্কার কাজ আরম্ভ করেছে।

 সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ভবনটির ছাদ অপসারিত হয়েছে। দেয়ালে শুভা পেয়েছে নতুন ইট। পুরানো জরাজীর্ন পলেষ্টার উঠানো হয়েছে। নতুন করে ইট, সিমেন্ট বালির প্রলপ দেয়ালে লাগানো হচ্ছে। লিন্টার ও পিলার স্থাপন করা হয়েছে। বিল্ডিংয়ে তিনটি কক্ষ করা হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে ভবনটি সংস্কার কাজ করছে প্রধান শিক্ষক শামসুদৌহা। তার ব্যক্তি মালিকানাধিন সম্পদে রুপান্তর করতে ওই ভবনে দোকানঘর নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবনের একটি কক্ষে স্কুলের পাঠাগার একটিতে ক্যান্টিন ও অপর একটিতে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের দোকান হবে বলে আগে থেকে প্রচার চলছে।

 স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক শামসুদৌহা একজন ধুর্ত প্রকৃতির লোক। এর আগেও মেহেরনামা শাহ কবরিয়া রহমানিয়া হেফজখানা ও এতিমখানার নাম ভাঙ্গিয়ে গুরা মিয়া চৌধুরী বাজারের একটি দোকান নিজের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্টা করেছেন। ওই দোকানটি মুল্যমান হয়েছে। কয়েক বছর ভাড়া মাদ্রাসা পেলেও গত ৩-৪বছর ধরে দোকানটির ভাড়া শামসুদৌহার পকেটে যাচ্ছে।

 জানা গেছে শামসুদৌহা ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি। এ সুবাধে মাদ্রাসার নামে জায়গা দখলে নিতে তার সুবিধা হয়েছে। একই কায়দায় তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ায় ওই ভবনটি স্কুলের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্টা করছে।

 এ ব্যাপারে মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসু দৌহা জানায় ভবনটি স্কুলের জায়গার উপর। অপসারনের জন্য কেউ টাকা দেয়নি। এটি স্কুলের সম্পদ। তাই নতুন করে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। স্কুলের জন্য একটি পাঠাগার, একটি ক্যান্টিন ও অপরটি দোকান করা হবে।

মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শাহ আলম জানায় স্কুলের জায়গায় ভবনটি। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ড এর জায়গা নয়। রমযানের আগে বৈঠক হয়েছে। স্কুলটি অবহেলিত। তাই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভবনটি সংস্কার করে স্কুলের উন্নয়নের জন্য কিছু করা যায় কিনা।

পাঠকের মতামত: