ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলার বাজার ব্যবস্থা খুচরা ব্যবসায়ীদের দখলে

শিপন পাল : Shipan News Pic (1)
খুচরা ব্যবসায়ীদের স্বেচ্ছাচারিতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার ক্রেতাসাধারণ। ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যবসায়ীরা প্রতিটি পণ্যের মূল্য অতিরিক্ত লাভের আশায়  বিভিন্ন তারতম্য ঘটিয়ে বিক্রয় করছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে পাইকারী মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রয় করা হচ্ছে। যা কোন মতেই পাইকারী মূল্যের সাথে খুচরা মূল্যের সামঞ্জস্যতা নেই বললেই চলে। জেলাব্যাপী খুচরা ব্যবসায়ীদের এমন দৌরাত্ম্য কখনই সমীচীন নয় বলে মনে করছেন জেলার ক্রেতাসাধারণ।
জানা যায়, ঈদকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। দৈনন্দিন বাড়ছে কাঁচা বাজার, মাছ, মাংস, তেল, চাল সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীদের মতো মধ্যস্বত্বভোগী দোকানীরাই এসব পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করছেন বলে দাবি করেছেন জেলার সচেতন ভোক্তারা। ভোক্তাদের মতে, শুধু কাঁচা মাল নয়, বাদ পড়ছে না দৈনিক উৎপাদিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ ডিমও। খুচরা ব্যবসায়ী প্রতিটি ডিম বিক্রয় করছেন ১০ টাকা করে। আর জোড়াপ্রতি বিক্রয় করছেন ১৮/১৯ টাকা করে। অথচ এসব ডিম শহরের পাইকারী বাজারে বিক্রয় করছেন প্রতি ডজন ৭০/৭৫ টাকা করে। অর্থাৎ প্রতি ১০০টি ডিম পাইকারী বাজারে বিক্রয় করা হচ্ছে ৬০০/৬২০ টাকা করে। আর প্রতি ১০০টি ডিম খুচরা বাজারে বিক্রয় করা হচ্ছে ৯০০/৯৫০ টাকা দরে। সেই হিসেবে বুঝা যায়, ভোক্তাদের কাছ থেকে কী পরিমাণ মুনাফা আদায় করছেন এসব খুচরা ব্যবসায়ী মধ্যস্বত্বভোগীরা।
মবিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে খুচরা ব্যবসায়ীদের তা-ব চলছে জেলাব্যাপী। সকালে খুচরা বাজার করতে গিয়ে দেখি ডিমের হালি চলছে ৩৬ টাকা করে। সেই হিসেবে প্রতিটি ডিমের মূল্য পড়ে ৯ টাকা করে। অর্থাৎ ১০০টি ডিম কিনতে হচ্ছে ৯০০ টাকা মূল্যে। যা পাইকারী মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এভাবে প্রতিটি পণ্যের মূল্য এরা দ্বিগুণ লাভে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লাভে পণ্য বিক্রয় করছে। এসব খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। দ্বিগুণ লাভের আশায় ক্ষতিগ্রস্থ করছে ক্রেতাসাধারণকে।’
শহরের বড় বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী আসাদ উল্লাহ বলেন, ‘ফার্মের বিক্রয় মূল্য মতে প্রতি ১০০টি ডিম ৫২০ টাকায় পাইকারী ব্যবসায়ীদের ক্রয় করতে হয়। সেই অনুযায়ী পরিবহন খরচ, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল সহ যাবতীয় খরচাদির কথা বিবেচনা করে পাইকারী ব্যবসায়ীদের প্রতি ১০০টি ডিমের মূল্য ৫৮০/৬০০ টাকায় খুচরা ব্যবসায়ীদের বিক্রয় করতে হয়। অর্থাৎ পাইকারী মূল্য মতে প্রতিটি ডিমের মূল্য ৫ টাকা ৮০ পয়সা  অর্থাৎ কোন কোন ক্ষেত্রে ৬ টাকা করে পড়ে।
ফার্ম মালিক নুর হোছন জানান, ‘বর্তমান বাজারের খুচরা রেইট ফার্ম রেইটের দ্বিগুণ। ফার্ম মালিকরা ১০০টি ডিম ৫২০ টাকায় পাইকারী ব্যবসায়ীদেরকে বিক্রয় করে থাকেন। পাইকারী ব্যবসায়ী তা ৫৮০ টাকায় বিক্রয় করলে খুচরা দোকানদারদের ৯০০ টাকায় বিক্রয় করার কথা নয়। সেই হিসেবে প্রতিটি ডিম ৯ টাকা করে পড়ে। যা আমাদের মূল্যে চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।’
ক্রেতাসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করেন জানান, বর্তমানে খুচরা বাজারে শুধু ডিমই নয় মাত্রাতিরিক্ত ছাড়িয়েছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এরা প্রতিটি পণ্যের মূল্য অধিক লাভের আশায় দ্বিগুণ দামে বিক্রয় করছেন। যা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনকে খর্ব করেছে। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট মহলের সঠিক তদারকি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরা দরকার।

পাঠকের মতামত: